প্রতীকী ছবি।
আর এক মাসও বাকি নেই। আগামী ৭ মার্চ শুরু হচ্ছে মাধ্যমিক পরীক্ষা। করোনার জেরে স্কুল বন্ধ থাকায় গত এক বছরের বেশির ভাগটাই কেটেছে বাড়িতে। প্রস্তুতিও নিতে হয়েছে নিজেদের মতো করে। স্কুলে গিয়ে ক্লাস করতে না পারায় জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষার আগে পরীক্ষার্থীরা কি আতঙ্কে রয়েছে? ওদের শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতির জন্য কী ভাবে এগোনো দরকার? পরীক্ষার্থীদের পঠনপাঠন থেকে শুরু করে মানসিক স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে এ বার কাউন্সেলিং করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে শহরের কিছু স্কুল। রবিবার সেই কাউন্সেলিং হয়ে গেল সাখাওয়াত মেমোরিয়াল গভর্নমেন্ট গার্লস হাইস্কুলে।
সেখানে ওই স্কুলের পড়ুয়ারা ছাড়াও বালিগঞ্জ গভর্নমেন্ট, বেথুন কলেজিয়েট, সংস্কৃত কলেজিয়েট স্কুল-সহ বেশ কয়েকটি স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা যোগ দিয়েছিল। সাখাওয়াতের প্রধান শিক্ষিকা পাপিয়া নাগ সিংহ মহাপাত্র জানালেন, কোভিড-বিধি মেনে পর্যায়ক্রমে পড়ুয়াদের ডেকে কাউন্সেলিং করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘করোনা পরিস্থিতিতে পরীক্ষা আদৌ হবে কি না, তা নিয়ে দোলাচলে ছিল ছাত্রছাত্রীরা। কিন্তু এখন যা পরিস্থিতি, তাতে পরীক্ষা অফলাইনেই হবে। সেই কারণে পড়াশোনার পাশাপাশি অফলাইনে পরীক্ষার জন্য পড়ুয়াদের মানসিক প্রস্তুতিও দরকার। জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা অফলাইনে দিতে গিয়ে ওদের মনে যাতে ভয়-ভীতি কাজ না করে, সেটাই কাউন্সেলিংয়ে বলা হয়েছে।’’ পাপিয়া জানান, কাউন্সেলিংয়ে অভিভাবকদেরও থাকার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। তাঁদেরও বলা হয়েছে, ছেলেমেয়েদের প্রস্তুতির সময়ে তাঁরা যেন তাদের পাশে সব সময়ে থাকেন।
শিক্ষকেরা জানান, পরীক্ষায় কী ভাবে প্রশ্ন নির্বাচন করতে হবে, কোন ধরনের প্রশ্নের উত্তর আগে লেখা সুবিধাজনক, কোন ধরনের প্রশ্নের জন্য কতটা সময় ব্যয় করতে হবে, সামগ্রিক সময়ের ব্যবস্থাপনাই বা কী ভাবে করতে হবে, প্রতিটি বিষয়ে বিভিন্ন ধরনের প্রশ্নের উত্তর কী ভাবে লিখলে বেশি নম্বর উঠতে পারে— এমন নানা দিক নিয়ে পরীক্ষার্থীদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
‘পশ্চিমবঙ্গ সরকারি বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি’র পরিচালনায় এ দিনের কাউন্সেলিং হয়। সমিতির সাধারণ সম্পাদক সৌগত বসু বলেন, ‘‘১৮ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা সাতটি বিষয়ের উপরে শতাধিক পরীক্ষার্থীর কাউন্সেলিং করেছেন। এ দিনের কাউন্সেলিংয়ের ভিডিয়ো করে একটি ডিজিটাল উপস্থাপনা তৈরি করা হয়েছে। এর ফলে রাজ্যের অন্যান্য স্কুলের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরাও উপকৃত হবে।’’
সাখাওয়াত মেমোরিয়াল গভর্নমেন্ট গার্লস হাইস্কুলে হওয়া এই কাউন্সেলিং পরীক্ষার্থীদের খুবই উপকারে আসবে বলে মনে করছেন শহরের বেশ কিছু স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা। যেমন বেথুন কলেজিয়েট স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা শাশ্বতী অধিকারী জানালেন, স্কুল বন্ধ থাকলেও তাঁদের নিয়মিত অনলাইন ক্লাস হয়েছে। সেখানেই শিক্ষিকারা গল্পের ছলে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের মনের অবস্থাটা বুঝে নেওয়ার চেষ্টা করেছেন।
হিন্দু স্কুলের কয়েক জন শিক্ষক জানাচ্ছেন, মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের প্রস্তুতি কেমন হয়েছে, তা দেখার জন্য দিনকয়েকের মধ্যেই অফলাইনে ‘মক টেস্ট’ নেবেন তাঁরা। সেই পরীক্ষার খাতা সঙ্গে সঙ্গেই দেখে যার যেখানে খামতি আছে, তা ঠিক করে দেওয়া হবে।