এমনই অবস্থা বিশ্বনাথপুর বটতলায়। ছবি: সজলকুমার চট্টোপাধ্যায়
মাসখানেকেরও বেশি সময় ধরে জলবন্দি দশটি পরিবার। অভিযোগ, স্থানীয় বিডিও-কে জানিয়েও সমস্যা মেটেনি। অগত্যা ‘দিদিকে বলো’র নম্বরে যোগাযোগ করা হলে জানানো হয়, শীঘ্রই জল সরানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। কিন্তু অভিযোগ, তার পরেও কেটে গিয়েছে বেশ কয়েক দিন। তবু জল সরেনি। ঘরবন্দি হয়ে রয়েছেন বাসিন্দারা। জমা জল থেকে ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ, বাড়ছে ডেঙ্গির ভয়। ঘরে ঢুকছে সাপ। ভয়ে শিশুদের অন্যত্র পাঠিয়ে দিচ্ছেন বাসিন্দারা। বাড়িতে জল মাড়িয়ে পড়াতে আসছেন না শিক্ষকেরা। আসছেন না মাছ বা আনাজ বিক্রেতারাও। এমনকি, গ্যাসের সিলিন্ডারও দিতে আসছেন না কেউ। এমনই চিত্র দেগঙ্গার বিশ্বনাথপুর বটতলায়।
সোমবার এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, নোংরা জলে অর্ধেক ডোবা কলের জলেই চলছে স্নান। জলেই পড়ে আছে সাইকেল, মোটরবাইক। কাকলি সাহা নামে এক বাসিন্দা জানান, বারাসত-টাকি রোড সম্প্রসারণের কাজের জেরে রাস্তার ধারের নিকাশি নালাগুলি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। যার জেরে বৃষ্টির জল বেরোতে পারছে না। রাস্তা থেকে ঘর— সর্বত্রই জমে আছে জল। কোথাও হাঁটু সমান, কোথাও বা একটু কম।
মলয়কান্তি বিশ্বাস নামে প্রতিবন্ধী এক বৃদ্ধকে হুইলচেয়ারে করে বাইরে ঘুরিয়ে আনতেন পরিবারের লোকজনেরা। জমা জলে তিনিও টানা আটকে ঘরে। তাই দিন কয়েক আগে ওই বৃদ্ধই ‘দিদিকে বলো’-তে ফোন করে বিষয়টি জানান। মলয়কান্তিবাবু এ দিন বলেন, ‘‘ঘরে বন্দি হয়েই দিন কাটাচ্ছি। জল সরানোর অনুরোধ করেও কাজ হল না।’’ আছিয়া বিবি নামে এক মহিলা বলেন, ‘‘বাসন মাজার কাজ করি। কাজ না করলে ভাত জুটবে না। এই নোংরা জল মাড়িয়ে কাজে যেতে গিয়ে পায়ে ঘা হয়ে গিয়েছে।’’ স্নেহা রায় নামে এক ছাত্রীর কথায়, ‘‘উঠোনে সাপ ঘুরে বেড়াচ্ছে! ঘরেও ঢুকে পড়ছে মাঝেমধ্যে। ভয়ে বাইরে বেরোতে পারছি না।’’
জমা জল এত দিনেও নামানোর কোনও চেষ্টা হল না কেন? এ প্রশ্নের উত্তরে দেগঙ্গার বিডিও সুব্রত মণ্ডলের অবশ্য দাবি, ‘‘আমার কাছে এই ধরনের কোনও অভিযোগ আসেনি। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে।’’