জলমগ্ন উত্তর পঞ্চান্নগ্রাম। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র
সোমবার রাতভর বৃষ্টি হওয়ায় জল জমল শহরের বেশ কিছু এলাকায়। ওই রাতে ১০টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৬টা পর্যন্ত শহরে দফায় দফায় ভারী বৃষ্টি হয়। কলকাতা পুরসভা সূত্রের খবর, শহরের সংযুক্ত এলাকার একাধিক জায়গা মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত জলমগ্ন ছিল। এ দিন ই এম বাইপাস লাগোয়া একাধিক এলাকা-সহ বেহালার বিভিন্ন ওয়ার্ডে দীর্ঘক্ষণ জল জমে থাকে। বিষয়টি স্বীকার করে মেয়র পারিষদ (নিকাশি) তারক সিংহ বলেন, ‘‘বাইপাসে মেট্রোর কাজের জন্য শহরের একটি খালের একাংশ অবরুদ্ধ হয়েছে। যার জন্য ওই এলাকায় জল জমেছে। বুধবার পুরসভা ও আরভিএনএল কর্তৃপক্ষ ঘটনাস্থলে গিয়ে কাজ করবে। এ ছাড়াও, বেহালার কয়েকটি ওয়ার্ডে জল জমেছিল। ওই সমস্ত ওয়ার্ডে কেইআইআইপি নিকাশির কাজ করছে।’’
পুরসভার নিকাশি দফতর সূত্রের খবর, সোমবার রাত ১০টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৬টা পর্যন্ত সর্বাধিক বৃষ্টি হয়েছে মোমিনপুরে (৫৮ মিলিমিটার)। এ ছাড়াও, জোকায় বৃষ্টির পরিমাণ ৫৩.৪ মিলিমিটার, সাদার্ন অ্যাভিনিউ ও যোধপুর পার্কে বৃষ্টি হয়েছে ৫৩ মিলিমিটার করে। পামারবাজার ও মানিকতলায় বৃষ্টি হয়েছে যথাক্রমে ৪৮ ও ৪৩ মিলিমিটার।
পুরসভার ১০৮ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর পঞ্চান্নগ্রাম, দক্ষিণপাড়া, মার্টিনপাড়া, গুলশন কলোনি, ১০৯ নম্বর ওয়ার্ডের নয়াবাদ, অজয়নগর, পাটুলির ঝিল পার্ক এলাকায় এ দিন দীর্ঘক্ষণ জল জমে ছিল। উত্তর কলকাতার সিঁথি, ৬৬ নম্বর ওয়ার্ডের তপসিয়ার বেশ কিছু রাস্তা, বেহালার ১২২, ১২৩ ও ১২৪ নম্বর ওয়ার্ডে জল জমে থাকায় সাধারণ মানুষের ভোগান্তি হয়। উত্তর কলকাতার ঠনঠনিয়া, কলেজ স্ট্রিট, চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ, এম জি রোড-সহ দক্ষিণ কলকাতার খিদিরপুর, মোমিনপুর, সাদার্ন অ্যাভিনিউ এলাকায় জমা জল সরতে দুপুর গড়িয়েছে।
শহরে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। বৃষ্টির জেরে মশাবাহিত রোগের দাপট আরও বাড়ার আশঙ্কা করছেন পুরসভার চিকিৎসকেরা। তাঁরা জানাচ্ছেন, কোনও ভাবেই জল জমতে দেওয়া চলবে না। সাধারণ মানুষকে এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। বাইপাসের বিভিন্ন ওয়ার্ডে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকায় মঙ্গলবার ১২ নম্বর বরো অফিসে গিয়ে সমস্ত কাউন্সিলর, আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক করেন মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) তথা ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ। বৃষ্টির জমা জল সরানো-সহ ডেঙ্গি রোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।