ফাইল চিত্র।
টানা কয়েক দিনের বৃষ্টিতে এলাকায় জমে গিয়েছিল জল। এক সপ্তাহ পরেও সেই জল না নামায় গত ১০ অক্টোবর রাস্তায় বসে পড়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন উত্তর হাওড়ার তৃণমূল বিধায়ক গৌতম চৌধুরী। তাঁর দাবি ছিল, জল না নামা পর্যন্ত তিনি উঠবেন না। বৃহস্পতিবার হাওড়ার শরৎ সদনে প্রশাসনিক বৈঠকে ওই ঘটনার জন্য গৌতমবাবুকে ভর্ৎসনা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
উত্তর হাওড়ায় ‘আলো’ নামের একটি শিক্ষা ভবনে হিন্দি বিশ্ববিদ্যালয়ের পঠনপাঠন শুরু হওয়ায় এলাকার বিধায়ক হিসাবে এ দিনের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ দিতে উঠেছিলেন গৌতম। তখনই মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে প্রশ্ন করেন, ‘‘তুমি গৌতম না? তুমি খালি গায়ে রাস্তায় বসেছিলে কেন? তুমি তো কাজ করবে মানুষের জন্য। প্রকৃতি কি আমাদের হাতে? তুমি নিজে জল বার করার চেষ্টা না করে খালি গায়ে রাস্তায় গিয়ে বসে থাকছ? ওই ছবি দেখতে পেয়ে আমিই তোমাকে উঠতে নির্দেশ দিয়েছিলাম। তৃণমূলের এটা সংস্কৃতি নয়। মিডিয়া এক দিন ছবি দেখাবে, আর মানুষ ৩৬৫ দিন মনে রাখবে।’’
এর পরেই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘হাওড়ার নিকাশি ব্যবস্থা পুরনো। এর জন্য তিন দফায় কাজ হচ্ছে। প্রাথমিক, মাঝারি ও দীর্ঘমেয়াদি। নিকাশির উন্নয়নের জন্য কাজ শুরু হয়েছে। প্রাথমিক পর্যায়ের কাজ শেষ হয়ে ইতিমধ্যেই দ্বিতীয় দফার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। ভাল কাজ হচ্ছে।’’
এর পরে গৌতমকে লক্ষ করে তিনি বলেন, ‘‘হাওড়াকে ভাল করতেই হবে। এখানে নবান্ন আছে। খেলনগরী তৈরি হচ্ছে। ডুমুরজলায় সিএবি স্টেডিয়াম করবে। কত লোকের চাকরি হবে, শিল্প হবে। শুধু ‘চাই চাই’ নয়, তুমি কী দিতে পারবে, সেটাও দেখতে হবে। জনগণ বঞ্চিত হচ্ছে কি না, সেটা আগে দেখ।’’
মুখ্যমন্ত্রী যত ক্ষণ ভর্ৎসনা করেছেন, ভরা সভার মধ্যে মাথা নিচু করে তা শুনেছেন উত্তর হাওড়ার বিধায়ক। সভা শেষ হওয়ার পরে বাইরে বেরিয়ে তাঁর মন্তব্য, ‘‘এটা প্রয়োজন ছিল।’’ মুখ্যমন্ত্রী এ দিন হাওড়া পুরসভার নির্বাচন বা প্রশাসকমণ্ডলীর গত তিন মাসের কাজকর্ম নিয়ে একটি শব্দও উচ্চারণ করেননি। তবে তিনি যে হাওড়ার সার্বিক কাজে খুশি, তা সভার শেষে বলে গিয়েছেন।