নিজের পুরনো পদ অর্থাত্ সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের পদে ফিরলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। জাতীয় কর্মসমিতির সঙ্গে দলনেত্রী মমতার সমন্বয় রক্ষার ভার পেলেন কলকাতার মেয়র তথা রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। গুরুত্ব বাড়ল চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য ও অরূপ বিশ্বাসের।
ফাইল ছবি।
‘‘নতুনদের প্রয়োজন, কিন্তু মনে রাখবেন, ওল্ড ইজ গোল্ড। নবীন-প্রবীণের মিশেলেই এগিয়ে যাবে তৃণমূল।’’ জাতীয় কর্মসমিতির দ্বিতীয় বৈঠকে শুক্রবার দলকে এই বার্তাই দিলেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি জানিয়ে দিলেন, তৃণমূল গরিবের দল। এখানে বৈভবের প্রদর্শন চলবে না।
গত শনিবার তৃণমূলের জাতীয় কর্মসমিতি গঠনের পর, দলের সর্বভারতীয় স্তরে সমস্ত পদ খালি করে দিয়েছিলেন তৃণমূলের নির্বাচিত চেয়ারপার্সন মমতা। শুক্রবার কর্মসমিতির প্রথম বৈঠক ডাকেন মমতা। ঘোষিত হল নতুন পদাধিকারীদের নাম। নিজের পুরনো পদ অর্থাত্ সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের পদে ফিরলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। জাতীয় কর্মসমিতির সঙ্গে দলনেত্রী মমতার সমন্বয় রক্ষার ভার পেলেন কলকাতার মেয়র তথা রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। গুরুত্ব বাড়ল চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য ও অরূপ বিশ্বাসের।
একই সঙ্গে ঘোষণা হয়েছে কমিটির অন্যান্য সদস্যদের নামও। সূত্রের খবর, শুক্রবার কালীঘাটে এক ঘণ্টার বৈঠকে ২৫ মিনিট নিজের বক্তব্য রেখেছেন দলনেত্রী। যে বক্তব্যের নির্যাস, ‘নতুনদের প্রয়োজন, কিন্তু মনে রাখবেন, ওল্ড ইজ গোল্ড।’
ইদানীং নেটমাধ্যমে দলের কতিপয় নেতা ‘অতিসক্রিয়’, আবার এই মেটমাধ্যমেই পুরভোটের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ নিয়েও ব্যাপক তোলপাড় হয়েছিল দলের অন্দরে। শেষপর্যন্ত দলনেত্রীকে হস্তক্ষেপ করে বলতে হয়েছে, সুব্রত বক্সী ও পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সাক্ষরিত তালিকাই চূড়ান্ত। সব মিলিয়ে নেটমাধ্যম নিয়ে দলে কম জলঘোলা হয়নি। এ বার এই ভুল বোঝাবুঝি বন্ধে সরাসরি বার্তা দিলেন তৃণমূল নেত্রী। বললেন, ‘‘নেটমাধ্যমে আত্মপ্রচার নয়, দলের প্রচার করতে হবে।’’ পাশাপাশি জানিয়ে দিলেন, ‘‘তৃণমূল গরিবের দল। এই দলের নেতা কর্মীদের বৈভব প্রদর্শন করা চলবে না।’’
দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক হিসেবে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ফিরেছেন। তৃণমূল যে জাতীয় স্তরে লড়াইয়ে থাকতে চায় তা নিয়ে সমস্ত ধন্দ মমতা সাফ করে দিয়েছেন। তাঁর বার্তা, ‘দলকে বাংলায় সুসংঘবদ্ধ রেখেই জাতীয় স্তরে ঝাঁপাবে দল।’ পাশাপাশি নবীন-প্রবীণের মিশেলেই দল চলবে বলেও দলনেত্রী জানিয়েছেন। নিয়মিত খোলা হবে দিল্লিতে দলের কার্যালয়। সাংবাদিক বৈঠক করবেন সুখেন্দুশেখর, কাকলী ও মহুয়া।
দলের নির্মীয়মাণ সদর দফতর নিয়ে সম্প্রতি প্রশ্ন তুলে দিয়েছিলেন মমতা নিজে। কর্মসমিতি গঠনের দিন মমতা স্পষ্ট জানিয়েছিলেন, অতিরিক্ত ঝাঁ চকচকে অফিসে তাঁর পক্ষে বসা সম্ভব নয়। এই প্রেক্ষিতে এ বার দ্বিতীয় কর্মসমিতির বৈঠকে দলনেত্রীর বার্তা, ‘‘তৃণমূল গরিবের দল। এই দলের নেতা কর্মীদের বৈভব প্রদর্শন করা চলবে না।’’ তৃণমূলের এক প্রবীণ নেতার কথায়,’৯৮-এর পর থেকে যে ভাবে দল চালিয়েছেন মমতা, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতেও দলের ‘ইমেজ’ নিয়ে আপোস না করে সে পথেই থাকতে চান তিনি।