সব্যসাচী দত্ত এবং কৃষ্ণা চক্রবর্তী। ফাইল চিত্র।
গত অক্টোবরে বিজেপি ছেড়ে তিনি তৃণমূলে ফেরার পরেই পরবর্তী মেয়র পদে তাঁর নাম নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছিল। ডিসেম্বরে বিধাননগরের পুরভোটে তৃণমূলের প্রার্থীতালিকায় তাঁর নাম ওঠার পরে সেই জল্পনা আরও জোরাল হয়। কিন্তু অনায়াসে ভোটে জিতলেও শেষ পর্যন্ত ‘দলে ফেরা’ সব্যসাচী দত্তকে মেয়র করল না তৃণমূল। আস্থা রাখা হল বিদায়ী মেয়র কৃষ্ণা চক্রবর্তীর উপরেই। দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সিদ্ধান্তে সব্যসাচী পেলেন পুরবোর্ডের চেয়ারম্যানের পদ।
২০১৫ সালে তৃণমূলের টিকিটে জিতে বিধাননগর পুরসভার মেয়র হয়েছিলেন সব্যসাচী। কিন্তু গত লোকসভা ভোটের পর থেকে দলের সঙ্গে তাঁর দূরত্ব তৈরি হলে মেয়র পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন তিনি। এর পর বিজেপি-তে যোগ দেন সব্যসাচী। গত বিধানসভা নির্বাচনে বিধাননগর কেন্দ্র থেকে পদ্ম-চিহ্নের প্রার্থীও হন তিনি। কিন্তু তৃণমূলের সুজিত বসুর কাছে পরাজিত হন। তৃণমূলে প্রত্যাবর্তন ঘটে একদা ‘মুকুল রায় ঘনিষ্ঠ’ হিসেবে পরিচিত সব্যসাচীর। এ বার পুরভোটে ৩১ নম্বর ওয়ার্ড থেকে তৃণমূলের টিকিটে জেতেন তিনি।
বিধাননগরের নতুন মেয়র কৃষ্ণা এ বার জিতেছেন ২৯ নম্বর ওয়ার্ডে। ২০১৫ সালে পুরসভার ভোটে জয়ী হয়ে চেয়ারপার্সন হয়েছিলেন তিনি। ২০১৯-এর জুলাইয়ে সব্যসাচী মেয়র পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর কৃষ্ণার উপর ভরসা রেখে তাঁকেই মেয়র করেছিলেন তৃণমূলনেত্রী মমতা। সে সময় মেয়র পদের দাবিদার হিসেবে তৎকালীন ডেপুটি মেয়র তাপস চট্টোপাধ্যায় (বর্তমানে রাজারহাট-নিউটাউনের তৃণমূল বিধায়ক) এবং তৃণমূল বিধায়ক সুজিত বসুর নামও ছিল আলোচনায়।
ছাত্র রাজনীতি থেকে উঠে আসা কৃষ্ণা বেশ কয়েক দশক ধরেই মমতার পরিচিত। প্রতিষ্ঠার সময় থেকেই তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত। রাজারহাট-গোপালপুর পুরসভা এবং নিউটাউনকে সল্টলেকের সঙ্গে জুড়ে পুর নিগম গঠিত হওয়ার আগে পর্যন্ত যে পুরসভা সল্টলেকের নাগরিক পরিষেবা দেখভাল করত, সেই বিধাননগর পুরসভার প্রধান ছিলেন কৃষ্ণা। তবে পুরসভা থেকে পুর নিগমে উত্তরণ ঘটার পরে বিধাননগরের আর এক পুরনো তৃণমূল নেতা সব্যসাচীকে মেয়র করেছিলেন তৃণমূলনেত্রী।
পূর্বতন বিধাননগর পুরসভার প্রথম তৃণমূল পুরপ্রধান অনিতা মণ্ডলকে এ বার ডেপুটি মেয়রের দায়িত্ব দিয়েছে তৃণমূল। আন্দামান-নিকোবরের প্রয়াত প্রাক্তন কংগ্রেস সাংসদ মনোরঞ্জন ভক্তের কন্যা অনিতাও তৃণমূলের সূচনা-পর্ব থেকেই দলের সঙ্গে যুক্ত।