উত্তরপ্রদেশের পুলিশের হাতে এনকাউন্টার। —ফাইল চিত্র।
উত্তরপ্রদেশে নিহত তিন খলিস্তানি জঙ্গির সঙ্গে জুড়েছে ‘খলিস্তান জ়িন্দাবাদ ফোর্স’-এর নাম! বিভিন্ন সন্ত্রাসমূলক কাজের জন্য আগেই এই গোষ্ঠীকে নিষিদ্ধ করেছিল ভারত সরকার। সেই গোষ্ঠীর প্রধান রঞ্জিত সিংহ ওরফে নীতার জন্ম এবং বেড়ে ওঠা জম্মু ও কাশ্মীরে হলেও বর্তমানে তিনি পাকিস্তানে রয়েছেন। সেখান থেকেই তিনি সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ পরিচালনা করেন বলে দাবি বিভিন্ন সূত্রের।
জম্মুর সিম্বল ক্যাম্পের বাসিন্দা রঞ্জিত। ১৯৯৩ সালে চরমপন্থী সংগঠনটি গঠন করেছিলেন তিনি। এই গোষ্ঠীর মূল লক্ষ্যই সার্বভৌম খলিস্তান রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা। জম্মুতে বসবাসকারী খলিস্তানপন্থী শিখদের মধ্যে থেকেই ‘খলিস্তান জ়িন্দাবাদ ফোর্স’-এর সদস্য সংগ্রহ করা হত। জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের প্রাক্তন ডিজি এসপি বৈদ্যের মতে, রঞ্জিত আশির দশকের পাকিস্তানের আইএসের সঙ্গে দৃঢ় সম্পর্ক তৈরি করেছিলেন। সে সময় পঞ্জাবে সন্ত্রাসমূলক কাজের সংখ্যা অনেক বেড়েছিল। নেপথ্যে ছিল রঞ্জিতের যোগ।
নব্বইয়ের দশকে দেশ ছাড়েন রঞ্জিত। আইএসের সঙ্গে চুক্তি করে পাকিস্তানে আশ্রয় নেন। সেখান থেকেই ভারতে জঙ্গিমূলক কাজকর্ম পরিচালনা করতেন। সে সময় ‘খলিস্তান জ়িন্দাবাদ ফোর্স’-এর লক্ষ্যবস্তু ছিল জম্মু, পঞ্জাব বা দিল্লির বাস-ট্রেন। ২০০৯ সালে এই গোষ্ঠী আচমকাই পঞ্জাবের বিভিন্ন ধর্মীয় নেতাদের উপর হামলা শুরু করে। ২০২০ সালে ভারত সরকার রঞ্জিতকে ‘সন্ত্রাসী’ হিসাবে ঘোষণা করে। এমনকি তাঁর বিরুদ্ধে একটি ‘রেড কর্নার’ নোটিসও জারি করে ইন্টারপোল।
১৯৯৭ সালের এপ্রিল এবং জুনে পাঠানকোটে দু’টি যাত্রিবাহী বাসে বোমা বিস্ফোরণ হয়। বেশ কয়েক জনের মৃত্যু হয়েছিল। পরের বছর শালিমার এক্সপ্রেসেও বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এই সব ঘটনার নেপথ্যেই ‘খলিস্তান জ়িন্দাবাদ ফোর্স’ ছিল। এই গোষ্ঠীর জঙ্গিরাই হামলার ঘটনা ঘটায় বলে জানতে পারেন তদন্তকারীরা। তবে এখনও পর্যন্ত রঞ্জিতের নাগাল পাননি তাঁরা। তবে সোমবার রঞ্জিতের দলের তিন সদস্যকে ‘এনকাউন্টার’ করে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। তাঁদের খলিস্তানি জঙ্গি বলে চিহ্নিত করেছে পুলিশ। পঞ্জাবের একাধিক থানা এবং পুলিশ ফাঁড়িতে হামলার ঘটনায় তাঁদের যোগ ছিল বলে অভিযোগ। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে পঞ্জাব এবং উত্তরপ্রদেশ পুলিশ যৌথ অভিযান চালায় উত্তরপ্রদেশের পিলিভিটে। তাঁরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালালে পাল্টা জবাব দেয় পুলিশও। জখম অবস্থায় তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পরে তিন জনেরই মৃত্যু হয়।