স্মৃতি: সল্টলেকের একাধিক বন্ধ হয়ে যাওয়া বাস রুটের কথা মনে করিয়ে দিতে বাসযাত্রা ও প্রদর্শনী। শনিবার। —নিজস্ব চিত্র।
ট্রামের মতো শহরের একাধিক বাস রুটও অবলুপ্তির পথে। বাসপ্রেমী সংগঠন ‘কলকাতা বাস-ও-পিডিয়া’ বছরখানেক আগে শহরের পশ্চিমে হাওড়া-কলকাতার দু’টি হারিয়ে যাওয়া বাস রুটের কথা তুলে ধরে বাসযাত্রার আয়োজন করেছিল। তার মধ্যে ছিল ৫২ (রামরাজাতলা থেকে বাবুঘাট) এবং ৫৬ নম্বর (রুইয়া, পূর্ব পাড়া থেকে হাওড়া স্টেশন) রুট। শনিবার এ বছরের বাসযাত্রায় উঠে এল সল্টলেকের একাধিক বাস রুটের বৃত্তান্ত। আশির দশকে শুরু হওয়া ৪৪এ, ২৩৯ এবং ৪৭ নম্বর রুটকে তুলে ধরা হল দ্বিতীয় বছরের বাসযাত্রায়। সেগুলির মধ্যে লেক টাউন থেকে চলা ৪৭ নম্বর বাস এখন অতীত। ওই রুট ইউনিটেক পর্যন্ত সম্প্রসারিত হলেও পরে তা বন্ধ হয়ে যায়।
হাওড়া স্টেশন এবং সল্টলেকের মধ্যে ৪৪এ রুটের বাস চলে এম জি রোড, শিয়ালদহ, উল্টোডাঙা এবং করুণাময়ী হয়ে। সল্টলেক ছুঁয়ে শাপুরজি ও বাবুঘাটের মধ্যে চলা ২৩৯ নম্বর রুট এখনও চালু থাকলেও ওই রুটের এ এবং বি শাখা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ওই দুই রুটের বাস যথাক্রমে সল্টলেকের ১২ নম্বর ট্যাঙ্ক এবং সেক্টর ফাইভ থেকে চলত। এখন ওই রুটের একটি ভাগে হলুদ বোর্ড নিয়ে বাস শাপুরজি ও বাবুঘাটের মধ্যে চলে। অন্যটি সাদা বোর্ড নিয়ে বিকাশ ভবন ও বাবুঘাটের মধ্যে চলে।
এ দিন কসবার পরিবহণ ভবনে ওই বাসযাত্রার সূচনা করেন রাজ্য পরিবহণ নিগমের ডিরেক্টর মহম্মদ ইখলাক ইসলাম। ছিলেন বেলতলা আরটিএ-র সচিব দেবাশিস বৈদ্যও। কসবা থেকে একাধিক বেসরকারি বাসের ওই শোভাযাত্রা পৌঁছয় সল্টলেকের ১২ নম্বর ট্যাঙ্কে। সেখানে বৃক্ষরোপণ করা হয়। সল্টলেক ও নিউ টাউনের বিভিন্ন রুট ঘুরে সন্ধ্যায় ১২ নম্বর ট্যাঙ্কে শেষ হয় শোভাযাত্রা। কলকাতার পরিবহণ ইতিহাসের সংগ্রাহক শৌভিক রায়ের উদ্যোগে একটি বাসে বিশেষ প্রদর্শনী আয়োজিত হয়। ‘কলকাতা বাস-ও-পিডিয়া’র তরফে অনিকেত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘গুরুত্বপূর্ণ বহু বাস রুট হারিয়ে যেতে বসেছে। ওই সব রুটের কথা মনে করানোর পাশাপাশি বাসের গুরুত্ব তুলে ধরতেই এই বাসযাত্রা।’’
এই যাত্রার অন্যতম সহযোগী ‘সিটি সাবার্বান বাস সার্ভিস’-এর টিটু সাহা বলেন, ‘‘কম খরচে যাতায়াতের মাধ্যম হিসাবে বাসের গুরুত্ব মনে করিয়ে দিতেই এমন উদ্যোগ।’’