শান্তিলাল বৈদ। ফাইল চিত্র ।
ক্রমশই জটিল হচ্ছে লি রোডের বাসিন্দা গয়না ব্যবসায়ী শান্তিলাল বৈদের মৃত্যুরহস্য। সোমবার রাতে বাড়ি থেকে খানিক দূরের একটি অতিথিশালার দরজা ভেঙে, তাঁর নগ্ন দেহ উদ্ধার করেছিল পুলিশ। সেই সময় গলায় প্যাঁচানো ছিল টেলিফোনের তার। সেই মৃত্যু রহস্যের তদন্তে নেমে, জোড়াবাগান এলাকা থেকে এক ট্যাক্সিচালককে আটক করল পুলিশ। এই চালককে ইতিমধ্যেই জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়েছে বলেও সূত্রের খবর। গতকাল রাতেই এই ট্যাক্সিচালককে আটক করা হয় বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।
এই ঘটনার মূল অভিযুক্ত হাও়ড়া থেকে এই গাড়িতে ওঠেন বলে জানা গিয়েছে। প্রাথমিক ভাবে আরও জানা গিয়েছে যে, এর পর সেই গাড়ি তাঁকে নিয়ে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হয়ে আবার হাও়ড়া বাস স্ট্যান্ডে যায়। অভিযুক্তকে গাড়ির চালক চিনতেন না। তিনি নিজের জবানবন্দিতে এমনটাই জানিয়েছেন বলে সূত্রের খবর।
পুলিশ সূত্রে খবর, সোমবার সন্ধ্যা ৬টা ৪০ মিনিটে ২০ নম্বর লি রোডের বাড়ি থেকে পাড়ায় পান খেতে বেরিয়েছিলেন ষাটোর্ধ্ব শান্তিলাল। তার পর থেকেই নিখোঁজ হন তিনি। সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ শান্তিলালের মোবাইল থেকে তাঁর ছেলের মোবাইলে ফোন আসে। জানানো হয়, অপহরণ করা হয়েছে ব্যবসায়ীকে। চাওয়া হয় ২৫ লক্ষ টাকাও। এমনকি পুলিশকে জানালে শান্তিলালকে খুন করা হবে বলেও হুমকি দেওয়া হয়। শান্তিলালের পরিবারের তরফে তখন জানানো হয়, দ্রুত এত টাকা জোগাড় করা সম্ভব হবে না। অপহরণকারী আবারও হুমকি দিয়ে জানায়, তাঁর কাছে শান্তিলালের বেশ কিছু আপত্তিকর ছবি আছে। টাকা দিতে দেরি করলে সেই ছবি ছড়িয়ে দেওয়া হবে বলেও ভয় দেখানো হয়। অপহরণকারীর সঙ্গে শান্তিলালের ছেলের পাশাপাশি তাঁর স্ত্রীরও কথা হয়।
পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, বিভিন্ন জায়গা থেকে টাকা জোগাড় করে রাত ১০টা নাগাদ ভিক্টোরিয়া দক্ষিণ গেটের সামনে যান শান্তিলালের পরিবারের সদস্যরা। সেখানে অপহরণকারীকে টাকাও দেন তাঁরা। অপহরণকারীরা শান্তিলালের ফোন ফিরিয়ে দিয়ে জানান, আধ ঘণ্টার মধ্যে শান্তিলালের সঙ্গে যোগাযোগ করে নেবেন। কিন্তু অনেকক্ষণ পেরিয়ে যাওয়ার পরও তিনি না ফেরায় ভবানীপুর থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন পরিবারের সদস্যরা। পুলিশ শান্তিলালের মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন দেখে পার্ক স্ট্রিট, ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল এলাকায় পৌঁছয়। সেই সূত্রেই তারা ভবানীপুরের ওই অতিথিশালাতেও যান। সেখান থেকেই উদ্ধার হয় শান্তিলালের নগ্ন মৃতদেহ।