ভবানীপুরে উপনির্বাচনের আগে চলছে নাকা তল্লাশি। মঙ্গলবার, এক্সাইড মোড়ে। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী।
ভবানীপুর কেন্দ্রের উপনির্বাচনী প্রচার শেষ হয়েছিল প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের মারামারিতে। ওই ঘটনায় ধস্তাধস্তি ও হাতাহাতির জেরে এক জনের মাথাও ফেটেছে। প্রকাশ্যেই পিস্তল উঁচিয়ে হুঁশিয়ারি দিতে দেখা যায় বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষের নিরাপত্তারক্ষীকে। আগামী কাল, বৃহস্পতিবার ভোটের দিন যাতে এমন কিছুর পুনরাবৃত্তি না হয়, তার জন্য বাহিনীকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিল লালবাজার। কোনও নেতা বা মন্ত্রীর দেহরক্ষী যাতে অস্ত্র নিয়ে বুথের ১০০ মিটারের মধ্যে ঢুকতে না পারেন, বাহিনীর আধিকারিকদের তা নিশ্চিত করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ভবানীপুর কেন্দ্রে ভোটের দিন যে সমস্ত পুলিশকর্মী নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবেন, মঙ্গলবার তাঁদের নিয়ে একটি বৈঠক হয় কলকাতা পুলিশ ট্রেনিং স্কুলে। সেখানেই ভোটের দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত কমিশনার ওই নির্দেশ দেন। ভোটের দিন ওই কেন্দ্রের নিরাপত্তার কাজে যুক্ত আধিকারিকদের সকলেই ছিলেন বৈঠকে। পরে বিকেলে ভবানীপুর বিধানসভা এলাকার মোট ন’টি থানার ওসি এবং এসি-দের সঙ্গে লালবাজারে বৈঠক করেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার সৌমেন মিত্র। ভোটের দিন ন’টি থানার দায়িত্বে থাকা ডিসি-রাও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
ভবানীপুরে ভোটের দিন যাতে বহিরাগতেরা ঢুকে গোলমাল পাকাতে না পারে, তার জন্য মধ্য ও দক্ষিণ কলকাতার হোটেল এবং অতিথিশালাগুলিতে নজর রাখছে পুলিশ। সেখানে বাইরে থেকে কারা এসে উঠেছেন, তাঁরা কেন শহরে এসেছেন, সে সব খতিয়ে দেখতে সংশ্লিষ্ট থানাগুলিকে নির্দেশ দিয়েছেন সিপি। এর পাশাপাশি আজ, বুধবার থেকেই পুলিশ আধিকারিকদের এলাকায় টহল বাড়াতে বলা হয়েছে। ভোটের দিন বাইরের কাউকে ভোটকেন্দ্রের আশপাশে দেখলে জিজ্ঞাসাবাদ করতে বলা হয়েছে।
লালবাজার জানিয়েছে, এ দিন সন্ধ্যা থেকেই বুথের ২০০ মিটারের মধ্যে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। যা বহাল থাকবে ভোটগ্রহণের দিন পর্যন্ত। এ দিন থেকেই ১৫ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনীর সঙ্গে কয়েক হাজার পুলিশকর্মী থাকছেন এলাকার নিরাপত্তায়। সঙ্গে থাকছে পুলিশকর্মীদের নিয়ে গঠিত সেক্টর মোবাইল, আর টি ভ্যান, থানার এবং ডিভিশনের স্ট্রাইকিং ফোর্স। এ ছাড়া, বাহিনীর শীর্ষ কর্তারা কমব্যাট বাহিনী নিয়ে ঘুরে দেখবেন নির্দিষ্ট করে দেওয়া থানা এলাকা। এ বারই প্রথম একটি থানার দায়িত্বে রয়েছেন এক জন করে ডিসি। দু’টি থানার দায়িত্বে থাকছেন যুগ্ম কমিশনার পদমর্যাদার এক জন করে অফিসার।
সূত্রের খবর, পুলিশ ট্রেনিং স্কুলের বৈঠকে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশের উল্লেখ করে বলা হয়েছে, কোনও নেতা বা মন্ত্রীর দেহরক্ষী অস্ত্র নিয়ে বুথের ১০০ মিটারের মধ্যে ঢুকতে পারবেন না। বুথের বাইরে থাকা পুলিশ সে দিকে নজর রাখবে। বুথের বাইরে যাতে জমায়েত বা গোলমাল না হয়, তা দেখবে ট্র্যাফিক গার্ডের সার্জেন্টদের নিয়ে তৈরি বিশেষ বাইক বাহিনী। একশো জন সার্জেন্টকে মোতায়েন করা হবে ৯৮টি ভোটকেন্দ্রের বাইরে। এক-এক জনের তত্ত্বাবধানে থাকবে একাধিক বুথ।
এক পুলিশকর্তা জানাচ্ছেন, গত বারের মতোই ভবানীপুর কেন্দ্রের ভোট শান্তিতে শেষ করতে তৎপর লালবাজার। তার জন্য ওই বিধানসভা কেন্দ্রের বিভিন্ন জায়গায় গত কয়েক দিন ধরে নাকা তল্লাশিও চলছে।