লালবাজার সূত্রের খবর, ডিউটিতে যোগ দেওয়ার আগে ওই বডি ক্যামেরা খুঁটিয়ে পরীক্ষা করে নিতে বলা হয়েছে।। —ফাইল ছবি
রাতের শহরে মত্ত অবস্থায় গাড়ি চালানোর অভিযোগে এক জনকে আটক করে জরিমানা করেছিলেন এক ট্র্যাফিক সার্জেন্ট। কিন্তু তা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়। অভিযোগ ওঠে পুলিশি দুর্ব্যবহারের। পুলিশকর্তারা খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, ওই সার্জেন্ট সেই সময়ে নিজের দেহে থাকা বডি ক্যামেরা অন করে ঘটনার ভিডিয়ো রেকর্ডিং করেননি। ওই একটি ঘটনাই শুধু নয়। এমন ঘটনা একাধিক বার ঘটেছে শহরের বুকে। যেখানে বডি ক্যামেরা অন না করেই জরিমানা বা তল্লাশি করেছেন পুলিশকর্মীরা।
পুলিশকর্মীদের বিরুদ্ধে এই ধরনের অভিযোগ ওঠা ঠেকাতে এ বার বডি ক্যামেরার মাধ্যমে ভিডিয়ো রেকর্ডিং নিয়ে একটি ‘স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিয়োর’ বা এসওপি চালু করল লালবাজার। কলকাতা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার-১ ওই এসওপি মেনে চলার বিষয়ে নির্দেশ দিয়েছেন।
লালবাজার সূত্রের খবর, ডিউটিতে যোগ দেওয়ার আগে ওই বডি ক্যামেরা খুঁটিয়ে পরীক্ষা করে নিতে বলা হয়েছে। ক্যামেরার মেমরি ডিস্কে জায়গা আছে কি না এবং ঘড়ি ঠিক মতো কাজ করছে কি না, তা-ও দেখতে বলা হয়েছে। যদি দেখা যায় ক্যামেরা কাজ করছে না, তা হলে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে এনে জেনারেল ডায়েরি করতে হবে। তল্লাশি কিংবা অভিযানে অংশ নেওয়া পুলিশকর্মীদের দেহে ওই ক্যামেরা অন করে রাখা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে এসওপি-তে।
এক পুলিশকর্তা জানান, বডি ক্যামেরার ভিডিয়ো ফুটেজ কম করে ছ’মাস সংরক্ষণ করে রাখতে হবে। ট্র্যাফিক গার্ড বা ইউনিটের নির্দিষ্ট হার্ড ডিস্কে বিস্তারিত বিবরণ-সহ সে সব ভিডিয়ো সেভ করে রাখতে হবে প্রতিদিনের কাজের শেষে। ওই সমস্ত ভিডিয়ো কোনও ভাবেই এডিট করা যাবে না। ছ’মাস কেটে যাওয়ার পরেও ভিডিয়ো ফুটেজ ডিলিট করতে হলে ডেপুটি কমিশনারের অনুমতি নিতে হবে। শুধু তা-ই নয়, কবে, কার নির্দেশে তা ডিলিট করা হচ্ছে, সেই বিবরণ-সহ জেনারেল ডায়েরি করতে হবে পুলিশকর্মীদের।
লালবাজার জানিয়েছে, পুলিশকর্মীরা এসওপি-র সব শর্ত ঠিক মতো পালন করছেন কি না, তা দেখার জন্য এসি বা ওসি পদমর্যাদার অফিসারদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। প্রতি মাসে বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন তাঁরা। কেউ তা অমান্য করলে ডিসি-কে রিপোর্ট দেওয়ার জন্যও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সূত্রের দাবি, বর্তমানে যে বডি ক্যামেরা ব্যবহার করা হচ্ছে, সেগুলিতে থাকে ৩২ জিবি মেমরি কার্ড। আলাদা হার্ড ডিস্ক থাকে না। ওই সমস্ত ক্যামেরায় কম করে ছ’ঘণ্টার অডিয়ো-ভিডিয়ো রেকর্ডিং করা যায়। এমনকি, ৪০ ফুট দূরের কথোপকথন এবং কার্যকলাপ, সবই রেকর্ড হয়ে যায় ওই ক্যামেরায়।