ফাইল চিত্র।
পেট্রল পাম্পের সামনে জড়ো হচ্ছিল পাঁচ দুষ্কৃতীর একটি দল। কিন্তু সেখানে যে সাদা পোশাকের পুলিশ রয়েছে, তার আঁচ পেয়েই নিজেদের সঙ্গে থাকা গাড়িতে উঠে চম্পট দেওয়ার চেষ্টা করেছিল তারা। পিছু নেয় পুলিশও। দ্বিতীয় হুগলি সেতু ধরে গাড়িটির পিছু নিয়ে শেষে টোল প্লাজ়ার কাছে তাদের পথ আটকান কলকাতা পুলিশের গুন্ডা দমন শাখার আধিকারিকেরা। এ ভাবেই মঙ্গলবার রাতে পাঁচ দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করেছে লালবাজার। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের নাম সাদ্দাম হোসেন, শেখ সমীর, মহম্মদ ফৈয়াজ, মহম্মদ ফহিম ও এজাজউদ্দিন।
পুলিশ জানিয়েছে, বড়বাজারে ডাকাতি করার উদ্দেশ্যে মঙ্গলবার রাত ১০টা নাগাদ হেস্টিংস মোড়ের কাছে একটি পেট্রল পাম্পের সামনে জড়ো হচ্ছিল ওই দুষ্কৃতীরা। তার আগেই সেই পরিকল্পনা বানচাল করা গিয়েছে বলে লালবাজারের দাবি। বুধবার ধৃতদের আদালতে তোলা হলে আগামী ২৫ মে পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।
পুলিশ সূত্রের খবর, ধৃতদের মধ্যে এজাজউদ্দিনের বাড়ি তিলজলার জি জে খান রোডে। বাকি চার জন আনন্দপুর এলাকার বাসিন্দা। আনন্দপুরের গুলশন কলোনি এবং মার্টিনপাড়া মাঝেমধ্যেই অপরাধমূলক ঘটনার জন্য শিরোনামে উঠে আসে। আনন্দপুরের বাসিন্দা, ধৃত ওই চার জনই বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজে জড়িত থাকার অভিযোগে অতীতে একাধিক বার হাজতবাস করেছে। অপরাধের পুরনো ইতিহাস রয়েছে এজাজউদ্দিনেরও। তারা যে কিছু একটা ঘটাতে চলেছে, গোপন সূত্রে সেই খবর পেয়েছিল পুলিশ। সেই মতো তাদের উপরে নজরদারি শুরু করা হয়েছিল।
মঙ্গলবার রাতে দ্বিতীয় হুগলি সেতু ধরে পিছু নিয়ে টোল প্লাজ়ার কাছে ওই দুষ্কৃতীদের হাতেনাতে ধরে পুলিশ। সেখান থেকে তাদের নিয়ে যাওয়া হয় লালবাজারে। ধৃতদের থেকে দু’টি সিঙ্গল শটার পিস্তল, কার্তুজ ও চপার উদ্ধার হয়। যে গাড়িতে করে তারা পালানোর চেষ্টা করেছিল, সেটিও আটক করে পুলিশ।
লালবাজারের এক তদন্তকারী আধিকারিক বলেন, ‘‘ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা গিয়েছে, রাতে বড়বাজার এলাকায় ডাকাতির পরিকল্পনা ছিল ওদের। সেই কারণেই আগ্নেয়াস্ত্র এবং গাড়ি নিয়ে জড়ো হচ্ছিল। তবে আগাম খবর থাকায় ওদের উপরে নজর রাখা হয়েছিল। সেই নজরদারিতেই সুফল মিলেছে।’’ ধৃতদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা করা হয়েছে। তবে বড়বাজারের কোথায় তাদের ডাকাতির পরিকল্পনা ছিল এবং কোথা থেকে ধৃতেরা আগ্নেয়াস্ত্র সংগ্রহ করেছিল, তা পুলিশের তরফে পরিষ্কার করে জানানো হয়নি।
এক তদন্তকারী অফিসার শুধু বলেছেন, ‘‘জিজ্ঞাসাবাদে সমস্তটা বেরিয়ে আসবে। এই ডাকাতির পরিকল্পনায় আর কে কে জড়িত, তা-ও দেখা হবে।’’