প্রতীকী ছবি।
দমকল কেন্দ্রের পাশেই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ভস্মীভূত হয়ে গেল একটি পাখা প্রস্তুতকারক সংস্থার গুদাম। বৃহস্পতিবার ভোরের এই বিধ্বংসী আগুনে পুড়ে যায় গুদামে মজুত করে রাখা কয়েক লক্ষ টাকার বাক্সবন্দি নতুন পাখা। দমকল কেন্দ্র পাশে থাকা সত্ত্বেও ১৩ হাজার বর্গফুটের ওই দোতলা গুদামের আগুন নিয়ন্ত্রণ করতে পাঁচ ঘণ্টারও বেশি সময় লেগে যায়। আগুন নিয়ন্ত্রণে এলে দেখা যায়, গোটা গুদামটিই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
এ দিন ভোর সাড়ে ৪টে নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়ার জি টি রোডে, বাঙালবাবুর সেতুর কাছে দমকলের সদর দফতরের পাশে। পুলিশ জানিয়েছে, জিনিসপত্রের ক্ষয়ক্ষতি হলেও হতাহতের কোনও খবর নেই। প্রাথমিক তদন্তের পরে দমকলের ধারণা, শর্ট সার্কিট থেকেই আগুন লাগে। তবে এ ব্যাপারে নিশ্চিত হতে ফরেন্সিক পরীক্ষা করানো হবে।
দমকল ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন ভোরে পাখা তৈরির সংস্থার ওই গুদাম থেকে ধোঁয়া বেরোতে দেখেন এলাকার এক বাসিন্দা। তিনিই সঙ্গে সঙ্গে দমকলের সদর দফতরে খবর দেন। দমকলকর্মীরা তৎক্ষণাৎ আগুন নেভানোর কাজে নেমে পড়েন। কিন্তু দোতলা ওই গুদামের ভিতরে পিসবোর্ডের কয়েক হাজার প্যাকিং বাক্স থাকায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে একতলা থেকে দোতলায়। বিধ্বংসী আগুনে পুড়তে থাকে গুদামের দোতলায় থাকা টিনের ছাউনি। পুড়ে ছাই হয়ে যায় প্যাকিং বাক্সে ভরে রাখা কয়েক হাজার টেবিল ও সিলিং ফ্যান। গুদামটির পাশেই রয়েছে বসতি এলাকা। আগুন দেখে সেখানকার বাসিন্দারা আতঙ্কিত হয়ে রাস্তায় বেরিয়ে পড়েন।
সমরেন্দ্র যাদব নামে এলাকার এক বাসিন্দা বললেন, ‘‘দমকল ঠিক সময়ের মধ্যে আগুন নেভাতে না-পারলে তা আশপাশের বাড়িতেও ছড়িয়ে পড়ত। এক সময়ে আগুন এতটাই ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছিল যে, আমরা সত্যিই খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। সকলে তাই বাড়ির বাইরে বেরিয়ে আসি।’’ এ দিকে, সদর দফতরের পাশেই এমন ভয়ঙ্কর আগুনের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন হাওড়ার ডিভিশনাল ফায়ার অফিসার তপন বসু। তিনি বলেন, ‘‘সাড়ে ১৩ হাজার বর্গফুটের দোতলা গুদামটি দাহ্য বস্তুতে ঠাসা ছিল বলেই আগুন এতটা বিধ্বংসী হয়ে ওঠে। আমাদের ন’টি ইঞ্জিন পাঁচ ঘণ্টা ধরে আগুন নেভানোর কাজ করেছে। জলের কোনও সমস্যা হয়নি। আমাদের নিজস্ব হাইড্রান্ট থেকে জল নিয়ে কাজ চালানো হয়েছে। এই ঘটনায় কেউ হতাহত হননি।’’
দমকল সূত্রে জানা গিয়েছে, আগুন লাগার সময়ে ওই গুদামে কেউ ছিলেন না। তবে ঠিক কী কারণে আগুন লেগেছে, তা ফরেন্সিক পরীক্ষার আগে বোঝা যাবে না। প্রাথমিক ভাবে শর্ট সার্কিট বলেই সন্দেহ দমকলকর্মীদের।