বিক্ষোভ কর্মসূচির একেবারে সামনে ছিল বিভিন্ন স্কুল-কলেজের পড়ুয়ারা। —নিজস্ব চিত্র।
উড়ালপুল চালু হতেই বন্ধ হয়ে গিয়েছে লেভেল ক্রসিং। আর তার জেরে বিষ্ণুপুর শহরে যেতে হচ্ছে তিন কিলোমিটার পথ ঘুরে। দুর্ঘটনাও ঘটছে প্রায়শই। এই পরিস্থিতিতে অবিলম্বে আন্ডারপাসের দাবিতে বিষ্ণুপুর স্টেশন চত্বরে বিক্ষোভে ফেটে পড়ল স্থানীয় স্কুল-কলেজের পড়ুয়া থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ।
দক্ষিণ পূর্ব রেলের খড়্গপুর-আদ্রা লাইনে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন বিষ্ণুপুর। বিষ্ণুপুর স্টেশনের পাশেই রেল লাইনকে আড়াআড়ি ভাবে ছেদ করেছে ৬০ নম্বর জাতীয় সড়ক। এত দিন সেখানে ছিল লেভেল ক্রসিং। সম্প্রতি সেই জায়গায় উড়ালপুল তৈরি হওয়ায় রেলের তরফে লেভেল ক্রসিং পাকাপাকি ভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়। আর তাতেই সমস্যায় পড়েন রেললাইনের ধারে থাকা দ্বাদশবাড়ি, কাঁটাবাড়ি, বনকাটি, ঝরিয়া, সেনডাঙা-সহ মোট ১০-১২টি গ্রামের মানুষ। এই গ্রামগুলির মানুষকে শিক্ষা থেকে স্বাস্থ্য, দৈনন্দিন দোকান বাজার থেকে ব্যবসা সব কিছুর জন্যই নির্ভর করতে হয় রেললাইনের ও-পারে থাকা বিষ্ণুপুর শহরের উপর। লেভেল ক্রসিং বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এখন তাঁদের বিষ্ণুপুর শহরে যাতায়াতের একমাত্র ভরসা উড়ালপুল। প্রায় তিন কিলোমিটার ঘুর পথে উড়ালপুল দিয়ে যাতায়াতের পথে প্রায়শই দুর্ঘটনা ঘটছে। উড়ালপুল দিয়ে টোটো যাতায়াতে নিষেধাজ্ঞা থাকায় সমস্যা আরও বে়ড়েছে। এই পরিস্থিতিতে গ্রামগুলির অধিকাংশ বাসিন্দা ও স্কুল-কলেজের পড়ুয়াদের বাধ্য হয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রেললাইন পেরিয়ে বিষ্ণুপুর শহরে যাতায়াত করতে হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে বেশ কিছু দিন ধরেই বিষ্ণুপুর স্টেশন লাগোয়া এলাকায় আন্ডারপাস তৈরির দাবি জানিয়ে আসছিলেন স্থানীয়েরা। কিন্তু রেল আন্ডারপাস তৈরির কোনও উদ্যোগ না নেওয়ায় বুধবার বিষ্ণুপুর স্টেশনের টিকিট কাউন্টারের সামনে বসে পড়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন স্থানীয়েরা। এই বিক্ষোভ কর্মসূচির একেবারে সামনে ছিল বিভিন্ন স্কুল-কলেজের পড়ুয়ারা।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া স্কুল পড়ুয়া অর্পিতা লোহার বলেন, ‘‘জাতীয় সড়কের উড়ালপুলে যানবাহনের প্রচণ্ড চাপ। সেই উড়ালপুল দিয়ে সাইকেলে বা হেঁটে যাতায়াত করলেই দুর্ঘটনা ঘটে। এমতাবস্থায় আমাদের স্কুল যাওয়ার একমাত্র উপায় হেঁটে লাইন পারাপার করা। কিন্তু সেখানেও থাকে জীবনের ঝুঁকি। অবিলম্বে স্টেশন লাগোয়া এলাকায় আন্ডারপাস তৈরি করা না হলে আমরা আরও বৃহত্তর আন্দোলন করব।’’ বিক্ষোভকারী বধূ শুক্লা দত্ত বলেন, ‘‘উড়ালপুলে প্রায়শই দুর্ঘটনা ঘটে। ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠালে বা বাড়ির বড়রা শহরে কাজে গেলে তারা বাড়িতে না ফিরে আসা পর্যন্ত ভয়ঙ্কর দুশ্চিন্তার মধ্যে সময় কাটে। অবিলম্বে আমাদের আন্ডারপাস চাই।’’ রেল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলতে চায়নি। তবে রেলের তরফে জানানো হয়েছে, গ্রামবাসীদের দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে।