প্রতীকী ছবি।
বৌবাজারে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর সুড়ঙ্গ-বিপর্যয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হলেও প্রাণহানি হয়নি। কিন্তু বুধবার সকালে ওই মেট্রোরই বি বা দী বাগ স্টেশনের নির্মাণকাজ চলাকালীন কংক্রিটের চাঙড় চাপা পড়ে প্রাণ হারালেন এক শ্রমিক। মৃতের নাম সঞ্জয় মাহাতো (৪১)। ঝাড়খণ্ডে তাঁর বাড়ি। থাকতেন শালিমারের কাছে।
ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই স্টেশনের সুড়ঙ্গে কংক্রিটের চাঙড় খোলার সময়েই দুর্ঘটনা ঘটে বলে অনুমান করা হচ্ছে। ওখানে সুড়ঙ্গ খননের কাজ আগেই সম্পূর্ণ হয়েছে। বছর দুয়েক ধরে মাটির উপর থেকে ‘টপ-ডাউন’ পদ্ধতিতে স্টেশন নির্মাণের কাজ চলছে। এই পদ্ধতিতে স্টেশনের উপরের তলা তৈরির কাজ হয় আগে। একতলা তৈরি করা হয় শেষে। বি বা দী বাগে উপরের তলা তৈরি হয়ে যাওয়ার পরে একেবারে নীচে, প্ল্যাটফর্ম স্তরের কাজ সম্প্রতি শুরু হয়েছে। সেই কাজের জন্য সুড়ঙ্গে কংক্রিটের চাঙড় খোলা হচ্ছিল। ওই স্টেশনের উত্তর প্রান্তে মহাকরণের দিকে কাজ চলাকালীন দুর্ঘটনা ঘটে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
মেট্রোর খবর, সাত-আট জনের একটি দল মঙ্গলবার রাতের শিফটে সুড়ঙ্গে কংক্রিটের বৃত্তাকার চাঙড় খুলছিল। সেই দলে সঞ্জয়ও ছিলেন। বুধবার সকালের দিকে শিফট শেষ হওয়ার পরে অন্য শ্রমিকেরা উঠে এলেও সঞ্জয়কে পাওয়া যায়নি। খোঁজখবর শুরু হয়। সুড়ঙ্গের কংক্রিটের নীচে চাপা পড়া অবস্থায় উদ্ধার করা হয় তাঁকে। সঙ্গে সঙ্গে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সঞ্জয়কে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা।
হাওড়া ময়দান থেকে এসপ্লানেড পর্যন্ত সুড়ঙ্গ আগেই তৈরি হয়ে গিয়েছে। হাওড়া, বি বা দী বাগ ও এসপ্লানেডে স্টেশন তৈরির কাজ চলছে। ওই তিন স্টেশনেই প্ল্যাটফর্ম তৈরির জন্য সুড়ঙ্গ ভাঙতে হচ্ছে। ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর নির্মাতা সংস্থা কলকাতা মেট্রো রেল কর্পোরেশন লিমিটেডের জেনারেল ম্যানেজার এ কে নন্দী বলেন, ‘‘বেসরকারি নির্মাণ সংস্থার কাছে ওই দুর্ঘটনার সবিস্তার রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। রিপোর্ট খতিয়ে দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’ সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, মেট্রোর সুড়ঙ্গ নির্মাতা সংস্থার অধীন এক ঠিকাদার সংস্থার কর্মী ছিলেন সঞ্জয়। দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ জানতে তদন্ত শুরু হয়েছে। সুড়ঙ্গের কংক্রিটের বৃত্তাকার চাঙড় খোলার সময় সুরক্ষা বিধি মানা হয়েছিল কি না, কোন পরিস্থিতিতে কেন কংক্রিটের চাঙড় আলগা হয়ে পড়ল— সবই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।