ফাইল চিত্র।
অতিমারি পরিস্থিতিতে গত মার্চ থেকে রাস্তায় নেমে কাজ করতে গিয়ে সংক্রমিত হয়েছিলেন বহু পুলিশকর্মী। তাঁদের মধ্যে সুস্থ হয়ে অনেকে ইতিমধ্যে কাজে যোগদান করলেও শারীরিক কিছু সমস্যা ও দুর্বলতা রয়ে গিয়েছে। এমতাবস্থায় কালীপুজোয় আতসবাজির ধোঁয়ায় সেই সমস্যা আরও বাড়বে বলেই আশঙ্কা তাঁদের। তাই জনসাধারণ এবং নিজেদের শারীরিক অবস্থার কথা মাথায় রেখে এ বারের কালীপুজোয় নিষিদ্ধ বাজি তো বটেই, সেই সঙ্গে আতসবাজিও যাতে না পোড়ানো হয়, তা নিয়ে ফেসবুকে আবেদন জানাচ্ছে পুলিশবাহিনীর একাংশ।
হাইকোর্টের রায়ে দুর্গাপুজোর মণ্ডপে দর্শনার্থীদের প্রবেশ বন্ধ হওয়ায় রাস্তায় বেরিয়ে সে ভাবে ভিড় সামলাতে হয়নি কলকাতা পুলিশকে। তবে কালীপুজোয় কোথাও নিষিদ্ধ বাজি ফাটানো হচ্ছে কি না, তার উপরে নজরদারি চালাতে অন্যান্য বছর রাস্তায় নামতে হয় পুলিশকে। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে বহু পুলিশকর্মী সরাসরি রাস্তায় নেমে কাজ করতে গিয়ে সংক্রমিত হয়েছেন।
কলকাতা পুলিশে এখনও পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা তিন হাজারের মতো। অনেকে ইতিমধ্যে সুস্থ হয়ে কাজে যোগ দিলেও বেশির ভাগেরই দুর্বলতা এবং শারীরিক কিছু সমস্যা রয়ে গিয়েছে। করোনাকে জয় করে ফেরার পরে ফের কোনও ভাবে ঠান্ডা লাগলে তা মারাত্মক হতে পারে বলে সতর্ক করছেন চিকিৎসকেরা। কিছু কিছু শারীরিক পরীক্ষাও নিয়মিত করিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে সুস্থ হয়ে ওঠা বেশ কিছু পুলিশকর্মীকে। কিন্তু কাজের চাপে তাঁদের অনেকেই সে দিকে নজর রাখতে পারেননি। এমন পরিস্থিতিতে শীতের আগে কালীপুজোয় বাজির ধোঁয়া তাঁদের শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটাতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অনেক পুলিশকর্মী। তাই এ বারের কালীপুজোয় নিষিদ্ধ বাজি তো বটেই, সেই সঙ্গে আতসবাজিও ব্রাত্য করা হোক— এমনই চাইছেন পুলিশবাহিনীর একাংশ।
তবে আতসবাজি না পোড়ানো নিয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও সরকারি নির্দেশিকা নেই। কিন্তু করোনাজয়ী সাধারণ মানুষ এবং পুলিশকর্মীদের কথা ভেবে বাহিনীর অনেকেই এ বার বাজিকে ব্রাত্য করার পক্ষে সোশ্যাল মিডিয়ায় মুখ খুলেছেন। এমনই এক পুলিশ আধিকারিকের কথায়, “দু’মাস আগে আমার করোনা হয়েছিল। এখন একটু ধুলো নাকে ঢুকলে, একটু ভারী ব্যাগ তুললে বা দৌড়লেও হাঁফিয়ে যাচ্ছি, শ্বাসকষ্ট হচ্ছে। আগে এই সমস্যা ছিল না। বুঝতে পারছি, কালীপুজোয় আতসবাজির ধোঁয়ায় এই শ্বাসকষ্ট আরও বাড়বে।”
এখন এমনিতেই বিধিনিষেধ উড়িয়ে, দূরত্ব-বিধির পরোয়া না করে, মাস্ক ছাড়াই বাজারে ভিড় জমাচ্ছেন অনেকে। ফলে বাড়ছে সংক্রমণ। তবু কালীপুজোর আগে মানুষকে সচেতন করতেই নিজেদের হোয়্যাটসঅ্যাপ গ্রুপ বা সোশ্যাল মিডিয়ায় বাজির বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন পুলিশকর্মীদের একাংশ।