শাস্তি: মাস্ক ছাড়া পথে বেরোনো ব্যক্তিদের মাস্ক পরিয়ে ব্যারিকেড ঘেরা জায়গায় আটকে রেখেছে মুচিপাড়া থানার পুলিশ। সোমবার, কোলে মার্কেট চত্বরে। নিজস্ব চিত্র।
করোনার তৃতীয় ঢেউ সুনামির আকার ধারণ করেছে। তা সত্ত্বেও বিধি মেনে চলার পরোয়া করছেন না ক্রেতা-বিক্রেতাদের একটি বড় অংশ। মাস্ক ছাড়াই দিব্যি দোকান-বাজারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন তাঁরা। সেই মাস্কহীনদের ধরতে এ বার অভিযান চালাল পুলিশ। আইনভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিল তারা।
লালবাজার সূত্রের খবর, শহরের বিভিন্ন বাজারে মাস্ক না পরেই ঘুরে বেড়াচ্ছেন এক শ্রেণির অসচেতন মানুষ। তাঁদের নিয়ন্ত্রণ করতেই থানাগুলিকে বাজারে অভিযান চালাতে বলা হয়েছে। সেই মতো সোমবার সকাল থেকেই শহরের বিভিন্ন বাজারে বাহিনী সমেত হানা দেন স্থানীয় থানার আধিকারিকেরা। মাইকে সচেতনতার প্রচার শুরু করেন তাঁরা। তা সত্ত্বেও দেখা যায়, অনেকেই মাস্ক না পরে চলাফেরা করছেন। প্রচারে কাজ না হওয়ায় ধরপাকড় শুরু করে পুলিশ। লালবাজারের নির্দেশ মতো এ দিন সকালে গরফার কালিকাপুর বাজার, মানিকতলা বাজার, পোস্তা বাজার ও কোলে মার্কেটের মতো পাইকারি বাজারে ধরপাকড় অভিযান শুরু হয়। কোলে মার্কেটে গিয়ে দেখা যায়, মাস্ক না পরা একাধিক ব্যক্তিকে আটক করে রাস্তার এক দিকে দাঁড় করিয়ে রেখেছে পুলিশ। পরে তাঁদের পুলিশের ভ্যানে চাপিয়ে মুচিপাড়া থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাঁদের কাছ থেকে জরিমানা আদায় করা হয়।
একই চিত্র দেখা গিয়েছে কালিকাপুর, মানিকতলা ও পোস্তা-সহ শহরের অধিকাংশ বাজারে। সর্বত্রই মাস্কহীনদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে পুলিশ। আবার চাঁদনি চক বাজারে সকলে যাতে করোনা-বিধি মেনে চলেন, তার জন্য প্রচার চালানো হয় বৌবাজার থানার তরফে।
অন্য দিকে, ক্যানিং স্ট্রিটের মেহতা বিল্ডিং-সহ ওষুধের পাইকারি বাজারেও ভিড় নিয়ন্ত্রণ ও করোনা-বিধি বলবৎ করার জন্য পুলিশের তরফে অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, করোনার তৃতীয় ঢেউয়ে মাস্কহীনদের বাড়বাড়ন্ত রুখতে লালবাজার ইতিমধ্যেই প্রতিটি থানাকে স্থানীয় বাজার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় রেখে অভিযান চালাতে নির্দেশ দিয়েছে। পাশাপাশি, মাইকে সচেতনতার প্রচার চালাতেও বলা হয়েছে। সেই মতো শহরের ছোট-বড় সব বাজারেই রোজ পুলিশি অভিযান এবং ধরপাকড় চলবে।
পূর্ব কলকাতার একটি থানার এক আধিকারিকের মতে, গত দু’বছর ধরে মাস্ক নিয়ে কার্যত ‘গান্ধীগিরি’ করা হয়েছে। কারও মাস্ক না থাকলে তাঁকে তা দেওয়া হয়েছে। তাতে তেমন কোনও লাভ যে হয়নি, তা বাজারে গেলেই বোঝা যায়। তাঁর বক্তব্য, শক্ত হাতে ব্যবস্থা না নিলে কোনও দিনই কিছু লোককে মাস্ক পরানো যাবে না।