Kolkata Metro

মেট্রোর অভিযোগ সঠিক নয়, অনুমতি দিলেও সময়ে শেষ হয়নি একাধিক কাজ, পাল্টা দাবি লালবাজারের

মেট্রোর তরফে শনিবার অভিযোগ করা হয়, পুলিশের অনুমতি না পাওয়ায় থমকে আছে বেলেঘাটা মেট্রো স্টেশনের কাজ। বিকেলেই তার জবাব দিল লালবাজার। পাল্টা মেট্রোর বিরুদ্ধে গড়িমসির অভিযোগও তোলা হয়েছে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ মার্চ ২০২৪ ১৮:০৮
Share:

কলকাতা মেট্রোর লাইন সম্প্রসারণের কাজ চলছে। —ফাইল চিত্র।

বেলেঘাটা মেট্রো স্টেশনের কাজ সম্পূর্ণ করার জন্য পুলিশের প্রয়োজনীয় অনুমতি মিলছে না বলে অভিযোগ করেছেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ। সেই অভিযোগ কার্যত উড়িয়ে দিল লালবাজার। তাদের দাবি, মেট্রোকে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণের অনুমতি দেওয়া হয়নি, এই তথ্য সঠিক নয়। উল্টে, কবে কোথায় মেট্রোর কাজের জন্য পুলিশ যান নিয়ন্ত্রণ করেছে, তার হিসাব দিয়েছে লালবাজার। মেট্রো কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে তাদের পাল্টা অভিযোগ, কোনও কাজের জন্য যে সময় তাঁরা চেয়ে নেন, তার মধ্যে কাজ শেষ করে উঠতে পারেন না। দেরি হবে বলেও পুলিশকে জানানো হয় না। এর ফলে যান নিয়ন্ত্রণে সমস্যায় পড়তে হয়।

Advertisement

লালবাজারের তরফে মেট্রোর ‘গড়িমসি’র একাধিক দৃষ্টান্ত দেওয়া হয়েছে। তারা জানিয়েছে, চিংড়িহাটার কাছে মেট্রোর কাজের জন্য ৩০ দিন যান নিয়ন্ত্রণের অনুমতি চাওয়া হয়েছিল। পুলিশ সেই অনুমতি দেওয়ার পর নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গিয়েছে। ৫০ দিন পরেও কাজ শেষ হয়নি। বাড়তি সময় যে লাগবে, পুলিশকে সে বিষয়ে অবগত করেননি মেট্রো কর্তৃপক্ষ। লালবাজারের অভিযোগ এমনই।

লালবাজার জানিয়েছে, ওই একই লাইনে আরও একটি জায়গায় ২৮৬ থেকে ২৮৭ নম্বর মেট্রো স্তম্ভের মাঝে কাজ শেষ করতে ৪৩ দিন দেরি করেছেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ। সময় চাওয়া হয়েছিল ৪৫ দিন। কাজ শেষ হয়েছে ৮৮ দিনে। একই ভাবে পুলিশের আরও দাবি, ইএম বাইপাসে কলকাতা আন্তর্জাতিক স্কুলের সামনে ৭৬ মিটার লম্বা স্টিল গ্রিডার বসানোর জন্য গত ২ সেপ্টেম্বর ৬০ দিনের যান নিয়ন্ত্রণের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল মেট্রোকে। ১ নভেম্বর সেই অনুমতির মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে। মেট্রোর তরফে ২৮ ফেব্রুয়ারি জানানো হয়, ৭ মার্চের মধ্যে কাজ শেষ হয়ে যাবে। কিন্তু তা এখনও চলছে। এখনও পর্যন্ত ১২৭ দিন বাড়তি সময় লেগেছে।

Advertisement

মেট্রো কর্তৃপক্ষ এবং পুলিশের যুগ্ম বৈঠকে মেট্রো আধিকারিকদের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগও তুলেছে লালবাজার। বৈঠকে মেট্রো আধিকারিকেরা উপস্থিত থাকেন না বলেও জানানো হয়েছে। লালবাজারের অভিযোগ, এর ফলে কাজের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে সমস্যা হয়। অভিযোগ, ডিএইচ রোডে মেট্রোর কাজের জন্য ব্যারিকেড করে রাখা হয়েছে। তিন মাসের বেশি সময় ধরে সেখানে কাজ চলছে। এতে যান চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে।

বেলেঘাটা মেট্রো স্টেশনের কাজের জন্য যুগ্ম বৈঠকে পরিদর্শনের পর কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশের তরফে মেট্রো কর্তৃপক্ষকে কিছু পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল বলে জানিয়েছে লালবাজার। কিন্তু সেই কাজ এখনও মেট্রো করে উঠতে পারেনি বলে অভিযোগ।

লালবাজারের বক্তব্য, চিংড়িহাটা এবং মেট্রোপলিটানের মাঝে মেট্রোর যে কাজ বাকি রয়েছে, তার জন্য আদৌ যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ বা রাস্তা আটকানোর প্রয়োজন নেই। যান চলাচলের মুখ ঘুরিয়ে দিলেই মেট্রোপলিটান ক্রসিংয়ে কাজ হয়ে যাবে।

শনিবার সকালে মেট্রোর তরফে অভিযোগ করা হয়, কমলা লাইনে বেলেঘাটা মেট্রো স্টেশনের কাজ থমকে রয়েছে। পুলিশের কাছে বার বার যান নিয়ন্ত্রণের অনুমতি চেয়ে চিঠি দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু অনুমতি মিলছে না। চিফ কমিশনার অফ রেলওয়ে সেফটি সম্প্রতি কমলা লাইনের কাজ খতিয়ে দেখেছেন। মৌখিক ভাবে তিনি জানিয়েছেন, বেলেঘাটা স্টেশনের কাছে যাত্রীদের সুবিধার্থে আরও ৯০ মিটার রাস্তা তৈরি করতে হবে। সেই কাজের জন্যই ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণ প্রয়োজন হবে। পুলিশের সঙ্গে বৈঠক করেও লাভ হয়নি বলে দাবি করেন কর্তৃপক্ষ। বিকেলে পাল্টা মেট্রোর বিরুদ্ধে গড়িমসির অভিযোগ আনল লালবাজার।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement