অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল ছবি।
পুরভোটের প্রচারের শেষ পর্বে ধামসার তালে তাঁর নাচ (যে ধামসা বাজিয়েছিলেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস) নেটমাধ্যমে ‘ভাইরাল’ হয়েছিল। পুরভোটের প্রচারে আগাগোড়া রঙিন থেকেছেন তিনি। সম্ভবত সেই কারণেই প্রচারে বেরিয়ে কোভিডবিধি ভাঙারও অভিযোগ উঠেছিল প্রাক্তন অভিনেত্রী তথা তৃণমূল প্রার্থী অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে। সুসজ্জিত ট্যাবলো আর মিছিল নিয়ে ১০৯ নম্বর ওয়ার্ডে অনন্যার প্রচার নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিল বিরোধীরা।
কিন্তু তাতে তাঁর জয় আটকাল না। নিজের ওয়ার্ড থেকে ৩৭ হাজারেরও বেশি ভোটে (ওই ওয়ার্ডে মোট ভোট ৪২ হাজারের কিছু কম-বেশি) জিতেছেন তৃণমূলের এই প্রার্থী। প্রতিপক্ষ তাঁর সামনে দাঁড়াতেই পারেনি। বস্তুত, মঙ্গলবার পুরভোটের ফলাফলে অনন্যার এই বিপুল জয়ের পর তাঁর হিতৈষীরা মনে করছেন, আগামী বিধানসভা ভোটে তৃণমূলের মনোনয়ন পাওয়ার দিকে সম্ভবত আরও একধাপ এগিয়ে গেলেন পুরভোটে পর পর দু’বার জয়ী এই কাউন্সিলার।
একদা সিপিএমের ‘শক্ত দুর্গ’ বলে পরিচিত পূর্ব যাদবপুরের ওই এলাকায় ২০১৫ সালের পুরভোটে অনন্যাকে প্রার্থী করেছিল তৃণমূল। সে বার ত্রিমুখী লড়াইয়ে অনন্যার বিরুদ্ধে বিজেপি-র প্রার্থী ছিলেন আর এক অভিনেত্রী দেবিকা মুখোপাধ্যায়। কিন্তু দেবিকাকে হারিয়ে পুরসভায় যান অনন্যা। তার পর থেকে দলে তাঁর গুরুত্ব বেড়েছে।
একদা কলকাতা সুন্দরীর খেতাবজয়ী এবং প্রাক্তন বিমানসেবিকা অনন্যা ২০১১ সালের আগে থেকেই রাজনীতিতে আসার চেষ্টা করছিলেন। ২০১১ সালের ‘পরিবর্তন’-এর ভোটের আগে তিনি তৃণমূলের সর্বময় নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করাও চেষ্টা করেছিলেন। তবে তখনও তিনি সক্রিয় রাজনীতিতে আসেননি। তৃণমূল ক্ষমতা আসার পরে তাঁকে মহিলা তৃণমূল কংগ্রেসে নিয়ে আসা হয়। সেখান থেকেই তাঁর রাজনীতির যাত্রা শুরু। অনন্যার প্রথম ভোটই কাউন্সিলার পদে। প্রথম বারেই জয়ী।
ঘটনাচক্রে, অনন্যার তৎকালীন স্বামী অভিনেতা জয় বন্দ্যোপাধ্যায় ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটে বিজেপি-র প্রার্থী হয়েছিলেন। যদিও পুরভোটের প্রার্থী হয়ে অনন্যা দাবি করেছিলেন, তৃণমূলনেত্রী মমতাই তাঁর বরাবরের আদর্শ। পর পর দু’বার কাউন্সিলার পদে জয়ের পর এ বার অনন্যা ২০২৬ সালের বিধানসভা ভোটেও টিকিটের দাবিদার হতে পারেন বলে তাঁর ঘনিষ্ঠেরা মনে করছেন।