পর পর দু’বার। এ বারও কলকাতা পুরসভা বিরোধী দলনেতা শূন্য থাকার সম্ভাবনা। প্রাপ্ত আসনের অঙ্কে বাম, কংগ্রেস এবং বিজেপি— বিরোধী কোনও দলই ন্যূনতম শর্ত ছুঁতে পারেনি। তার জেরেই এই সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
বিরোধী দলনেতা হওয়ার ন্যূনতম শর্ত কী? পুর আইন অনুযায়ী, কলকাতা পুরসভায় প্রধান বিরোধী দলের মর্যাদা আদায় করতে মোট আসনের ১০ শতাংশ পেতে হবে। অর্থাৎ কমপক্ষে ১৫টি আসন পেতে হত। কিন্তু এ বার কলকাতা পুরসভার ১৪৪টি আসনের মধ্যে তৃণমূলের দখলে ১৩৪টি আসন। বিরোধী দলগুলির মধ্যে সর্বোচ্চ আসন পেয়েছে বিজেপি, তিনটি। বাম এবং কংগ্রেস পেয়েছে দু’টি করে আসন। ফলে প্রতিটি বিরোধী দলই ন্যূনতম শর্ত থেকে থেমেছে অনেকটা আগে। এ ছাড়া তিন নিদল প্রার্থীও জিতেছেন এ বার। তবে তাঁদের তৃণমূলে যোগ দেওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। ফলে নিয়মমাফিক কোনও দলেরই প্রধান বিরোধী দলের মর্যাদা পাওয়ার কথা নয়।
২০১৫ সালে কলকাতা পুরভোটে তৃণমূল পেয়েছিল ১১৪টি আসন। এ ছাড়া বামেদের দখলে ছিল ১৫, বিজেপি সাত এবং কংগ্রেসের হাতে ছিল পাঁচটি আসন। তবে গত বারও বামফ্রন্টকে বিরোধী দলের মর্যাদা দেওয়া হয়নি। গত বার পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কেন্দ্র বেহালা পশ্চিমের ১২৮ নম্বর ওয়ার্ড থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন রত্না রায় মজুমদার। এ বার অবশ্য তিনি হেরেছেন। রত্না বলছেন, ‘‘আমাকে বামফ্রন্টের তরফে বিরোধী দলনেত্রী করার আবেদন করা হয়েছিল। সে বার সিপিএম ন’টি আসন পেয়েছিল। কিন্তু শাসকের যুক্তি ছিল একক ভাবে কোনও দল ন্যূনতম শর্ত ছুঁতে পারেনি। তাই বিরোধী দলনেতার মর্যাদা দেওয়া হয়নি। কিন্তু যদি কোনও নির্বার্চন পূর্ববর্তী জোট জেতে তা হলেও তাকে বিরোধী দলের মর্যাদা দিতে হয়। এটা শাসক শিবির মানেনি।’’
এই বিষয়ে বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের মন্তব্য, ‘‘আমরা সর্বোচ্চ আসন নিয়ে বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করব। সরকারি ভাবে হয়তো হবে না, কারণ যে শতাংশ আসন পাওয়ার কথা ছিল সেটা ছাপ্পা ভোটের ফলে পাওয়া সম্ভব হয়নি। তবে আমরা আমাদের মতো বিরোধিতা করব। শুধু কলকাতা কর্পোরেশন নয়, বিরোধিতা করার জায়গা হিসাবে রাস্তা আছে, পাশে জনগণ আছে।’’