প্রতীকী ছবি।
সাত মাস আগে শহরের ১৭টি বিধানসভা আসনের সবগুলিই জিতে নিয়েছে তারা। আড়াই বছর আগের লোকসভা ভোটেও শহরে তাদের নিরঙ্কুশ আধিপত্য ছিল। প্রাক নির্বাচনী জনমত সমীক্ষা বলছে, এ বারও বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ছোট লালবাড়ি দখল করতে চলেছে তৃণমূল। এই আবহেই রবিবার সকাল ৭টা থেকে শুরু হতে চলেছে কলকাতা পুরসভার ১৪৪টি ওয়ার্ডে ভোটগ্রহণ। চলবে বিকেল ৫টা পর্যন্ত।
কলকাতা পুরসভার ১৬টি বরোর অন্তর্গত ১৪৪টি ওয়ার্ডে এ বার মোট প্রার্থীর সংখ্যা ৯৫০। সবচেয়ে বেশি প্রার্থী রয়েছেন ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডে, ১৬ জন। সবচেয়ে কম ১৪২ নম্বরে, ৩ জন। শহরের ৪,৯৫৯টি ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে মোট ভোটারের সংখ্যা ৪০ লক্ষ ৪৮ হাজার ৩৫৭। ৬৬ নম্বর ওয়ার্ডে সবচেয়ে বেশি, ৯৫ হাজার ৩৮ জন ভোটার রয়েছেন। ৮৭ নম্বর ওয়ার্ডে ভোটারের সংখ্যা সবচেয়ে কম, ১০ হাজার ৩৩।
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
কলকাতা হাই কোর্টের অন্তর্বর্তী নির্দেশ মেনে কেন্দ্রীয় বাহিনী ছাড়াই এ বার হচ্ছে পুরভোট। যদিও রাজ্য নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, নিরাপত্তার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা করা হয়েছে। কলকাতা ও পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের পাশাপাশি রাজ্যের সশস্ত্র বাহিনীগুলিও থাকছে নিরাপত্তার দায়িত্বে। কলকাতার পুরভোট সামলাতে থাকছেন নিরাপত্তা বাহিনীগুলির ২৩ হাজার অফিসার এবং জওয়ান। এঁদের মধ্যে সশস্ত্র বাহিনীরগুলিরই প্রায় ১১ হাজার জন। ভোটের দিন গোলমালের সম্ভাবনা এবং অতীত ‘নজির’ খতিয়ে দেখে ১,১৩৯টি বুথকে ‘স্পর্শকাতর’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে কমিশন।
২০১৫ সালের পুরভোটে তৃণমূল ১১৪টি ওয়ার্ডে জিতেছিল। বামেরা ১৫, বিজেপি ৭, কংগ্রেস ৫ এবং অন্যেরা ৩টিতে। পরে অবশ্য বিরোধী অনেক কাউন্সিলরই শাসক শিবিরে যোগ দিয়েছিলেন। এ বার এবিপি আনন্দ-সি ভোটারের জনমত সমীক্ষার ফল পূর্বাভাস দিয়েছে, কলকাতার ১৪৪টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৩০টিতে জয়ী হয়ে পুরসভার ক্ষমতায় ফিরতে পারে শাসক দল। বাকি ১৪টির মধ্যে ১৩টি বিজেপি এবং একটি বামেদের দখলে যেতে পারে। সমীক্ষার ইঙ্গিত অনুযায়ী, কলকাতায় তৃণমূল পেতে পারে ৫২ শতাংশ ভোট। বিরোধীদের মধ্যে বিজেপি ২৪ শতাংশ, বামেরা ৯ শতাংশ এবং কংগ্রেস ৩ শতাংশ ভোট পেতে পারে। ১৬টি বরোর সবগুলিই দখল করতে পারে রাজ্যের শাসক দল।
এটা ঠিক যে, এ ধরনের নমুনা জনমত সমীক্ষায় সব সময় বাস্তবের প্রতিফলন ঘটে না। কিন্তু ইভিএম খোলার পরে সমীক্ষার ফল মিলে যাওয়ার উদাহরণও রয়েছে। সামগ্রিক ভাবে রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং ভোটারদের ভাবনার আভাস পেতেও এই ধরনের সমীক্ষার গুরুত্ব রয়েছে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অনেকেই মনে করেন। তা ছাড়া নীলবাড়ির লড়াই রাজ্যের রাজধানী শহরে তৃণমূলের ফলের দিকে নজরে রাখলে কার্যত পুরভোটের জনমত সমীক্ষারই প্রতিচ্ছবি দেখা যাবে। তবে আসল ফল জানতে অপেক্ষা করতে হবে আগামী মঙ্গলবারের (২১ ডিসেম্বর) গণনা পর্যন্ত।
নীলবাড়ির লড়াই এবং পরবর্তী ভবানীপুর উপনির্বাচনের ফল অনুযায়ী তৃণমূল এগিয়ে ১৩৩টি ওয়ার্ডে এগিয়ে। মে মাসের বিধানসভা ভোটে বিজেপি ১২টি ওয়ার্ডে এগিয়ে থাকলেও ভবানীপুরের উপনির্বাচনের পর কলকাতার পুর এলাকার গেরুয়া শিবিরের ‘লিড’ কমে দাঁড়িয়েছে ১০টি। এ ছাড়া বিধানসভা ভোটের হিসেবে বাম-কংগ্রেস জোটের প্রার্থী ১টি ওয়ার্ডে এগিয়ে ছিলেন। এ বার অবশ্য অধিকাংশ ওয়ার্ডেই পরস্পরের বিরুদ্ধে লড়ছেন বাম এবং কংগ্রেস প্রার্থীরা।