শহরের এমন পুকুর পরিষ্কার রাখতেই উদ্যোগী পুরসভা। ফাইল চিত্র
ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়া-সহ মশাবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে এ বার শহরের পুকুর এবং অন্য জলাশয়গুলিকে ‘পাখির চোখ’ করতে চলেছে কলকাতা পুরসভা। ব্যক্তিগত মালিকানাধীন এবং পুরসভার অধীন সমস্ত পুকুর, জলাশয় যাতে পরিচ্ছন্ন থাকে, সে কারণে বিশেষ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে চলেছেন পুর কর্তৃপক্ষ।
ব্যক্তিগত মালিকানাধীন পুকুর অপরিষ্কার হয়ে পড়ে থাকলে তার মালিককে নোটিস ধরানো হবে বলে জানিয়েছে পুরসভা। কিন্তু তিনি পুকুর পরিষ্কারে আগ্রহী না হলে পুরসভার তরফেই সে কাজ করে দেওয়া হবে। সে ক্ষেত্রে পরিষ্কারের খরচ বহন করতে হবে সংশ্লিষ্ট মালিককে। সারা শহর জুড়েই এমন অপরিষ্কার পুকুর চিহ্নিত করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে পুরসভার ‘পরিবেশ ও ঐতিহ্য’ দফতরকে। পুরসভার আওতাধীন সব পুকুর, জলাশয়ও একই ভাবে পরিষ্কার করা হবে। এক পুরকর্তার কথায়, ‘‘শহরের অনেক ব্যক্তিগত মালিকানাধীন পুকুর, জলাশয়ই মশার আঁতুড় হয়ে রয়েছে। সেগুলি নিয়মিত পরিষ্কার না করলে ডেঙ্গির আশঙ্কা থেকেই যাবে।’’ পুরসভা সূত্রের খবর, একইসঙ্গে পুকুর ভরাটের উপরেও নজরদারি চালানো হবে।
প্রসঙ্গত, ফাঁকা জমি থাকলেও সেখানে জঞ্জাল, আবর্জনা জমতে থাকে। এ সব ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, বেশির ভাগ জমির মালিকই অন্যত্র থাকেন। তখন মালিককে নোটিস পাঠিয়ে বা তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করে সেই জমি পরিষ্কারের ব্যবস্থা করে পুরসভা। সেই খরচ জমির মালিকের থেকে নেওয়া হয় বা সম্পত্তিকরের সঙ্গে যোগ করে দেওয়া হয়। ব্যক্তিগত মালিকানাধীন ফাঁকা জমির ওই নিয়মই এ বার অপরিষ্কার পুকুর, জলাশয়ের ক্ষেত্রেও আরোপ করতে চলেছে কলকাতা পুরসভা।
পতঙ্গবিদদের মতে, অপরিষ্কার পুকুর বা জলাশয়ে সহায়ক পরিবেশ তৈরি হলে সেখানেও ডেঙ্গির জীবাণুবহনকারী এডিস ইজিপ্টাই বা ম্যালেরিয়ার জীবাণুবহনকারী অ্যানোফিলিস বংশবিস্তার করে থাকে। পতঙ্গবিদ গৌতম চন্দ্র বলেন, ‘‘পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, নোংরার আস্তরণ যখন নীচে থিতিয়ে পড়ে তখন উপরিভাগে স্বচ্ছ জলের একটা স্তর তৈরি হয়। সে জলে কোনও তরঙ্গ যদি না থাকে, সেখানে এডিস বা অ্যানোফিলিস মশা বংশবিস্তার করে।’’ তা ছাড়া পুকুরে ভাসমান প্লাস্টিকের কাপ বা থার্মোকলের পাত্রে বৃষ্টির জল জমেও তা থেকে ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়া ছড়াতে পারে বলে জানাচ্ছেন পতঙ্গবিদেরা।