চলছে ভাসমান বাজারের নৌকার মেরামতি। পাটুলি বাজারের কাছে। ছবি: দেশকল্যাণ চৌধুরী
পাটুলির ভাসমান বাজারে নতুন করে তৈরি করা নৌকায় এক টনের বেশি জিনিসপত্র রাখা যাবে না বলে নির্দেশিকা জারি করতে চলেছেন কর্তৃপক্ষ। নবনির্মিত ওই নৌকাগুলির ভারসাম্য বজায় রাখতেই জিনিসপত্রের ওজন বেঁধে দেওয়ার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেএমডিএ।
কেএমডিএ-র নতুন নির্দেশিকায়, ভাসমান বাজারে বিক্রি করার জন্য চাল-ডাল, চিনি, নুনের বস্তার ওজন হতে হবে সর্বাধিক ১০০ কিলোগ্রাম। ডাবের বস্তার ওজনও হতে হবে ৫০ থেকে ১০০ কিলোগ্রামের মধ্যে। বাইরে থেকে আনা আনাজ বা অন্যান্য সামগ্রীর মোট ওজনও হতে হবে ৫০ কিলোগ্রামের মধ্যে। অর্থাৎ, একটি নৌকায় রাখা জিনিসপত্রের মোট ওজন কোনও ভাবেই এক টনের বেশি হবে না।
কেএমডিএ সূত্রের খবর, প্রায় তিন বছর আগে ওই ভাসমান বাজার তৈরি হওয়ার কিছু দিনের মধ্যেই বেশির ভাগ নৌকা নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। বিশেষজ্ঞদের নিয়ে তৈরি একটি কমিটি পরীক্ষা করে জানিয়েছিল, সর্বক্ষণ জলে থাকায় নৌকাগুলির কাঠ পচে গিয়েছে। এমনকি, সেই কারণে কয়েকটি নৌকা জলে ডুবেও যায়। বর্তমানে ওই বাজারের ১০২টি নৌকার খোলনলচে পাল্টে ফেলে ফের নতুন করে তৈরি করা হচ্ছে। কিন্তু এক-একটি নৌকার নিজস্ব ওজনের চেয়ে বেশি ওজনের
মালপত্র তাতে তোলা হলে সেটি ডুবে যাওয়ার আশঙ্কা থাকছে। তাই এ বার নৌকায় বিক্রয়যোগ্য জিনিস রাখার পরিমাণ নির্ধারণ করে দিচ্ছেন কর্তৃপক্ষ। এক আধিকারিক জানিয়েছেন, কিছু দিনের মধ্যেই ভাসমান বাজারের বিক্রেতাদের কাছে ওই নির্দেশিকা পাঠানো হবে। জিনিসের ওজন বেঁধে দেওয়া ছাড়াও সেখানে কোনও ভাবেই আর প্লাস্টিকের ব্যবহার করা যাবে না, তা-ও জানিয়ে দেবে কেএমডিএ।
কেএমডিএ সূত্রের খবর, নবনির্মিত নৌকাগুলির এক একটির ওজন দু’টন। এ বার জলের মধ্যেই লোহার পাটাতন তৈরি করে তার উপরে রাখা হচ্ছে ওই নৌকাগুলি। এর পরে যাতে সেই নৌকায় আরও এক টন ওজনের জিনিসপত্র রাখা যায়, সে ভাবেই সেগুলি তৈরি করা হচ্ছে। এর চেয়ে বেশি ভারী হয়ে গেলে ওই লোহার কাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে জানাচ্ছেন কেএমডিএ-র আধিকারিক।
ওজন নিয়ে কেএমডিএ-র সিদ্ধান্তকে সমর্থন করছেন ভাসমান বাজারের বিক্রেতাদের অনেকেই। গোপাল সিংহ নামে এক বিক্রেতা জানাচ্ছেন, এর আগে অনেক সময়ে এক একটি নৌকায় তোলা জিনিসপত্রের মোট ওজন তিন-চার টন পর্যন্ত হয়ে যেত। গোপালবাবু বলেন, ‘‘আগেও অনেক বার বিক্রেতাদের কেউ কেউ কাঠের নৌকার পাটাতনে বেশি মালপত্র রাখার বিরোধিতা করেছেন। তবে কর্তৃপক্ষ কোনও নির্দেশিকা না দেওয়ায় তা
মানা হয়নি।’’