— ফাইল চিত্র
নতুন নয়, বরং পুরনোকেই সংস্কার করে পুনর্ব্যবহারের পথে হাঁটছে কলকাতা পুরসভা। তাই পুরসভার সেন্ট্রাল স্টোরে পড়ে থাকা জঞ্জাল অপসারণ দফতরের হাতে-টানা পুরনো গাড়িগুলিকে ‘পরিত্যক্ত’ বলে দেগে দিয়ে বিক্রি না করে সেগুলিকেই মেরামত করে ফের পথে নামাতে চাইছেন পুর কর্তৃপক্ষ। ইতিমধ্যে জঞ্জাল অপসারণের জন্য ২০০টি হাতে-টানা গাড়িকে সংস্কার করে ফের পথে নামানোও হয়েছে। এ ভাবে পুনর্ব্যবহার করে কয়েক লক্ষ টাকা বাঁচানো সম্ভব হয়েছে বলেও দাবি কর্তৃপক্ষের।
পুর প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য এবং সেন্ট্রাল স্টোরের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রাক্তন মেয়র পারিষদ তারক সিংহ বলেন, “কিছু সামগ্রী পরিত্যক্ত হিসেবে পুরসভার সেন্ট্রাল স্টোরে রেখে দেওয়া হয়। পরে তা জলের দরে বিক্রি করে নতুন সামগ্রী কিনতে হয়। তাতে বিপুল খরচ হয়। সেই খরচে রাশ টানতেই এই সিদ্ধান্ত।’’ তিনি জানাচ্ছেন, আপাতত জঞ্জাল দফতরের ২০০টি পরিত্যক্ত গাড়িকে ফের ব্যবহারযোগ্য করে তোলা হয়েছে।
পুরসভা সূত্রের খবর, পুরসভার ১৬টি বরোয় জঞ্জাল সাফাইয়ের জন্য ব্যবহৃত ছোট ছোট হাতে-টানা গাড়িগুলি খারাপ হয়ে গেলে সেন্ট্রাল স্টোরে রেখে দেওয়া হয়। পরে বিক্রি করা হয়। পরবর্তীকালে দরপত্র আহ্বান করে ফের জঞ্জাল অপসারণের গাড়ি কিনতে হয়। গত ছ’মাসে পুরসভার সেন্ট্রাল স্টোরে থাকা ২০০টিরও বেশি হাতে-টানা গাড়িকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু প্রতিটি গাড়ির জন্য একটি নতুন গাড়ি কিনতে গেলে পাঁচ হাজার টাকা করে খরচ পড়বে। অথচ পুরনো গাড়িকেই মেরামত করার খরচ মাত্র ২০০০ টাকা। ফলে জঞ্জাল অপসারণের জন্য ২০০টি হাতে-টানা গাড়িকে পুনর্ব্যবহারযোগ্য করে তোলায় পুরসভার প্রায় ছ’লক্ষ টাকা সাশ্রয় হয়েছে বলে দাবি!
পুরসভার জঞ্জাল অপসারণ দফতর রাস্তা সাফাইয়ের জন্য আধুনিক হাইড্রলিক মেশিন-সহ গাড়ি এনেছে। রয়েছে ব্যাটারিচালিত গাড়িও। এর পরেও জঞ্জাল অপসারণের জন্য হাতে-টানা গাড়ির প্রয়োজন কোথায়, সেই প্রশ্ন উঠেছিল পুরসভায়। জঞ্জাল দফতরের এক আধিকারিক জানাচ্ছেন, শহর জঞ্জালমুক্ত
করতে যে পরিমাণ আধুনিক গাড়ির প্রয়োজন, তা পুরসভার হাতে নেই। আর তাই ছোট ছোট হাতে-টানা গাড়ির উপরেও নির্ভর করতে হয়। তা ছাড়া বড় হাইড্রলিক গাড়ি শহরের অলিগলিতে ঢুকতে পারে না, ফলে সেখানেও আবর্জনা সরাতে ভরসা সেই হাতে-টানা গাড়িই।
জঞ্জাল দফতর সূত্রের খবর, পুরসভার সাফাইকর্মীর সংখ্যা প্রায় ১৫ হাজার। হাতে-টানা ছোট গাড়ির সংখ্যা প্রায় ন’হাজার। আধুনিক হাইড্রলিক যন্ত্রওয়ালা গাড়ি এবং ব্যাটারিচালিত গাড়ির মোট সংখ্যা প্রায় ৭০০টি। এ ছাড়াও রয়েছে প্রায় ৮০০টি তিন চাকার জঞ্জাল পরিষ্কারের সাইকেল। ফলে শহরকে আবর্জনামুক্ত করতে ছোট হাতে-টানা গাড়ির প্রয়োজনীয়তা এখনও রয়েই গিয়েছে।