শুভেন্দু অধিকারী। ছবি: সংগৃহীত।
কলকাতায় পুরভোটের দিন কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে দু’বার পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়ালেন শুভেন্দু অধিকারী। প্রথম বার রবিবার বিকেলে। ভোটগ্রহণ চলাকালীন তাঁর সল্টলেকের বাড়ির বাইরে হঠাৎ সশস্ত্র পুলিশ বাহিনী মোতায়েন নিয়ে। দ্বিতীয় বার রাতে। পুরভোটে কারচুপির অভিযোগ জানাতে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের দফতরে ঢুকতে গিয়ে বাধার মুখে পড়ে।
শুভেন্দুদের আসার খবর পেয়েই কমিশনের দফতরের সামনে পুলিশি নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছিল। রাজভবন থেকে বেরিয়ে কমিশনের দফতরে যান শুভেন্দু-সহ বিজেপি নেতারা। তাঁরা দফতরে ঢুকতে গেলে বাধা দেয় পুলিশ। এ সময় পুলিশ আধিকারিকদের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়ে শুভেন্দু। তিনি বলেন, ‘‘নির্বাচন কমিশনার দফতরে রয়েছেন, তা হলে কেন দেখা করতে দেওয়া হবে না।’’ পুলিশের তরফে বিরোধী দলনেতাকে জানানো হয় তিন জনকে নিয়ে তিনি দফতরে ঢুকতে পারবেন।
রবিবার সন্ধ্যায় রাজভবনে গিয়ে কারচুপি এবং সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে গোটা ভোটপর্ব বাতিল করে পুনর্নির্বাচনের দাবি জানান শুভেন্দু। একই দাবি জানিয়েছেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনের কাছেও। কমিশনের দফতর থেকে বেরিয়ে তিনি বলেন, ‘‘নির্বাচন কমিশনারকে বলেছি এই সাংবিধানিক ‘বডি’ (প্রতিষ্ঠান)-র অস্তিত্ব, সম্মান, মর্যাদা, গরিমা আপনি ধুলোয় মিশিয়ে দিয়েছেন।’’ তাঁর মন্তব্য, ‘‘আপনি শুধু জেড প্লাস নিরাপত্তাধারীকে বুথের ভিতর ঢোকার অনুমিত দিয়েছেন পিসি-ভাইপোর (মমতা এবং অভিষেক) জন্য। মহামান্য রাজ্যপালকে পর্যন্ত নিরাপত্তা ছাড়া বুথে যেতে হয়েছে। এটা বাংলার লজ্জা।’’
কমিশনের দফতরের সামনে পুলিশ তাঁকে ও বিজেপি-র অন্য প্রতিনিধিদের ধাক্কা দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন শুভেন্দু অধিকারী। সেই ধাক্কাধাক্কির ভিডিয়ো এবং যে পুলিশ আধিকারিক ধাক্কা দিয়েছেন তাঁর ছবিও দিয়ে টুইট করেছেন বিরোধী দলনেতা।
ভোটে কারচুপির অভিযোগ তুলে নির্বাচন কমিশনারের উদ্দেশে শুভেন্দু বলেন, ‘‘আপনি ২৫ শতাংশ বুথে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগাতে চেয়েছিলেন। মহামান্য কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে আপনাকে ৬ ,০০০ সিসিটিভি ক্যামেরা লাগাতে হয়েছে। আমরা বলেছি, আপনাকে কিচ্ছু করতে হবে না। শুধু সিসিটিভি-র অডিটটা করুন কোনও কেন্দ্রীয় ফরেন্সিক ল্যাব বা সংস্থাকে দিয়ে। তা হলেই পরিষ্কার হয়ে যাবে তৃণমূল কতটা দুধে কতটা জল মিশিয়েছে।’’
পুরভোটে নির্বাচনবিধি ভঙ্গের অভিযোগ তুলে শুভেন্দুর দাবি, নিয়ম অনুযায়ী ছ’মাসের মধ্যে কোনও ভোট হয়ে থাকলে অন্য আঙুলে কালি লাগাতে হয়। কিন্তু ভবানীপুর উপনির্বাচনের পর ছ’মাস অতিক্রান্ত না হলেও পুরভোটে একই আঙুলে কালি লাগানো হয়েছে। বিজেপি নেতার দাবি, নির্বাচন কমিশন শেষ মুহূর্তে পোলিং এজেন্ট হওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট বুথের ভোটার হওয়া বাধ্যতামূলক বলে জানায়। এর ফলে অর্ধেক বুথে বিরোধীরা এজেন্ট দিতে পারেনি। অন্য এজেন্টদের অনেককে মারধর করে, ভয় দেখিয়ে বার করে দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ করেন তিনি।