KMC Polls 2021

KMC Polls 2021: আনুষ্ঠানিক ভাবে নয়, কলকাতা পুরভোটে বাম-কংগ্রেসের ‘অলিখিত’ জোট অন্তত ৩৩ ওয়ার্ডে

বিধানসভা নির্বাচনে জোট গড়ে লড়ে বিপর্যয়ের পরে কলকাতা পুরভোটে নিজেদের শক্তিতে লড়াই করে পরীক্ষার রাস্তায় হাঁটতে চেয়েছে বাম ও কংগ্রেস।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০২১ ০৬:৪৩
Share:

ছবি: সংগৃহীত।

আনুষ্ঠানিক ভাবে এ বার কোনও জোট নেই। কিন্তু কলকাতায় তার মধ্যেও বাম ও কংগ্রেসের ‘অলিখিত’ জোট থাকছে অন্তত ৩৩টি ওয়ার্ডে। আবার এমন দু’টি ওয়ার্ডও থাকছে, যেখানে বামফ্রন্ট বা কংগ্রেস কোনও পক্ষেরই প্রার্থী নেই! ফলে, সেই দু’টি জায়গায় তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে বিজেপির সরাসরি লড়াই হবে।

Advertisement

বিধানসভা নির্বাচনে জোট গড়ে লড়ে বিপর্যয়ের পরে কলকাতা পুরসভার ভোটে নিজেদের শক্তিতে লড়াই করে পরীক্ষার রাস্তায় হাঁটতে চেয়েছে বাম ও কংগ্রেস, দু’পক্ষই। কিন্তু কোনও শিবিরই কলকাতার মোট ১৪৪টি ওয়ার্ডের সবক’টিতে প্রার্থী দেয়নি। পৃথক ভাবে ঘোষিত তালিকা অনুযায়ী, কংগ্রেস প্রার্থী ঘোষণা করেছে ১২৫টি ওয়ার্ডে। আর বামফ্রন্ট প্রার্থী দিয়েছে ১২৮টি ওয়ার্ডে। কংগ্রেসের প্রার্থী নেই ১৯টি ওয়ার্ডে, বামেদের ১৬টিতে। কিন্তু দক্ষিণের ১৩৪ ও ১৪২ নম্বর ওয়ার্ডে আবার এই দু’পক্ষের কেউই প্রার্থী দিতে পারেনি। ওই দু’টি ওয়ার্ড বাদ দিলে ৩৩টি ওয়ার্ড এমন থাকছে, যেখানে বাম ও কংগ্রেসের মধ্যে ‘অলিখিত’ সমঝোতা হচ্ছে। যেখানে বামেদের প্রার্থী নেই, সেখানে তারা কংগ্রেসকে সমর্থন করবে। আর যেখানে কংগ্রেস নেই, সেখানে তারা বামেদের পাশে থাকবে।

তবে রাজ্য নির্বাচন কমিশন সূত্রের তথ্য বলছে, কংগ্রেস ১২৫ ওয়ার্ডের জন্য প্রার্থী দিলেও আইনি কারণে দু’টি ওয়ার্ডের প্রার্থীদের মনোনয়ন বাতিল হয়েছে। অর্থাৎ ওই দু’টি ওয়ার্ডকে হিসেবে ধরলে ‘অলিখিত’ জোটের এলাকা আরও বাড়বে! মনোনয়ন প্রত্যাহার-পর্বের পরে কমিশনের চূড়ান্ত তথ্য সামনে এলে এই চিত্র আরও পরিষ্কার হবে।

Advertisement

আগে থেকে ঘোষণা না করলেও যে সব ওয়ার্ডে বাম ও কংগ্রেসের সমঝোতা হচ্ছে, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ৪৫, ১১০ নম্বরের মতো ওয়ার্ড থাকছে। চৌরঙ্গি বিধানসভা এলাকার ৪৫ নম্বর ওয়ার্ডে কংগ্রেসের তিন বারের কাউন্সিলর সন্তোষ পাঠকের বিরুদ্ধে বামেরা প্রার্থী দেয়নি। তেমনই আবার টালিগঞ্জ বিধানসভা এলাকার সিপিএমের পরিচিত কাউন্সিলর চয়ন ভট্টাচার্যের ১১১ নম্বর ওয়ার্ডে কংগ্রেসের প্রার্থী নেই। গত পুরসভায় সর্বোচ্চ ব্যবধানে জয়ী কংগ্রেসের কাউন্সিলর প্রকাশ উপাধ্যায়ের ২৯ নম্বর ওয়ার্ডেও সিপিএম প্রার্থী দিতে চায়নি। কিন্তু বাম শরিক ফরওয়ার্ড ব্লক সেখানে প্রার্থী দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। উল্টো দিকে, বিদায়ী পুরবোর্ডে বামেদের দলনেত্রী রত্না রায় মজুমদারের ১২৮ নম্বর ওয়ার্ডে কংগ্রেসের প্রার্থী আছে।

নিজেদের শক্তি যাচাইয়ের পথে গেলেও তারা যে সমঝোতার দরজা পুররোপুরি বন্ধ করতে চায় না, তার ইঙ্গিত মিলছে দু’পক্ষের নেতৃত্বের মনোভাবেই। সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর কথায়, ‘‘যেখানে আমাদের প্রার্থী নেই, সেখানে তৃণমূল ও বিজেপির বিরুদ্ধে কংগ্রেস বা অন্য কোনও পক্ষের উল্লেখযোগ্য প্রার্থী যিনি থাকবেন, তাঁকে সমর্থন করা হবে।’’ একই সুর পুরভোটের জন্য প্রদেশ কংগ্রেসের পর্যবেক্ষক কমিটির চেয়ারম্যান নেপাল মাহাতোর। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমাদের লক্ষ্য, তৃণমূল ও বিজেপির বিরোধিতা। যেখানে কংগ্রেসের প্রার্থী নেই, সেখানে ওই দুই দলের বিরুদ্ধে থাকা শক্তিকেই আমরা সমর্থন করব।’’ কংগ্রেস যেখানে অনুপস্থিত, সেখানে এমন শক্তির মধ্যে বামেরাই যে অগ্রগণ্য, তা-ও বুঝিয়ে দিয়েছেন নেপালবাবু।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement