কিডনি প্রতিস্থাপনে আধুনিক পদ্ধতিতে অপারেশন করবেন ডাক্তাররা। প্রতীকী চিত্র।
পুরো পেট কেটে নয়। কয়েক ইঞ্চি ফুটো করেই কিডনির প্রতিস্থাপন করা সম্ভব। এমনই রোবোটিক সার্জারি এ বার শুরু করল ইএম বাইপাসের একটি বেসরকারি হাসপাতাল। চিকিৎসকদের দাবি, কিডনি প্রতিস্থাপনের প্রচলিত পদ্ধতির থেকে এই পদ্ধতিতে ঝুঁকি অনেক কম।
মঙ্গলবার এক বৈঠকে অ্যাপোলো মাল্টিস্পেশ্যালিটি হাসপাতালের চিকিৎসকেরা জানালেন, গত ছ’মাসে রোবোটিক সার্জারির মাধ্যমে তাঁরা চার জনের শরীরে কিডনি প্রতিস্থাপন করেছেন। ইউরোলজিস্ট ও রোবোটিক শল্য চিকিৎসক
বিনয় মহীন্দ্রা জানান, প্রচলিত পদ্ধতিতে তলপেটে আট-দশ ইঞ্চি কাটতে হয়। সেখানে রোবোটিক সার্জারিতে দু’-এক ইঞ্চি কাটলেই চলে। এবং পেটের ভিতরে রক্তনালিগুলিকে যুক্ত করতে কয়েকটি ছিদ্র করতে হয় মাত্র। পুরো পেট কেটে কিডনি প্রতিস্থাপনে ছুটি পেতে সাত-দশ দিন লাগে। রোবোটিক সার্জারিতে লাগে তিন থেকে পাঁচ দিন।
ইউরোলজিস্ট অমিত ঘোষ জানান, রোবোটিক কিডনি প্রতিস্থাপনে রক্তক্ষরণ, ব্যথা, অস্ত্রোপচার-পরবর্তী জটিলতা অনেক কম হয়। সংক্রমণের ঝুঁকিও কম। বৈঠকে উপস্থিত ওই হাসপাতালের চিকিৎসকদের দাবি, পূর্ব ভারতে তাঁরাই প্রথম রোবোটিক সার্জারিতে কিডনি প্রতিস্থাপন শুরু করেছেন।
যদিও প্রচলিত পদ্ধতির তুলনায় রোবট-নির্ভর এই অস্ত্রোপচারের খরচ কয়েক লক্ষ টাকা বেশি। অমিতবাবু বলেন, ‘‘যন্ত্রটির দাম অনেক। তবে আগামী দিনে যত বেশি রোগী এর সুবিধা নেবেন, চিকিৎসার খরচও তত কমবে। যত দূর জানি, সরকারও খুব শীঘ্রই রোবোটিক সার্জারি শুরু করবে।’’ সাত-আটটি দেশে তৈরি হচ্ছে রোবোটিক সার্জারির যন্ত্রটি। শহরে অ্যাপোলো ছাড়াও টাটা ক্যানসার, নারায়ণা, মেডিকা হাসপাতালে রয়েছে এই অস্ত্রোপচারের ব্যবস্থা। তবে চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, দেশেও এখন ওই যন্ত্র তৈরির প্রক্রিয়া প্রায় শেষ পর্যায়ে। এ দিনের বৈঠকে ছিলেন ওই হাসপাতালের চিকিৎসক সুরিন্দর সিংহ ভাটিয়া, ত্রিদিবেশ মণ্ডলও।