যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে মেহগনি গাছ কাটার বিষয়ে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করলেন কর্তৃপক্ষ। বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক আরও বেড়েছে। এই ঘটনার তদন্ত বিশ্ববিদ্যালয় কী ভাবে করছে, তা কর্তৃপক্ষকে জানানোর দাবি করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি (জুটা)।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মেটালার্জিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের কাছে একটি বড় মেহগনি গাছ কে বা কারা এপ্রিল মাসে কেটে ফেলেছে। গাছ কেটে কাঠও সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কয়েক দিন আগে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির (জুটা) সদস্যেরা উপাচার্য সুরঞ্জন দাসকে ক্যাম্পাসে লাগাতার চুরি-সহ বিভিন্ন বিষয়ে স্মারকলিপি দেন। সেই সময়ে মেহগনি গাছ কেটে লোপাট হয়ে যাওয়ার ঘটনারও উল্লেখ করেন। সেখানে উপস্থিত বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসুর অভিযোগ, জুটার প্রতিনিধিরা তাঁর উদ্দেশ্যে অপমানজনক মন্তব্য করেছেন। তাঁর বক্তব্য, বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। তার মধ্যে উপাচার্যের দফতরে শিক্ষকেরা গাছ কাটা নিয়ে কাটমানির প্রসঙ্গ তোলেন। বিষয়টি নিয়ে তিনি এতটাই অপমানিত বোধ করছেন যে ওই ঘটনার পরে পদত্যাগের ইচ্ছাও প্রকাশ করেছেন। বিষয়টি নিয়ে তৃণমূলের শিক্ষক সংগঠন ওয়েবকুপা রেজিস্ট্রারের পাশেই দাঁড়িয়েছে। উপাচার্যের কাছে জুটার সদস্যদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থার নেওয়ার দাবিও ওয়েবকুপা করেছে।
জুটার পক্ষ থেকে অবশ্য ‘কাটমানি’ শব্দ ব্যবহার করা হয়নি বলেই দাবি করা হয়েছে। শনিবার জুটার সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায় জানান, ‘‘মেহগনি গাছ কাটা নিয়ে যদি তদন্ত শুরু হয় তার পদ্ধতি আমাদের জানানো হোক।’’ তাঁর দাবি, এ রকম কোনও তদন্ত শুরু হয়েছে বলেই তাঁরা জানেন না। তদন্ত কমিটির সদস্য কারা? নিয়ম মাফিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মসমিতিতে এ নিয়ে কোনও আলোচনা হয়নি বলেই পার্থবাবুর দাবি। তিনি জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও পক্ষকে এ নিয়ে কিছু জানানো হয়নি। রেজিস্ট্রার এ দিন জানান তাঁর অসম্ভব কাজের চাপ। সহ রেজিস্ট্রার লিয়েনে অন্যত্র চলে যাওয়ায় তাঁর কাজের চাপ খুবই বেড়েছে। এস্টেট বিভাগ থেকে গাছ কাটার বিষয়টি তাঁকে জানানো হলে তিনি এস্টেট বিভাগকেই তদন্ত করতে দেন। এস্টেট বিভাগ বিষয়টির তদন্ত করেছে। তিনি বলেন, ‘‘এর পিছনে রহস্য রয়েছে বলেই তদন্ত করে এস্টেট বিভাগ আমায় জানিয়েছে। বিষয়টি সহ উপাচার্যকেও জানিয়ে দিয়েছিলাম।’’ তিনি জানান, এত বিতর্কের পরে আজ তিনি যাদবপুর থানায় গাছ কাটা নিয়ে এফআইআর করেছেন।