কলকাতা হাই কোর্টের বার অ্যাসোসিয়েশনকে দলীয় রাজনীতির বৃত্তের বাইরে রাখার পরামর্শ দিলেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত। আর সেই পরামর্শ সরাসরি দিলেন রাজ্যের আইনমন্ত্রী মলয় ঘটককেই। শুক্রবার হাই কোর্ট চত্বরেই বিচারপতি দত্তের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান ছিল। সেখানেই নিজের ভাষণের একেবারে শেষলগ্নে মঞ্চেই বসে থাকা মলয়ের উদ্দেশে এ কথা বলেন তিনি।
কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি হিসাবে কাজ সামলেছেন। তার পর পদোন্নতি দিয়ে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় বম্বে হাই কোর্টে। এত দিন বম্বে হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব পালনের পর সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি হিসাবে কাজে যোগ দিয়েছেন দীপঙ্কর দত্ত। সেই উপলক্ষে হাই কোর্টের বার অ্যাসোসিয়েশনের তরফ থেকে শুক্রবার হাই কোর্ট চত্বরে তাঁকে সংবর্ধনা জানানো হয়। সেখানেই রাজ্যের আইনমন্ত্রীকে বিচারপতি দত্ত বলেন, ‘‘দাদা, দেখবেন যদি বার অ্যাসোসিয়েশনকে দলগত রাজনীতির বাইরে রাখা যায়। সারা রাজ্য পড়ে রয়েছে ক্ষমতার রাজনীতির জন্য। যদি একান্তই রাজনীতি করতে হয় সেটা যেন আদর্শগত রাজনীতির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে।’’ সেই সময় মঞ্চেই বসেছিলেন আইনমন্ত্রী। বিচারপতির মুখে এ কথা শুনে তিনি সম্মতিসূচক ভাবে হাত তোলেন।
শুক্রবার বিচারপতি দত্তের সংবর্ধনা উপলক্ষে, আয়োজিত অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন কলকাতা হাই কোর্টের সদ্য প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব। ছিলেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম-সহ অন্যান্য বিচারপতি। রাজ্যের তাবড় আইনজীবীরাও হাজির ছিলেন। ভাষণের একটি বড় অংশ বাংলায় বলেন বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত। কলকাতা হাই কোর্টের সঙ্গে বম্বে হাই কোর্টের কর্ম সংস্কৃতিরও তুলনামূলক বিশ্লেষণ করেন তিনি। জানান নিজের আক্ষেপের কথাও।
প্রসঙ্গত, করোনাকালে বম্বে হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি হন তিনি। কিন্তু সে সময় বিমান ও রেল চলাচল বন্ধ থাকায় কী করে বম্বে পৌঁছবেন তা নিয়ে চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত নিজে গাড়ি চালিয়ে কলকাতা থেকে বম্বে হাই কোর্টে চলে যান বিচারপতি দত্ত। করোনার কড়াকড়ির কারণেই যে তাঁকে কলকাতা হাই কোর্ট বিদায় সংবর্ধনা দিতে পারেনি, সেই আক্ষেপের কথা উঠে আসে বিচারপতি দত্তের ভাষণে।