NCPCR

‘ছবি তোলা’ নিয়ে অশান্তি, তিলজলা থানায় জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশনের কর্তাকে ‘হেনস্থা’র অভিযোগ

জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান প্রিয়ঙ্ক কানুনগোর অভিযোগ, কেন্দ্রের দলের সঙ্গে নির্যাতিতার পরিবারের কথোপকথন লুকিয়ে রেকর্ড করার চেষ্টা করেছিল তিলজলা থানার পুলিশ।  

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ মার্চ ২০২৩ ১৯:৫৭
Share:

তিলজলাকাণ্ডে পুলিশের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশনের। — নিজস্ব চিত্র।

সকালে জাতীয় এবং রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশনের মুখোমখি দ্বন্দ্ব মিটেছিল তিলজলা থানার পুলিশের হস্তক্ষেপে। বিকেলে সেই পুলিশের সঙ্গেই গোলমালে জড়ালেন জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান প্রিয়ঙ্ক কানুনগো। প্রিয়ঙ্কের অভিযোগ, কেন্দ্রের দলের সঙ্গে নির্যাতিতার পরিবারের কথোপকথন লুকিয়ে রেকর্ড করেছে তিলজলা থানার পুলিশ। তাঁর দাবি, কথোপকথন রেকর্ড করা হচ্ছে বুঝতে পেরেই বডিক্যাম কেড়ে নেন তিনি। তাঁর সঙ্গে মারপিট করে সেই বডিক্যাম পুলিশ ছিনিয়ে নেয় বলে অভিযোগ। এখনও পর্যন্ত কলকাতা পুলিশের তরফে এ ব্যাপারে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

Advertisement

শুক্রবার সকালে তিলজলার শিশু খুনের তদন্তে অকুস্থলে পৌঁছন জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশনের প্রিয়ঙ্ক-সহ চার প্রতিনিধি। প্রায় একই সময় সেখানে পৌঁছন রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন সুদেষ্ণা রায়। তর্কাতর্কির পর দু’পক্ষই তিলজলা থানায় যায়। দীর্ঘ ক্ষণ চাপানউতর চলে। পরে অবশ্য সুদেষ্ণা বেরিয়ে যান। বিকেলে থানাই হয়ে ওঠে উত্তেজনার কেন্দ্র। প্রিয়ঙ্কের বলেন, ‘‘বিশ্বক মুখোপাধ্যায়ের ঘরে বসে আমরা নির্যাতিতার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলছিলাম। সেই সময় আমরা দেখতে পাই একটি বডিক্যাম রাখা রয়েছে এবং সেটি চলছে। পুলিশ আমাদের পুরো কথোকথন রেকর্ড করছিল। ওটা বিশ্বকের ক্যামেরা ছিল। আমি তাঁকে জিজ্ঞেস করি, আপনি এখানে ক্যামেরা কেন রেখেছেন? আমি এটা নিয়ে যাব। ঘর থেকে বাইরে বেরোনোর সময় বিশ্বক মুখোপাধ্যায় আমাকে মারেন। ওরা পুলিশের পোশাকে গুন্ডা! আমার হাত থেকে ক্যামেরাটি ছিনিয়ে নেওয়া হয়। আমার হাতে চোট লেগেছে। এই গুন্ডামির বিরুদ্ধে আমাদের মুখ বন্ধ করে রাখা যাবে না।’’

শিশুমৃত্যুর পুলিশি তদন্তের গতিপ্রকৃতি নিয়েও জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশন প্রশ্ন তুলেছে। প্রিয়ঙ্ক বলেন, ‘‘দু’জন তদন্তকারী আধিকারিকের বয়ানে অসঙ্গতি রয়েছে। প্রথম তদন্তকারী আধিকারিক যা বলেছিলেন, তার সঙ্গে দ্বিতীয় তদন্তকারী আধিকারিকের বয়ানের পার্থক্য রয়েছে।’’

Advertisement

এ দিকে তিলজলা থানায় এই ঘটনার পর জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশনের দলটি হোটেলে ফিরে যায়। রাতের দিকে সেই হোটেলে আসেন কলকাতা পুলিশের দক্ষিণ-পূর্ব ডিভিশনের ডিসি শুভঙ্কর ভট্টাচার্য এবং যুগ্ম কমিশনার রূপেশ কুমার। সূত্রের খবর, শুক্রবার থানার ঘটনা নিয়ে কেন্দ্রীয় দলের সঙ্গে কথা বলেন তাঁরা।

গত রবিবার তিলজলাকাণ্ডে মূল অভিযুক্ত অলোক কুমারকে গ্রেফতার করা হয়। অভিযোগ, সন্তানলাভের আশায় এক তান্ত্রিকের পরামর্শে ৭ বছরের শিশুকন্যাকে খুন করেন আলোক। প্রতিবাদে সোমবার সকাল থেকেই অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে বন্ডেল গেট, পিকনিক গার্ডেন এলাকা। রেল অবরোধ করা হয়। পুলিশের গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়। আগুন নেভাতে আসা দমকলের ইঞ্জিনেও ইট-পাটকেল ছোড়া হয়। এর পরই র‌্যাফ নামিয়ে ব্যাপক লাঠিচার্জ এবং ধরপাকড় শুরু করে পুলিশ। জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাসের শেলও ফাটানো হয়। বিকেলের পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement