বছরের বেস্ট সন্ধ্যায় হাতে হাত বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় এবং কুণাল ঘোষের। — নিজস্ব চিত্র।
বছরের বেস্ট সন্ধ্যায় জানা গেল, দু’জনে একে অপরকে শুধু চেনেন সংবাদের মারফতই। অতীতে একে অপরকে নিয়ে মন্তব্যও করেছেন দু’জনেই। মুখোমুখি সাক্ষাৎ হয়নি এত দিন। আনন্দবাজার অনলাইনের বছরের বেস্ট সন্ধ্যাই সেই দূরত্ব ঘুচিয়ে দিল। শুক্র-সন্ধ্যায় মুখোমুখি কুশল বিনিময় করলেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এবং তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। কথাও হল দু’জনের।
শুক্রবার সন্ধ্যায় বাইপাসের ধারে আইটিসি রয়্যাল বেঙ্গল হোটেলে বসেছিল চাঁদের হাট। এসেছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। উপস্থিত ছিলেন কুণালও। অনুষ্ঠান শুরুর ঠিক আগে প্রেক্ষাগৃহে প্রবেশ করেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর যাওয়ার রাস্তায় অনেকের সঙ্গে বসেছিলেন কুণাল। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়কে দেখে চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ান কুণাল। নমস্কার করেন। হেসে নমস্কার ফিরিয়ে দেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। সেই সময় দু’জনেই একে অপরের হাত ধরে দাঁড়িয়ে। সৌজন্য বিনিময়ের পর নিজের আসনে গিয়ে বসেন বিচারপতি। অনুষ্ঠান চলাকালীন অবশ্য বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলতে দেখা যায় গায়ক, সুরকার অনুপম রায়কে। শোভন চট্টোপাধ্যায়, বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ও গিয়ে বিচারপতির সঙ্গে হাসিমুখে কথা বলেন।
অনুষ্ঠান ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার পথে আবার মুখোমুখি পড়ে যান কুণাল এবং বিচারপতি। তখনই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় কুণালকে বলেন, ‘‘আপনাকে আমার বেশ লাগে।’’ তার পরেই কুণালকে লক্ষ্য করে ছুটে যায় বিচারপতির ‘বাউন্সার’। হাসতে হাসতে বলেন, ‘‘আপনি আমার বিরুদ্ধে আরও গালাগালি করুন। প্রাণ খুলে গালাগালি করুন। তাতে আমি কিছু মনে করছি না।’’ এ কথা শুনে অপ্রস্তুত হলেন কি না বুঝতে না দিয়ে হেসে ওঠেন কুণালও। হাসতে হাসতেই জবাব দেন, ‘‘ও ভাবে বলবেন না। আমিও আপনাকে পছন্দ করি।’’ হাত মিলিয়ে তার পর দু’জনেই চলে যান দু’দিকে।
কলকাতা হাই কোর্টে নিয়োগ মামলার শুনানি চলাকালীন একাধিক বার বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়কে লক্ষ্য করে রাজনৈতিক আক্রমণ শানিয়েছেন তৃণমূলের মুখপাত্র। সাম্প্রতিকতম ছিল, বিচারপতিকে চেয়ার ছেড়ে সরাসরি রাজনীতিতে আসার আহ্বান। অবশ্য বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় গত বছর ডিসেম্বরে এক বার কুণালকে নিয়ে মন্তব্য করেছিলেন। বলেছিলেন, ‘‘কুণাল ঘোষের কথায় আমি খুব আনন্দ পাই। রোজই আমার বিরুদ্ধে কিছু না কিছু বলেন। এখন এ নিয়ে আমি অতিরিক্ত মন্তব্য করতে চাই না! কিন্তু আমার মন্তব্যগুলির অন্য রকম ব্যাখ্যা হয়ে যাচ্ছে।’’ এর বেশি কিছু নয়। আনন্দবাজার অনলাইনের বছরের বেস্ট সন্ধ্যায় দু’জনের মুখোমুখি মোলাকাতও হল, কথাও হল। বিচারপতি-কুণাল এই ‘সুসম্পর্কে’র জল এ বার কোন দিকে গড়ায় সে দিকেই থাকবে কৌতুহল।