২০১৬ সালের মার্চ মাসে নৈহাটির বাসিন্দা ওই জওয়ান প্রতিবেশী এক নাবালিকাকে বাড়িতে একা পেয়ে ধর্ষণ করে
নাবালিকা-ধর্ষণের ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া আইটিবিপি (ইন্দো-তিব্বত সীমান্ত পুলিশ)-র এক জওয়ানকে দোষী সাব্যস্ত করে সাজা ঘোষণা করল ব্যারাকপুর মহকুমা আদালত। সোমবার ব্যারাকপুর পকসো আদালতে ২০১৬ সালের ওই মামলার রায় দেন বিচারক জিতেন্দ্র গুপ্ত। সাজাপ্রাপ্ত অপরাধীর নাম অমিত সাউ।
আদালত সূত্রের খবর, পকসো আইনের ছ’নম্বর ধারায় ২০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়ার পাশাপাশি দু’লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়েছে দোষীকে। সেই সঙ্গে ভয় দেখানোর অপরাধে আরও দু’বছরের কারাদণ্ড ও ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এ দিন সাজা ঘোষণার পরে অভিযোগকারীর পরিবারের পক্ষ থেকে পুলিশের ভূমিকার প্রশংসা করা হয়। ওই কিশোরীর বাবা বলেন, ‘‘অমিত সাউ প্রতিবেশী ছিল। ঘটনার পর থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছিল। ২০১৭ সালে বেহালায় ধরা পড়ে। তার পর থেকেই দিন গুনছিলাম, কবে আদালত মেয়ের এত বড় ক্ষতি করার জন্য ওকে শাস্তি দেবে। একটু শান্তি পেলাম।’’
পুলিশ ও আদালত সূত্রের খবর, ২০১৬ সালের মার্চ মাসে নৈহাটির বাসিন্দা ওই জওয়ান প্রতিবেশী এক নাবালিকাকে বাড়িতে একা পেয়ে ধর্ষণ করে। তার পরে হুমকি দেয়, যাতে ঘটনার কথা কাউকে না জানায় সে। কিন্তু মেয়েটি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে পরিবারের লোকেরা ঘটনার কথা জানতে পারেন এবং নৈহাটি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। ওই নাবালিকা প্রথমে এতটাই ভয় পেয়েছিল যে, পুলিশের কাছেও সবটা বলতে পারেনি। এর পরে আদালতে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে গোপন জবানবন্দিতে সমস্ত কথা জানায় সে। সেই বয়ান রেকর্ড করে অভিযুক্তকে দ্রুত গ্রেফতারের নির্দেশ দেয় আদালত। প্রায় এক বছর পরে অভিযুক্ত গ্রেফতার হয়। তার এবং ওই নাবালিকার ভ্রুণের সংরক্ষিত ডিএনএ পরীক্ষা করানোর পরেই ঘটনা সম্পর্কে নিশ্চিত হয় আদালত।
সরকারি আইনজীবী অসীমকুমার দত্ত বলেন, ‘‘বিচারক অভিযুক্তকে পকসো আইনের ছ’নম্বর ও ভারতীয় দণ্ডবিধির ৫০৬ নম্বর ধারায় দোষী সাব্যস্ত করেছেন। পকসো আইনে ২০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও দু’লক্ষ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও দু’বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন। ৫০৬ নম্বর ধারায় দু’বছরের কারাদণ্ড ও ৩০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছ’মাসের সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন। দুটো সাজা একই সঙ্গে চলবে।’’