ফাইল চিত্র।
পোস্ট-গ্র্যাজুয়েট ট্রেনি (পিজিটি), হাউসস্টাফদের পরে এ বার ইন্টার্নরাও কাজে যোগ দিলেন। ডিউটি-রস্টার মেনে মঙ্গলবার সকাল থেকেই তাঁরা কাজে যোগ দেন বলে জানাচ্ছেন আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তবে কাজের অবসরে অনশন মঞ্চেও যোগ দিচ্ছেন ইন্টার্নরা।
আর জি করের অচলাবস্থা নিয়ে দায়ের হওয়া জনস্বার্থ মামলাটি সোমবার হাই কোর্টে উঠেছিল। আদালত জানায়, শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চলতে পারে। কিন্তু রোগী-পরিষেবা ব্যাহত করা চলবে না। এ দিন ইন্টার্নদের একাংশ বলেন, “আদালতে আমরাই কাজে যোগ দেওয়ার কথা জানিয়েছি। কাজ করে শান্তিপূর্ণ ভাবে আন্দোলন চালালে কারও কিছু বলার থাকছে না। কিন্তু অধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবিতে অনশন চালিয়ে যাব।” ২৯ অক্টোবর পড়ুয়াদের সঙ্গে স্বাস্থ্য সচিবের বৈঠক স্থির করে দিয়েছে আদালতই। সেই আলোচনার উপরেই নির্ভর করবে আগামী পদক্ষেপ।
সূত্রের খবর, স্বাস্থ্য সচিবের কাছে কিছু দাবি রাখতে পারেন পড়ুয়ারা। যেমন, নতুন ছাত্র সংসদে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত পড়ুয়ারা থাকবেন না। প্রতি বছর তা পরিবর্তন করতে হবে। স্বচ্ছ হস্টেল কমিটি গঠন করতে হবে। তবে পড়ুয়াদের আলোচনায় বার বার উঠে আসছে অধ্যক্ষের কথাই। এক আন্দোলনকারীর বক্তব্য, “উনি প্রতিহিংসাপরায়ণ। ফিরে এসে কী আচরণ করবেন, তা নিয়ে শঙ্কিত।” পড়ুয়াদের অভাব-অভিযোগ জানানোর জন্য স্বাস্থ্য দফতরের গঠিত মেন্টর কমিটিকেও ভরসা করতে নারাজ তাঁরা। তাঁদের দাবি, ‘‘অধ্যক্ষের অধীনে সকলেই। কমিটির পাঁচ শিক্ষক-চিকিৎসককেও যে অধ্যক্ষ নিয়ন্ত্রণ করবেন না, সেই নিশ্চয়তা কোথায়?’’ তাঁদের দাবি, সপ্তাহে বা মাসে এক দিন অধ্যক্ষকে পড়ুয়াদের জন্য সময় দিতে হবে।
অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ বলছেন, “কে অধ্যক্ষ হবেন, কে কোন কমিটিতে থাকবেন, সবই পড়ুয়ারা ঠিক করে দিতে চাইছেন। সে ভাবেই মেন্টর কমিটিতেও ওঁদের পছন্দের লোককে রাখুন। পড়ুয়ারা আন্দোলন করুন। কিন্তু পড়াশোনা ও পরিষেবার পরিবেশটা ঠিক রাখুন। আমি প্রতিহিংসাপরায়ণ হলে ঘেরাও থেকে বেরোতে পুলিশ ডাকতাম।”
হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান সুদীপ্ত রায়ের ভূমিকা নিয়ে আন্দোলনকারীদের একাংশের বক্তব্য, “উনি প্রথমেই আমাদের সরকার-বিরোধী
তকমা দিয়েছেন। এত দিন আন্দোলন-অনশন চললেও মেটাতে যথাযথ ব্যবস্থা নেননি।” সুদীপ্তবাবুর কথায়, “ওঁদের সঙ্গে চার বার বৈঠক করেছি। গভীর রাত পর্যন্ত থেকে আলোচনা করেছি। তার পরেও আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। সরকার-বিরোধী না হলে তো আমাদের বিশ্বাস করতে পারতেন।”