বালার মধ্যে ভরে পাচারের অপেক্ষায় ছিল লাখ লাখ টাকার পার্টি ড্রাগ। —নিজস্ব চিত্র।
এ দেশে তৈরি রংবেরঙের বালার ভালোই বাজার হংকংয়ে। আর সেই সুযোগে বালার মধ্যেই পাচার হচ্ছিল লাখ লাখ টাকার পার্টি ড্রাগ। মেথাকুয়ালন নামের ওই পার্টি ড্রাগ, ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া আমেরিকার মত পশ্চিমি দেশে খুবই জনপ্রিয়। কোকোনের বদলি হিসাবে সেখানে অনেকেই ওই পার্টি ড্রাগ নিয়ে থাকেন। পশ্চিমি দেশে মাদকের বাজারে মেথাকুয়ালনের চলতি নাম ‘ম্যানড্রেক’।
খাস কলকাতার বুকেই এ রকমই প্রায় ৫০ লাখ টাকার মেথাকুয়ালন বাজেয়াপ্ত করল কলকাতা পুলিশ যা বালার মধ্যে ভরে পাচারের অপেক্ষায় ছিল।
কলকাতা পুলিশের মাদক পাচার দমন বিভাগের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘বেশ কিছু দিন ধরেই আমরা খবর পাচ্ছিলাম, বন্দর এলাকার কয়েকটি জায়গা থেকে বিদেশে মাদক পাচার করা হচ্ছে। বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে খবর নিয়ে পুলিশ হদিশ পায় বালার আড়ালে মাদক পাচার চক্রের।’’
আরও পড়ুন: কলকাতায় চলন্ত বাসে শ্লীলতাহানি, ১০০ ডায়ালে ফোন পেয়ে ৭ মিনিটেই এক অভিযুক্তকে ধরল পুলিশ
সেই সূত্র ধরেই শনিবার রাতে নারকেলডাঙা এলাকার ষষ্টীতলা রোডের একটি ঘুপচি ঘরে হানা দেয় কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের মাদক পাচার দমন শাখা। এক তদন্তকারী আধিকারিক বলেন, ‘‘প্রথমে বোঝার কোনও উপায় নেই। প্লাস্টিক, জরি, বিভিন্ন ধরনের সস্তা ধাতু দিয়ে যে রকম ঝুটো গয়না তৈরি হয় সেরকম একটি কারখানা। সেখানেই রয়েছে প্রচুর রংবেরঙের বালা। বেশ চওড়া বালাগুলোর উপরে সস্তা জরির কাজ করা। ভিতরে একটি ধাতুর বালার উপর ওই মোড়ক।
আরও পড়ুন: মাদকের প্রভাবে ঘটছে অঙ্গহানিও
সেই ভিতরের ধাতব বালা আর উপরের মোড়কের মধ্যেই লুকনো লাখ লাখ টাকার মেথাকুয়ালন। গোয়েন্দা সূত্রে খবর, সাধারণত ওই মেথাকুয়ালন ট্যাবলেটের আকারে পাওয়া গেলেও, এখানে পাওয়া গিয়েছে পলিথিনের প্যাকেটে ভরা গুড়ো পাউডারের আকারে। ওই পাউডার ভরা প্লাস্টিক ভরে দেওয়া হত বালার মাঝে। তারপর চলে যেত সোজা হংকং। সেখানে চিহ্নিত করা বালা থেকে ওই ড্রাগ বের করে নেওয়া হত।
গোয়েন্দারা শনিবারের রাতের অভিযানে একবালপুরের আব্দুল রাজ্জাক নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছেন। তাকে জেরা করে জানার চেষ্টা চলছে কোথা থেকে ওই মাদক আসত এবং ওই চক্রে আর কে কে রয়েছে। গোয়েন্দারা জানান, ভারতের কিছু ওষুধ বানানোর কারখানায় বেআইনি ভাবে ওই মাদক তৈরি হয়। সে রকম কোনো জায়গা থেকেই কলকাতায় আসত ওই মাদক, সন্দেহ গোয়েন্দাদের।
তবে হংকংয়ে ওই মাদক পৌঁছনোর পর সেখানেই ব্যবহার হত না অন্য কোথাও ফের পাচার করা হত তা এখনও জানতে পারেননি গোয়েন্দারা। গোয়্ন্দারা চক্রের বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছেন।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।