প্রতীকী ছবি।
আগামী সোমবার থেকে মেট্রো পরিষেবার সময় এবং ট্রেনের সংখ্যা, দুই-ই বাড়ছে। ওই দিন থেকে সকাল ৮টার বদলে পরিষেবা শুরু হবে ৭টায়। রাতে ৯টার পরিবর্তে দুই প্রান্তিক স্টেশন থেকে দিনের শেষ ট্রেন ছাড়বে সাড়ে ৯টায়। সেই সঙ্গে ট্রেনের সংখ্যা ১৯০ থেকে বেড়ে হচ্ছে ২০৪। এর পাশাপাশি, মেট্রো কর্তৃপক্ষ ছাড় দিতে চলেছেন ই-পাসের ক্ষেত্রেও। বুধবার মেট্রোর প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তি থেকে স্পষ্ট, অফিসের ব্যস্ত সময়টুকু বাদ রেখে ধাপে ধাপে ই-পাসের ব্যবহার কমিয়ে আনার উদ্যোগ শুরু হয়েছে।
মেট্রোর আধিকারিকদের একাংশের মতে, করোনা পরিস্থিতি ক্রমশ নিয়ন্ত্রণে আসায় ধাপে ধাপে পরিষেবা স্বাভাবিক করতে চাইছেন কর্তৃপক্ষ। প্রাক্-করোনাকালে প্রান্তিক স্টেশন থেকে প্রথম ট্রেন ছাড়ত সকাল ৬টা ৫০ মিনিটে। রাতের শেষ ট্রেন দমদম থেকে ছাড়ত ৯টা ৫৫ মিনিটে। এ দিনের বিজ্ঞপ্তিতে প্রাক্-করোনা পরিস্থিতির কাছাকাছি সময় পর্যন্ত পরিষেবা চালু রাখার কথা জানিয়েছেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ। সেই সঙ্গেই জানানো হয়েছে, সকালে ৭টা থেকে সাড়ে ৮টা এবং রাতে ৮টা থেকে সাড়ে ৯টা পর্যন্ত ই-পাসে ছাড় দেওয়া হবে। তবে, স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকা সত্ত্বেও কেন সকালের দিকে পরিষেবার সময় বাড়ানো হল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। মেট্রো সূত্রের খবর, গত ১১ নভেম্বর লোকাল ট্রেন চালু হওয়ার পরে ৩৮টি ট্রেন বাড়ানো হয়। কিন্তু তাতেও গত ২০ দিনে মেট্রোয় যাত্রী-সংখ্যার উল্লেখযোগ্য কোনও পরিবর্তন হয়নি। তাই দীর্ঘ লকডাউন এবং তার পরে নিয়ন্ত্রিত পরিষেবার খরা কাটিয়ে আরও বেশি যাত্রী পরিবহণের দিকে ঝুঁকছেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ। নতুন ব্যবস্থায় দিনের কোনও সময়েই মহিলা, ১৫ বছরের কম বয়সি এবং প্রবীণদের ক্ষেত্রে ই-পাস লাগবে না। তবে সকাল সাড়ে ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ১৫ বছরের বেশি বয়সি পুরুষদের ক্ষেত্রে ই-পাস লাগবে। গত এক মাসে দেখা গিয়েছে, রাতের দিকে যাত্রী খুব কমে যাচ্ছে। সে কথা মাথায় রেখেই রাতে ই-পাসে ছাড় দেওয়া হয়েছে।
সোমবার থেকে আপ ও ডাউন মিলিয়ে ২০৪টি ট্রেন চলবে। ব্যস্ত সময়ে দু’টি ট্রেনের মাঝে সময়ের ব্যবধান থাকবে সাত মিনিট। প্রাক্-করোনা পরিস্থিতিতে সেটা ছ’মিনিট ছিল। আগামী রবিবার রাজ্য সরকারের ক্লার্কশিপ পরীক্ষার জন্য সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত পরিষেবা চালু থাকবে। ট্রেনের সংখ্যাও ৬৮ থেকে ৭৪ করা হচ্ছে। পরীক্ষার্থীরা অ্যাডমিট কার্ড দেখিয়েই স্টেশনে ঢোকার সুযোগ পাবেন। ই-পাস লাগবে না। মেট্রোর মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক ইন্দ্রাণী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘যাত্রীদের সুবিধার্থেই পরিষেবার সময় ও ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানো হল।’’
মেট্রো সূত্রের খবর, শীর্ষ কর্তাদের একাংশ লোকাল ট্রেনের ধাঁচে পরিষেবার বিধি-নিষেধ শিথিল করার পক্ষপাতী ছিলেন। লকডাউনের আগের দিন মেট্রোয় যাত্রী-সংখ্যা ছিল তিন লক্ষ ২০ হাজারের মতো। এখন যাত্রী-সংখ্যা তার অনেক নীচে রয়েছে। নতুন ব্যবস্থায় দু’লক্ষ যাত্রী মেট্রোয় চড়তে পারবেন।
টোকেন চালু হলে কী ভাবে ভিড় সামাল দেওয়া হবে, তা-ও ভাবছেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ। যদিও এখনও সেই মর্মে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। যন্ত্রের মাধ্যমে টোকেন জীবাণুমুক্ত করা যায় কি না, তার খোঁজ চলছে।