—প্রতীকী ছবি।
লোকসভা ভোটের মুখে কলকাতায় এক ছাতু ব্যবসায়ীর অফিস থেকে মিলল বিপুল টাকা। আয়কর দফতর হানায় ওই টাকা উদ্ধার হয়েছে। আয়কর দফতর সূত্রে খবর, প্রায় ৫৮ লক্ষ টাকা উদ্ধার হয়েছে।
আয়কর দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, চেতলায় ছাতু প্রস্তুতকারী সংস্থার অফিসে গত দু’দিন ধরে তল্লাশি অভিযান চালানো হয়েছে। তাতে প্রায় ৫৮ লক্ষ টাকা পাওয়া গিয়েছে। নিয়ম মেনে সেই টাকা আটক করা হয়েছে। ভোটের মুখে এই পরিমাণ টাকা উদ্ধার হওয়ার কথা নির্বাচন কমিশনেও জানানো হবে বলে আয়কর দফতর সূত্রে খবর। কেন্দ্রীয় সংস্থার সূত্রের দাবি, কোথা থেকে ওই পরিমাণ টাকা এল, তার কোনও সন্তোষজনক উত্তর দিতে পারেননি ওই ব্যবসায়ী।
ভোটঘোষণার পরেই দেশ জুড়ে আদর্শ আচরণবিধি চালু হয়েছে। তার পর থেকে রাজ্যে কোথায় কত হিসাব-বহির্ভূত নগদ, মদ, মাদক উদ্ধার হয়েছে, বৃহস্পতিবার তার পরিসংখ্যান দিয়েছে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতর। অতিরিক্ত মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক অরিন্দম নিয়োগী জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার তালিকা প্রকাশের আগে পর্যন্ত এ রাজ্য থেকে ৭ কোটি ২ লক্ষ টাকা হিসাব-বহির্ভূত নগদ উদ্ধার হয়েছে। ওই সময়কালে উদ্ধার হয়েছে ৩০ কোটি ৯৬ লক্ষ টাকার মদ। বৃহস্পতিবার তালিকা প্রকাশের আগে পর্যন্ত ১৫ কোটি ৩৩ লক্ষ টাকার মাদক, ২২ কোটি ৬৩ লক্ষ টাকার দামি ধাতু, ৫২ কোটি ৯৪ লক্ষ টাকার উপঢৌকন উদ্ধার করা হয়েছে। এগুলি সবই হিসাব-বহির্ভূত। ভোটের দিন ঘোষণার সময় নির্বাচন কমিশন জানিয়েছিল, অবাধ, স্বচ্ছ ভোট করানোর ক্ষেত্রে বড় চ্যালেঞ্জ হল চার ‘এম’— মাসল (পেশি), মানি (অর্থ), মিসইনফরমেশন (ভুয়ো তথ্য), এমসিসি (নির্বাচনী আচরণবিধি) লঙ্ঘন। সেই চ্যালেঞ্জের মোকাবিলায় প্রথম দিন থেকেই সক্রিয় পদক্ষেপ করছে কমিশন। বাজেয়াপ্ত করা হচ্ছে নগদ, মাদক, উপঢৌকন, দামি ধাতু। তাদের হয়ে এই কাজটি করে থাকে ইডি, আয়কর দফতর, রাজ্য পুলিশ, সিবিআই-সহ বিভিন্ন কেন্দ্রীয় বাহিনী, তদন্তকারী সংস্থা।
১৯ এপ্রিল প্রথম দফার ভোট রাজ্যের তিন কেন্দ্রে। কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি কেন্দ্রে হতে চলেছে ভোটগ্রহণ। কমিশন জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার তালিকা প্রকাশ পর্যন্ত কোচবিহারে ১৭ কোম্পানি, আলিপুরদুয়ারে নয় কোম্পানি, জলপাইগুড়িতে ১১ কোম্পানি, দার্জিলিঙে সাত কোম্পানি, উত্তর দিনাজপুরে সাত কোম্পানি, দক্ষিণ দিনাজপুরে চার কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত রাজ্যে মোট ১৭৭ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী এসেছে। রাজ্যে নাকা চেকিংয়েরও ব্যবস্থা চলছে। কমিশন জানিয়েছে, সীমানায় ৬২৯টি জায়গায় এবং রাজ্যের ভিতরে ৯১টি জায়গায় নাকা চেকিং চলছে। নির্বাচন সংক্রান্ত অভিযোগ গ্রহণের জন্য সিভিজিল নামের একটি অ্যাপ চালু করেছে কমিশন। সেই অ্যাপে কেউ কোনও অভিযোগ জানালে কমিশন ১০০ মিনিটের মধ্যে তাঁর সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করে। কমিশন জানিয়েছে, সেই অ্যাপে বৃহস্পতিবার তালিকা প্রকাশ পর্যন্ত ১,৩৯৩টি অভিযোগ জমা পড়েছে। ১,১৬৯টি অভিযোগ নিয়ে পদক্ষেপ করেছে কমিশন। ১৯৭টি অভিযোগ বাতিল করেছে। ২৭টি অভিযোগ শোনা বাকি।