প্রতীকী ছবি।
কালীপুজোর চাঁদা আদায়ের নামে এক যুবকের গোটা মাসের বেতন কেড়ে নেওয়া হল। প্রকাশ্য রাস্তায় ওই ঘটনা ঘটে গত বুধবার। অভিযোগ, বৃহস্পতিবারই ক্ষতিগ্রস্ত যুবক হরিদেবপুর থানায় লিখিত অভিযোগ জানান। কিন্তু শনিবার পর্যন্ত ওই ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। ঘটনায় স্পষ্টতই পুলিশের গাফিলতি রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
অজয়কুমার মিশ্র নামে ওই যুবক জানান, হরিদেবপুরের হসপিটাল রোডে ওই ঘটনা ঘটে। তাঁর অভিযোগ, কালীপুজোর চাঁদার নাম করে স্থানীয় একটি ক্লাবের কয়েক জন তাঁর কাছ থেকে প্রায় আঠারো হাজার টাকা জোর করে ছিনিয়ে নেয়। তাঁকে রাস্তায় আটকে জোর করে পকেট থেকে ওই টাকা ছিনিয়ে নেয় ক্লাবের ছেলেরা।
পেশায় গাড়িচালক অজয় হরিদেবপুর থানার নেপালগঞ্জের জুলপিয়ার বাসিন্দা। ঘটনার সময়ে তিনি সাইকেলে চেপে বাড়ি ফিরছিলেন। পকেটে অক্টোবর মাসের বেতন বাবদ ১৮ হাজার ১৮০ টাকা ছিল। অভিযোগ, সেই সময়ে হসপিটাল রোড মোড়ের কাছে স্থানীয় ক্লাবের ১০- ১২ জন তাঁর রাস্তা আটকে ১০ হাজার টাকা চাঁদা চায়।
অজয় বলেন, ‘‘পুজোর জন্য এত টাকা চাঁদার কথা শুনে অবাক হয়ে যাই। দেড়শো- দু’শো টাকা দিতে চেয়েছিলাম। সেই টাকা বার করতে গেলে ওই যুবকেরা আমাকে গালিগালাজ করতে শুরু করে। আমি প্রতিবাদ করি। তবে চাঁদা দিতেও চাই। কিন্তু পকেট থেকে টাকা বার করার সময়ে বেতনের টাকা দেখতে পায় ওরা।’’
অভিযোগ, এর পরেই তাঁর মাথার পিছনে কোনও কিছু দিয়ে মারা হয়। তিনি রাস্তায় পড়ে গেলে সবাই মিলে তাঁকে মারতে শুরু করে। অজয়ের পকেট থেকে তাঁর বেতনের পুরো টাকাটাই নিয়ে নেওয়া হয়। যদিও ওই ঘটনার পিছনে ক্লাবের পুরনো রাগ রয়েছে বলে অজয়ের অভিযোগ।
তিনি জানান, ২০১৭ সালে তিনি যখন বাড়ি করছিলেন, তখন ওই ক্লাবের ছেলেদের থেকেই নির্মাণসামগ্রী, শ্রমিক নিতে হয়েছিল তাঁকে। শুধু তা-ই নয়, সেই সময়ে তাঁর থেকে ১০ হাজার টাকা ক্লাবের তরফে চাওয়া হয়। অজয়ের কথায়, ‘‘চার হাজার দিয়ে বাকি টাকা ধীরে ধীরে দেব বলে জানিয়েছিলাম। কিন্তু তার পরেও প্রায়ই আমাকে রাস্তায় আটকে সেই টাকা আদায়ের চেষ্টা করত ওরা।’’ বুধবারের ঘটনা সে সবের জেরেই ঘটেছে বলে দাবি অজয়ের।
এর পরে সারা মাস কী করে চলবে, কী করে ছেলে-মেয়ের লেখাপড়ার টাকা মেটাবেন, তা নিয়েই চিন্তিত ওই গাড়িচালক। তাঁর কথায়, ‘‘মার্চের শেষ থেকে তিন মাস পুরো বসেছিলাম। কোনও বেতন মেলেনি। লকডাউন ওঠার পরে কাজ শুরু হয়েছে সবে। এখন কী করব জানি না।’’
ঘটনার প্রসঙ্গে জানতে ডিসি (এসডব্লিউডি) নীলাঞ্জন বিশ্বাসকে ফোন করা হলে তিনি ফোনও ধরেননি। মেসেজেরও উত্তরও দেননি।