লন্ডনে বাড়ি না থাকলে, কেন বিশেষ ভিসার জন্য কেন আবেদন করেছিলেন শৌভিক, তা নিয়ে প্রশ্ন করলেন বিচারক। —নিজস্ব চিত্র।
আদালতে প্রশ্নের মুখে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ধৃত প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি তথা তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্যের স্ত্রী শতরূপা এবং ছেলে শৌভিক ভট্টাচার্য। ইংল্যান্ডে বাড়ি না থাকলে, কেন বিশেষ ভিসার আবেদন করেছিলেন শৌভিক, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠল। বুধবার এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) আইনজীবী বলেন, ‘‘মানিক-পুত্র ২০১৭ সালে দু’বার ইউকে গিয়েছেন।’’ এর পর তদন্তকারী অফিসারেরা কিছু গোপন নথি দেখান বিচারককে। তার পরেই বিচারকের প্রশ্ন, ‘‘তা হলে কি বাড়ি আছে ওখানে?’’ এর পর ইডির আইনজীবী বলেন, ‘‘রেসিডেন্স না থাকলে বিশেষ ক্যাটাগরির ভিসার আবেদন করলেন কেন?’’ বস্তুত, তদন্তকারীদের দাবি, সম্পত্তি সংক্রান্ত বিষয়ে কাজের জন্যই বিদেশে গিয়েছিলেন তৃণমূল বিধায়কের ছেলে।
প্রসঙ্গত, তৃণমূল বিধায়ক মানিকের ছেলের নামে আগেই লুকআউট নোটিস জারি করেছিল ইডি। শৌভিক যাতে দেশ ছেড়ে না যেতে পারেন, তার জন্য ওই ব্যবস্থা। তার পর গত ৭ জানুয়ারি আদালতে হাজিরা দেন শৌভিক এবং তাঁর মা শতরূপা।
মানিকের পুত্রের একটি পরামর্শদাতা সংস্থা ছিল। তদন্তকারীদের দাবি, বেসরকারি বিএড কলেজগুলি থেকে ২০১৮ সালের অক্টোবর থেকে ২০১৯ সালের এপ্রিল মাস পর্যন্ত ওই সংস্থা ২ কোটির বেশি টাকা তোলে। অভিযোগ, এর বিনিময়ে কোনও পরিষেবা দেওয়া হয়নি কলেজগুলিকে। তার পর সেই টাকাও ফেরতও দেওয়া হয়নি। এই সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে ইডি।
এখন ওই নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ব্যাঙ্কশাল আদালতের বিশেষ পিএমএলএ আদালতে চলছে মানিকের স্ত্রী ও ছেলের বিরুদ্ধে মামলার শুনানি। তদন্তকারীদের সূত্রে খবর, শৌভিক তাঁর বিদেশযাত্রার বেশ কিছু তথ্য গোপন করেছেন। কিন্তু তিনি ২০১৭ সালে দু’বার লন্ডন যান। প্রথমে লন্ডন যাত্রার একাধিক বিষয় গোপন করেন। সেই সংক্রান্ত তথ্য পেয়েছেন তদন্তকারীরা। পরে পাসপোর্ট দেখিয়ে শৌভিককে বিদেশযাত্রার কারণ জিজ্ঞাসা করলে তিনি গোয়েন্দাদের বলেন, পড়াশোনা করতে সেখানে গিয়েছিলেন। এখন ইডির জিজ্ঞাস্য, কেন লন্ডন যাত্রার বিভিন্ন তথ্য এবং কারণ গোপন করলেন শৌভিক। বস্তুত, ইডির চার্জশিটে শৌভিকেরও নাম রয়েছে। তাঁর ২টি সংস্থাও দুর্নীতিতে যুক্ত বলে চার্জশিটে জানিয়েছেন গোয়েন্দারা।