পাহাড়ে বন্ধের সিদ্ধান্ত স্থগিত। — ফাইল চিত্র।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হুঁশিয়ারির ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পাহাড়ে বন্ধের সিদ্ধান্ত স্থগিত রাখলেন বিনয় তামাংরা। বুধবার সকালে ওই ঘোষণা করেছেন তাঁরা। তাঁদের তরফে জানানো হয়েছে, সাধারণ মানুষের স্বার্থে ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার পাহাড়ে ১২ ঘণ্টার বন্ধের ডাক দেওয়া হয়েছিল। ঘটনাচক্রে ওই দিন থেকেই শুরু হচ্ছে মাধ্যমিক পরীক্ষা।
বিধানসভায় সদ্য পাশ হওয়া বঙ্গভঙ্গ বিরোধী প্রস্তাবের বিরোধিতা করে, পাশাপাশি গোর্খাল্যান্ডের দাবি তুলে মঙ্গলবার ২৪ ঘণ্টার জন্য অনশনে বসেন বিনয়, হামরো পার্টির প্রতিষ্ঠাতা অজয় এডওয়ার্ড-সহ জিটিএ-র ৭ সদস্য। এর পাশাপাশি, আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি ১২ ঘণ্টার বন্ধের ডাকও দেন তাঁরা। যদিও বিনয়দের দাবি, তাঁরা পাহাড়ের মানুষের কাছে বাড়ি থেকে না-বেরোনোর আবেদন জানিয়েছেন। এই কর্মসূচির ঘোষণা হতেই পাহাড়ে সিঁদুরে মেঘ দেখতে শুরু করেন অনেকে। এই আবহে মঙ্গলবার শিলিগুড়ি থেকে মমতা হুঁশিয়ারি দেন, পাহাড়ে বন্ধের নামে আইন হাতে তুলে নিলে কাউকে রেয়াত করা হবে না। তিনি বলেন, ‘‘পাহাড়ে কোনও বন্ধ-টন্ধ হবে না। বন্ধ করলে আমরা সমর্থন করব না।’’ তাঁর সংযোজন ছিল, ‘‘পাহাড়ে কেউ কেউ মাঝেমধ্যে বন্ধ ডাকেন। তবে উন্নয়নের জন্য নয়। কী করে পাহাড়ে অশান্তি করা যায়, সে জন্য।’’ মুখ্যমন্ত্রী হুঁশিয়ারিও দেন, ‘‘২৩ তারিখ মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমি পরিষ্কার নির্দেশ দিচ্ছি, কেউ যদি বঙ্গভঙ্গ নিয়ে আন্দোলন করতে যায়, সে আন্দোলন করতেই পারেন, তবে আইন হাতে তুলে নিলে কাউকে রেয়াত করা হবে না।’’ এর পর কর্মসূচি স্থগিত রাখার ঘোষণা বিনয়দের।
বুধবার অনশন ভেঙে সাংবাদিক বৈঠক করেন বিনয়। তিনি বলেন, ‘‘আমরা বন্ধ ডাকিনি। জাতিগত আক্রমণের বিরুদ্ধে আমরা বন্ধের আবেদন জানিয়েছিলাম। আমরা বন্ধ স্থগিত রাখলাম। বিভিন্ন জনের কাছ থেকে ফোন আসছে আমাদের কাছে। আমরা প্রয়োজনে সাধারণ মানুষের কাছে যাব। সোমবার বিধানসভায় বঙ্গভঙ্গ বিরোধী প্রস্তাব নিয়ে আলোচনার সময় রাজ্যের পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় তাঁর বক্তৃতায় গোর্খাদের ‘বহিরাগত’ ও আদিবাসীদের ‘পরিযায়ী’ বলেছিলেন। এ নিয়ে শোভনদেবকে ক্ষমা চাইতে হবে বলে দাবি তুলেছেন বিনয়। না হলে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিনয়। তবে তাঁরা আইন নিজেদের হাতে তুলে নেবেন না বলেও জানিয়েছেন। আন্দোলনের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে বিনয় বলেন, ‘‘মঙ্গলবার বিভিন্ন আদিবাসী, গোর্খা সংগঠন-সহ বিভিন্ন ছোট দলগুলির সঙ্গে কথা হয়েছে। তাঁরা আমাদের সঙ্গে আন্দোলনে নামতে চাইছে। আমরা সেটাই করব।’’