Air Pollution

এক কোটি কেজি ধূলিকণায় কালো হয়ে যাচ্ছে ফুসফুস!

কালীপুজো ও কাল দীপাবলিতে বাজি ফাটলে কী অবস্থা হতে পারে, তা নিয়ে প্রমাদ গুনছেন বিশেষজ্ঞেরা।

Advertisement

দেবাশিস ঘড়াই

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ নভেম্বর ২০২০ ০৪:১৬
Share:

— ফাইল চিত্র

বিভিন্ন উৎস থেকে প্রায় ১ কোটি ২০ লক্ষ কিলোগ্রাম ধূলিকণা (পিএম১০) প্রতি বছর কলকাতার বাতাসে মিশছে। আর অতি সূক্ষ্ম ধূলিকণার (পিএম২.৫) পরিমাণ প্রায় ৪০ লক্ষ কিলোগ্রাম। পিছিয়ে নেই হাওড়াও। সেখানেও বিভিন্ন উৎস থেকে বাতাসে মেশা ধূলিকণা (পিএম১০) ও অতি সূক্ষ্ম ধূলিকণার (পিএম২.৫) পরিমাণ যথাক্রমে ১ কোটি ৬ লক্ষ কিলোগ্রাম ও ২৮ লক্ষ কিলোগ্রাম। ধূলিকণা মিশ্রিত সেই বাতাসই শ্বাস-প্রশ্বাসের সঙ্গে শরীরে প্রবেশ করে শ্বাসনালি, ফুসফুস হয়ে উঠছে কালো রঙের। এমনিতেই করোনাভাইরাসের প্রধান লক্ষ্য ফুসফুস। সেখানে আজ, কালীপুজো ও কাল দীপাবলিতে বাজি ফাটলে কী অবস্থা হতে পারে, তা নিয়ে প্রমাদ গুনছেন বিশেষজ্ঞেরা। কারণ, আদালত সমস্ত ধরনের বাজি নিষিদ্ধের নির্দেশ দিলেও তা অগ্রাহ্য করে ইতিমধ্যেই ফাটানো শুরু হয়েছে।

Advertisement

অথচ ঘটনাপ্রবাহ বলছে, ২০১৬ সালের অগস্টে একটি মামলার প্রেক্ষিতে জাতীয় পরিবেশ আদালত রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদকে উৎসভিত্তিক দূষণের পরিমাণ বার করতে নির্দেশ দেয়। সেই মতো পর্ষদ নিয়োগ করে সিএসআইআর-ন্যাশনাল এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং রিসার্চ ইনস্টিটিউট-কে (নিরি)। গত বছরে নিরি সেই চূড়ান্ত রিপোর্টটি জমা দেয়। সেই রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে সরকারি তরফে যে ‘মাস্টার প্ল্যান’ জমা দেওয়া হয়েছে, তা দ্রুত বাস্তবায়িত করতে গত মাসেই সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে পরিবেশ আদালত। কতটা, কী বাস্তবায়িত করা হল, সে সংক্রান্ত একটি রিপোর্টও আগামী ছ’মাসের মধ্যে জমা দিতে বলা হয়েছে। ফলে করোনা সংক্রমণ ও কালীপুজোর প্রেক্ষাপটে নিরির রিপোর্টটি আলাদা মাত্রা পেয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞেরা।

বক্ষরোগ চিকিৎসক রাজা ধর জানাচ্ছেন, ওই ধূলিকণার (পার্টিকিউলেট ম্যাটার বা পিএম) রং কালো। তাই শ্বাস-প্রশ্বাসের সঙ্গে ঢুকে পড়া ধূলিকণার জন্য ফুসফুসের রং-ও ক্রমশ কালো হয়ে যায়। তাঁর কথায়, ‘‘বাজি ফাটানো আটকানো না গেলে সঙ্কটজনক পরিস্থিতি তৈরি হবে। চিকিৎসকদের তরফে রাজ্য সরকারের কাছে তাই আবেদন করেছি, যে ভাবেই হোক বাজি ফাটানো আটকাতেই হবে।’’ ‘ইন্ডিয়ান চেস্ট সোসাইটি’-র এক সদস্য দিল্লি ও চণ্ডীগড়ের সাম্প্রতিক পরিসংখ্যানের উল্লেখ করে বলছেন, ‘‘ফসলের গোড়া পোড়ানোর জন্য ওখানকার বাতাসে পিএম ২.৫-এর পরিমাণ বাড়ছে, সেই সঙ্গে কোভিডে আক্রান্তের সংখ্যাও বাড়ছে। কারণ, এরা সমানুপাতিক।’’ পরিবেশ আদালতে সংশ্লিষ্ট বায়ুদূষণ মামলার আবেদনকারী পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত বলেন, ‘‘জনস্বাস্থ্যের সুরক্ষার কথা ভেবে আদালত নিজের রায় দিয়েছে। এ বার পুরোটাই পুলিশ-প্রশাসনের দায়িত্ব!’’ পরিবেশকর্মীদের সংগঠন ‘সবুজ মঞ্চ’-এর সম্পাদক নব দত্ত বলছেন, ‘‘ইচ্ছা করলেও পুলিশ বাজি-তাণ্ডব রুখতে পারে না, এটা বিশ্বাসযোগ্য নয়! পুলিশকে শুধু সক্রিয় হতে হবে।’’

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement