হাওড়া পুরসভা।
বেআইনি বহুতল তৈরি রুখতে ইতিমধ্যেই বেশ কিছু পদক্ষেপ করেছে হাওড়া পুরসভা। যার মধ্যে অন্যতম, শহরে কোনও বহুতল তৈরি করতে হলে তার সামনে বোর্ড লাগিয়ে লিখে রাখতে হবে জমির মালিক এবং প্রোমোটারের নাম। লাগাতে হবে পুরসভার অনুমোদিত নকশাও। যিনি ওই বহুতলে ফ্ল্যাট কিনবেন, তিনি যাতে আগেই যাবতীয় তথ্য দেখে নিতে পারেন, তা নিশ্চিত করতেই এই পদক্ষেপ। এ বার পুরসভা সিদ্ধান্ত নিয়েছে, নকশায় সামান্য বিচ্যুতি (ডিভিয়েশন) হলে জরিমানা-সহ সেই নকশা অনুমোদন করা হবে। কিন্তু, কেউ যদি তেতলা বাড়ির অনুমোদন নিয়ে পাঁচ বা দশতলা তৈরি করেন, সে ক্ষেত্রে পুর প্রশাসন সংশ্লিষ্ট বহুতলকে বেআইনি বলে ঘোষণা করবে।
পুরসভার হিসেব অনুযায়ী, হাওড়ায় বেআইনি বহুতল রয়েছে পাঁচ হাজারের কাছাকাছি। গত চার বছর ধরে নির্বাচিত পুর বোর্ড না থাকায় সেই সংখ্যা ক্রমবর্ধমান। অভিযোগ, শাসকদলের নেতা, প্রোমোটার এবং পুলিশের একাংশের মদতে পুর অনুমোদন ছাড়াই তৈরি হচ্ছে একের পর এক বহুতল। এ দিকে, বিল্ডিং বিভাগের কোষাগার শূন্যই থাকছে।
পুর চেয়ারপার্সন সুজয় চক্রবর্তী মঙ্গলবার জানান, পুর এলাকায় তেতলা বাড়ির অনুমোদন নিয়ে কেউ কেউ পাঁচ-দশতলা বাড়ি তৈরি করছেন বলে এর আগে ভূরি ভূরি অভিযোগ এসেছে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে এ দিন বিল্ডিং দফতরের ইঞ্জিনিয়ার এবং অফিসারদের সঙ্গে বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, আগামী দিনে পুরসভা অনুমোদিত নকশায় সামান্য বিচ্যুতি হলেই জরিমানা নিয়ে সেই নকশা অনুমোদন করা হবে। কিন্তু যে সব বহুতলের ক্ষেত্রে নকশায় বিচ্যুতি বেশি হবে, সেগুলিকে কোনও ভাবেই আইনি স্বীকৃতি দেওয়া হবে না। যাঁরা ওই বহুতলে ফ্ল্যাট কিনবেন, তাঁরা মিউটেশন করাতে পারবেন না। সারা জীবন বেআইনি বাড়িতে থাকতে হবে।
সুজয়বাবু বলেন, ‘‘এর মাধ্যমে আমরা যে বার্তা দিতে চাইছি তা হল, যিনি ওই বহুতল তৈরি করছেন, তিনি জানেন কতটা অংশ বেআইনি। ভবিষ্যতে ক্রেতারা ফ্ল্যাট কিনতে গিয়ে যাতে সমস্যায় না পড়েন, তা মাথায় রেখেই যেন তিনি কাজ করেন।’’