Recruitment Scam

পরিকল্পনাকারী ষড়যন্ত্রকারী হলে আলাদা আইন আছে? পার্থদের নিয়ে সিবিআইকে প্রশ্ন আদালতের

সিবিআইয়ের দাবি, পার্থ, কল্যাণময় প্রমুখই শেষ নন, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় আরও ‘ষড়যন্ত্রকারী’ রয়েছেন। তাঁদের হাতে পেতে গেলে এঁদের জামিন দেওয়া যাবে না। তদন্তে অসহযোগিতারও দাবি করা হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০২২ ১৭:২৯
Share:

জামিনের মামলায় স্থগিতাদেশ আদালতের। —ফাইল চিত্র।

পার্থ চট্টোপাধ্যায়-সহ নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ৭ জন সোমবার জামিনের আবেদন করলেন আদালতে। এ বারও জামিনের বিরোধিতা করল সিবিআই। নিয়োগ দুর্নীতিতে পার্থদের ‘পরিকল্পনাকারী’ এবং ‘ষড়যন্ত্রী’ বলে দাবি করল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। কিন্তু ষড়যন্ত্রকারী হলে কি আলাদা আইন আছে? তা ছাড়া তদন্তের গতি কেমন? সোমবার কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার কাছে জানতে চাইলেন আলিপুর আদালতের বিচারক রানা দাম।

Advertisement

বার বার রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী এবং নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ধৃতদের ‘ষড়যন্ত্রকারী’ বলে এসেছে সিবিআই। সোমবারও জামিনের বিরোধিতায় এই শব্দই ব্যবহার করল তারা। যার প্রেক্ষিতে আদালতের প্রশ্নে ব্যাখ্যাও দিলেন সিবিআইয়ের আইনজীবী।

পার্থের আইনজীবী সেলিম রহমান সওয়াল করেন, তাঁর মক্কেলের নাম নিয়োগ দুর্নীতি মামলার এফআইআরে নেই। তাই তাঁকে জামিন দেওয়া হোক। অন্য দিকে, সিবিআই প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থকে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলার ‘মাস্টারমাইন্ড’ বলে উল্লেখ করেছে। এই প্রেক্ষিতে পার্থের আইনজীবীর প্রশ্ন, তদন্তের নামে আর কত দিন এ ভাবে বন্দি থাকতে হবে তাঁর মক্কেলকে। তিনি এ-ও দাবি করেন সিবিআইয়ের তদন্তে কোনও অগ্রগতি নেই। আইনজীবীর কথায়, ‘‘কেন্দ্রীয় এজেন্সি সব ঠিক করছে না।’’

Advertisement

অন্য দিকে, এসএসসি-র উপদেষ্টা কমিটির প্রাক্তন প্রধান শান্তিপ্রসাদ সিংহের আইনজীবী সঞ্জয় দাশগুপ্ত আদালতে দাবি করেন, সংশ্লিষ্ট চার্জশিট দেওয়ার পরও তদন্তকারীরা এখনও তদন্তের ‘ক্রুশিয়াল স্টেজ’-এ আছে বলছেন। ‘বৃহৎ ষড়যন্ত্র’-এর কথা বলা হচ্ছে। আরও অনেকে এই মামলায় জড়িত থাকার কথা বলা হচ্ছে। তাঁর প্রশ্ন, ‘‘তা হলে কি প্রত্যেককে যত ক্ষণ না চিহ্নিত করা যাচ্ছে, তত দিন এই অভিযুক্তরা জেলে থাকবেন?’’ এর পর শুরু হয় দু’পক্ষের আইনজীবীর আইনি তর্ক।

সিবিআইয়ের আইনজীবী জানান, চার্জশিট এবং হেফাজত নিয়ে আগেও আলোচনা হয়েছে। যদিও তাঁকে থামান বিচারক। এর পর মধ্যশিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়ের আইনজীবী তাঁর মক্কেলের জামিনের আবেদন করেন। কল্যাণময়ের যুক্তি, তাঁর নাম কেবল এফআইআরের একটি অনুচ্ছেদে রয়েছে। তিনি তাঁর বয়সজনিত অসুস্থতার কথা উল্লেখ করে যে কোনও শর্তে জামিন চান। বলেন, ‘‘এসএসসির সঙ্গে আমি যুক্ত ছিলাম না।’’

আগেও পার্থ এবং কল্যাণময়ের জামিনের বিরোধিতা করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। আদালতের প্রশ্নের মুখে আবারও এই দুর্নীতিকে ‘পরিকল্পনামাফিক ষড়যন্ত্র’ বলে সিবিআই জামিনের আবেদন খারিজের কথা বলে। তাদের দাবি, পার্থ, কল্যাণময় প্রমুখই শেষ নন, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় আরও ‘ষড়যন্ত্রকারী’ রয়েছে। তাঁদের হাতে পেতে গেলে এঁদের জামিন দেওয়া যাবে না। সোমবারও পার্থদের বিরুদ্ধে তদন্তে অসহযোগিতার দাবি করা হয়। বলা হয়, এঁরা জামিন পেলে সাক্ষ্য এবং প্রমাণের লোপাটের আশঙ্কা থাকবে।

সিবিআই দাবি করে, পুরো নিয়োগ দুর্নীতি হয়েছে ‘পরিকল্পনা করে’। তাঁদের কথায়, ‘‘এক জনকে পদ থেকে সরিয়ে অন্য জনকে ওই পদে আনা হয়েছে। কাউকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়েছে।’’ এমনকি, অভিযুক্তরা এই দুর্নীতিকাণ্ডে পরিকল্পনামাফিক নিজ নিজ ভূমিকা পালন করে গিয়েছেন বলে অভিযোগ করে সিবিআই।

দুই পক্ষের সওয়াল-জবাব শোনার পর রায়দান স্থগিত রাখে আদালত। পরে ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত তাঁদের সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দেয় আদালত।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement