Death

প্রোমোটার হত্যায় ভাড়াটে খুনিরাই, ধারণা পুলিশের

চোখের সামনে অমিতকে খুন হতে দেখেও কী ভাবে ওই ব্যক্তি নেশার আসরে ফিরে গেলেন, তা ভাবাচ্ছে পুলিশকেও। তাই তাঁকেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০২০ ০৩:০৬
Share:

—প্রতীকী ছবি।

ভিন্ রাজ্য থেকে আনা ভাড়াটে খুনি দিয়েই পরিকল্পিত ভাবে গুলি করে খুন করা হয়েছে হাওড়ার প্রোমোটারকে। শনিবার রাতে ব্যাঁটরা থানা এলাকার ইস্ট-ওয়েস্ট বাইপাসে প্রকাশ্য রাস্তায় অমিত হাইত নামে ওই প্রোমোটারকে গুলি করে খুনের ঘটনার তদন্তে নেমে এমনটাই মনে করছে পুলিশ। তবে ঠিক কী কারণে এই খুন, তা এখনও পরিষ্কার ভাবে জানা যায়নি। অমিতের মোবাইল ফোনের কললিস্ট ও ওই এলাকার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখে তদন্তের কাজ করছে পুলিশ। এই খুনের পিছনে ব্যক্তিগত বা ব্যবসাগত শত্রুতা— দু’টি দিকই খতিয়ে দেখছে পুলিশ। ইতিমধ্যেই ছ’জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ।

Advertisement

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার রাতে এক ব্যক্তি বারবার ফোন করে টিকিয়াপাড়ার কাছে ইস্ট ওয়েস্ট বাইপাসে অমিতকে ডেকে নিয়ে যায়। সেখানেই তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি করা হয়। অমিতের কপালে গুলি লাগে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তার পরে এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়। পরিস্থিতি সামাল দিতে হাওড়া সিটি পুলিশের পদস্থ কর্তারা রাতেই ঘটনাস্থলে পৌঁছন এবং তদন্ত শুরু করেন। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের ধারণা, কপালের ঠিক মাঝখানে যে ভাবে গুলি করা হয়েছে, তা একমাত্র কোনও ভাড়াটে খুনির দ্বারাই সম্ভব।

এ দিকে অমিতের পরিবারের দাবি, এলাকার একটি সিনেমা হল কিনে সেখানে প্রোমোটারি করা নিয়েই স্থানীয় আর এক প্রভাবশালী প্রোমোটারের সঙ্গে শত্রুতা ছিল অমিতের। তার জেরেই অমিতকে খুন করা হয়েছে। সিনেমা হলটি অমিতের বাড়ির কাছেই। এ দিন অমিতের পরিবারের পক্ষ

Advertisement

থেকে অভিযোগ করা হয়, তাঁর সঙ্গে কাজ করা দুই কর্মী ওই সিনেমা হল ভেঙে প্রোমোটারির জন্য লভ্যাংশের ২০ শতাংশ শেয়ার চেয়েছিল।কিন্তু তা দিতে রাজি ছিলেন না অমিত। এ নিয়ে ভিন্ রাজ্যের বাসিন্দা ওই দু’জনের সঙ্গে গোলমালও হয় অমিতের। তার জেরেই তারা প্রতিদ্বন্দ্বী প্রোমোটারের সঙ্গে হাত মিলিয়ে এই খুন করেছে বলে অভিযোগ করছে অমিতের পরিবার।

এ দিন ব্যাঁটরার মাকড়দা রোডের বাড়িতে বসে অমিতের বাবা রবীন হাইত বলেন, “বকেয়া টাকা দেওয়ার নাম করে বারবার ফোন করে ছেলেকে বেলিলিয়াস রোডে ডেকে নিয়ে গেল। সেখানেই ওকে গুলি করে খুনিরা পালিয়ে যায়। এতে আমার ছেলের ওই দুই কর্মী জড়িত আছে।’’ অমিতের স্ত্রী পাপিয়া বলেন, “পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে আমার স্বামীকে খুন করা হয়েছে। দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি চাই। সিনেমা হল ভেঙে প্রোমোটিং করা হোক এটা যে প্রোমোটার চাননি, তাঁরই মদতে আমার স্বামীকে খুন করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আমি নিশ্চিত।’’

ইতিমধ্যেই পুলিশ ছ’জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে। পুলিশ সূত্রের খবর, আটক করা ব্যক্তিদের প্রত্যেকেই ওই প্রোমোটারের সঙ্গী ও তাঁর ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। খুনের ঘটনার সময়ে তাঁরা প্রত্যেকেই নেশার আসরে বসেছিলেন। এমনকি যে ব্যক্তিকে নিজের স্কুটারের পিছনে বসিয়ে বেলিলিয়াস পার্কের সামনে গিয়েছিলেন অমিত, সেই ব্যক্তিও খুনের পরে ফের নেশার আসরে গিয়ে যোগ দেন। চোখের সামনে অমিতকে খুন হতে দেখেও কী ভাবে ওই ব্যক্তি নেশার আসরে ফিরে গেলেন, তা ভাবাচ্ছে পুলিশকেও। তাই তাঁকেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।

হাওড়া সিটি পুলিশের এক পদস্থ আধিকারিক বলেন, “মনে হচ্ছে ব্যক্তিগত শত্রুতার জেরেই এই খুন। দোষীরা শীঘ্রই ধরা পড়বে। কয়েক জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদও চলছে।’’ এ দিকে এ দিন সকালে দুষ্কৃতীদের অবিলম্বে গ্রেফতারির দাবিতে ব্যাঁটরা থানার সামনে বিক্ষোভ দেখান অমিতের পরিজন ও প্রতিবেশীরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement