পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সূত্রেও জানা গিয়েছে, পুজোটি হিন্দু মহাসভার আয়োজিত। ছবি সংগৃহীত
দক্ষিণ কলকাতার রুবি পার্কের একটি মণ্ডপে অসুরের মূর্তিতে জাতির জনক মোহনদাস কর্মচন্দ গান্ধীর ছবি রাখার অভিযোগ ঘিরে বিতর্ক অব্যাহত রাজ্য-রাজনীতিতে। যদিও গান্ধীকে ‘অসুর’ হিসাবে দেখানো হয়নি, তাঁর সঙ্গে মিলটা নিতান্তই কাকতালীয় বলে দাবি করেছেন দক্ষিণ কলকাতার রুবি পার্কের অখিল ভারতীয় হিন্দু মহাসভার দুর্গাপুজোর উদ্যোক্তা চন্দ্রচূড় গোস্বামী। এই পরিস্থিতিতে বুধবার সাংবাদিক বৈঠক করতে চলেছে হিন্দু মহাসভা।
হিন্দু মহাসভার এই পুজো-বিতর্ক নিয়ে রাজনৈতিক তরজা চলছেই। চন্দ্রচূড়ের সঙ্গে বিজেপির যোগসূত্র তুলে ধরে কটাক্ষ করতে শুরু করেছে তৃণমূল। দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেছেন, ‘‘ওরা তো বিজেপিরই অন্তরাত্মা। বিজেপি তো গডসের পূজারি। ওরাই তো বিজেপিই মুখ! এখন শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করছে বিজেপি।’’ উল্টো দিকে, সমালোচনায় সরব হয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারও। তিনি বলেছেন, “এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করছি। গান্ধীজি আমাদের রাষ্ট্রের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সন্তানদের মধ্যে এক জন। তাঁকে এ ভাবে অসুররূপে দেখানো হয়েছে, এটি অত্যন্ত নিন্দনীয়। এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত পুলিশের।”
চন্দ্রচূড়ও লাগাতার কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে আক্রমণ করে চলেছেন। তিনি বলেন, “আমি তো প্রধানমন্ত্রীকে চ্যালেঞ্জ করেছি। উনি তো বলছেন, গান্ধীর অনুপ্রেরণায় আট বছর সরকার চালিয়েছেন। এটা অবিশ্বাস্য। তার কারণ স্বাধীনতা সংগ্রামীদের নাম পুলিশের কাছে তুলে দেওয়ার জন্য যে মানুষটির নাম জড়িয়েছে, কংগ্রেস থেকে যে ভাবে নেতাজিকে বিতাড়িত করা হয়েছে, ভগৎ সিংহের ফাঁসির ক্ষেত্রে গান্ধীর অত্যন্ত ন্যক্কারজনক ভূমিকা রয়েছে, সেই মানুষটি জাতির জনক কেন হতে যাবে। এটাও আবার অস্বীকার করছি না যে, মোহনদাস কর্মচাঁদ গান্ধীকে যে জাতির জনক বা জাতির পিতা বলা হয় ঠিকই, কিন্তু আমরা তা মানি না। আমরা নেতাজিকে শ্রদ্ধা করি।”
বুধবারের সাংবাদিক সম্মেলনে কী কী বিষয়ে কথা বলতে পারেন চন্দ্রচূড়, তা দেখে নেওয়া যাক...
১। নীরব মোদী এবং বিজয় মাল্যের অর্থ তছরুপের মামলা নিয়ে কথা হতে পারে।
২। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার ‘অপব্যবহার’ নিয়ে সরব বিরোধীরা। তা নিয়েও কথা হতে পারে।
৩। উঠতে পারে দেশের অর্থনীতির প্রসঙ্গ।
৪। হিন্দু ভোট এবং রাম জন্মভূমি আন্দোলনের প্রসঙ্গও উঠতে পারে।
৫। কথা হতে পারে এনআরসি এবং অনুচ্ছেন ৩৭০ নিয়ে।
৬। গোহত্যা রুখতে আইন প্রণয়ন নিয়ে কথা বলতে পারেন চন্দ্রচূড়।
৭। নেতাজি এবং শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের প্রসঙ্গ উঠতে পারে।