Kolkata Municpal Corporation

পুর স্কুলে শৌচাগার দুর্নীতিতে শুনানি শুরু, দ্রুত চার্জ গঠন বর্ষাতি কেলেঙ্কারিতেও

২০১৮ সালে কলকাতা পুরসভা পরিচালিত বিদ্যালয়গুলির পড়ুয়াদের জন্য ৭৩ লক্ষ ৮৩ হাজার টাকায় ২২ হাজার ৪০টি বর্ষাতি কেনা হয়েছিল। অভিযোগ, বর্ষাতি কেনার ক্ষেত্রে নিয়ম মেনে দরপত্র ডাকা হয়নি।

Advertisement

মেহবুব কাদের চৌধুরী

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৯:৩৬
Share:

কলকাতা পুরসভা। —ফাইল চিত্র।

কলকাতা পুরসভা পরিচালিত একাধিক স্কুলে শৌচাগার সংস্কার সংক্রান্ত দুর্নীতির ঘটনায়অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে ইতিমধ্যেই শুনানি শুরু হয়েছে। সূত্রের খবর, প্রায় একই সময়ে ঘটা পুর বিদ্যালয়ে বর্ষাতি কেলেঙ্কারির ঘটনাতেও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দ্রুত চার্জ গঠন করে শুনানি শুরু করতে চায় পুর প্রশাসন। এই প্রসঙ্গে পুরসভার এক আধিকারিক বলেন, ‘‘শৌচাগার সংস্কার ও বর্ষাতি কেনার নামে পুর স্কুলগুলিতে যা হয়েছে, তা প্রায় পুকুর চুরির সমতুল। দু’টি ঘটনাই যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’’

Advertisement

উল্লেখ্য, ২০১৭-’২০ সালের মধ্যে পুরসভা পরিচালিত ৫০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শৌচাগার সংস্কারের নামে প্রায় ৩৭ লক্ষ টাকা গরমিলের প্রমাণ মিলেছে।এই ঘটনায় পুর শিক্ষা বিভাগের চার প্রাক্তন আধিকারিক ও কর্মীর বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে শুনানি শুরু হয়েছে গত অগস্ট মাসে। পুরসভা সূত্রের খবর, শুনানি-প্রক্রিয়ায়অভিযুক্তদের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। শুনানিতে নিযুক্ত তদন্তকারী আধিকারিক চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।

একই ভাবে, ২০১৮ সালে কলকাতা পুরসভা পরিচালিত বিদ্যালয়গুলির পড়ুয়াদের জন্য ৭৩ লক্ষ ৮৩ হাজার টাকায় ২২ হাজার ৪০টি বর্ষাতি কেনা হয়েছিল। অভিযোগ, বর্ষাতি কেনার ক্ষেত্রে নিয়ম মেনে দরপত্র ডাকা হয়নি। যাতে আপত্তি জানিয়েছিল পুর অর্থ বিভাগ। এর পরে দরপত্র প্রক্রিয়ায় ‘ছাড়’ দেওয়ার আবেদন জানিয়ে মেয়র ফিরহাদ হাকিমের কাছে ফাইল পাঠানো হয়। মেয়র ওই ফাইলের উপরে ‘নো’ লিখে স্পষ্ট জানিয়েছিলেন, এ ভাবে দরপত্র প্রক্রিয়া করা যাবে না। কিন্তু মেয়রের সেই নির্দেশকে উপেক্ষা করার গুরুতর অভিযোগ ওঠে। পুরসভার অভ্যন্তরীণ অডিট রিপোর্টেও বর্ষাতি কেনার ক্ষেত্রে অসঙ্গতি ধরা পড়ে। রেসিডেন্সিয়াল অডিটর তাঁর রিপোর্টে জানিয়েছিলেন, একাধিক সংস্থাকে সুবিধা পাইয়ে দিতে বহু টাকা খরচ করে বর্ষাতি কেনা হয়েছিল।

Advertisement

প্রসঙ্গত, শৌচাগার দুর্নীতির বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পরে ‘অভিযুক্ত’ এক মহিলা আধিকারিক নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে খোদ মুখ্যমন্ত্রীকে ইমেল করে অভিযোগ করেছিলেন, মুসলিম হওয়ার কারণে তাঁকে নানা ভাবে হেনস্থা করা হচ্ছে। ওই অভিযোগ প্রসঙ্গে মেয়র বলেছিলেন, ‘‘ধর্মের দোহাই দিয়ে কেউ পার পাবেন না। দুর্নীতি প্রমাণিত হলে শাস্তি পেতেই হবে।’’

পুরসভা সূত্রের খবর, একাধিক পুর বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকেরা শৌচাগার-দুর্নীতির বিষয়টি বিশদে জানিয়েছিলেন পুর শিক্ষা বিভাগের তদানীন্তন আধিকারিকদের। প্রধান শিক্ষকদের অভিযোগ ছিল, শুধু যে ৫০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়েশৌচাগার সংস্কার না করেই খাতায়কলমে কাজ সম্পূর্ণ দেখানো হয়েছে তা-ই নয়, তাঁদের দিয়ে জোর করে বিলে সইও করানো হয়েছিল। তার ভিত্তিতে ঠিকাদারদের টাকা বরাদ্দ করা হয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement