প্রতীকী ছবি।
বিভিন্ন সময়েই দেখা যায়, ডিউটি থাকলেও সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক নেই। অনেক খোঁজখবর করে হয়তো জানা গেল, তিনি বেরিয়ে গিয়েছেন। যদিও সেই সময়ে তাঁর বেরোনোর কথাই নয়। এর পাশাপাশি রয়েছে সাপ্তাহিক ছুটি কিংবা কোনও উৎসব-অনুষ্ঠান উপলক্ষে ছুটি। সেই সময়ে সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসকদের পাওয়া যায় না বলেই সাধারণ মানুষের একাংশের অভিযোগ।
যদিও চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের কাজের সময় সম্পর্কিত নির্দিষ্ট নির্দেশিকা রয়েছে। কিন্তু সকলে যে তা মেনে চলছেন, তেমনটা নয়। তাই বিভিন্ন সময়ে সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসকের অভাবে পরিষেবা বিঘ্নিত হওয়ার বিষয়টি বার বার নজরে আসছে স্বাস্থ্য দফতরেরও। সেই কারণে এ বার থেকে সপ্তাহে কাজের সময় বেঁধে দেওয়ার পাশাপাশি কোন চিকিৎসকের কবে, কোথায় ডিউটি থাকছে— সেই বিষয়েও নজরদারি চালাবে স্বাস্থ্য ভবন। সম্প্রতি এই সংক্রান্ত নির্দেশিকা জারি করেছে স্বাস্থ্য দফতর। সূত্রের খবর, যে হাসপাতালে যত চিকিৎসক বা স্বাস্থ্যকর্মী আছেন, তাঁদের সবাইকে যথাযথ ভাবে ব্যবহার করতে চাইছে দফতর। তবে কারও উপরে যাতে বেশি চাপ না পড়ে, সে দিকটিও লক্ষ রাখা হচ্ছে।
নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, এক জন সরকারি চিকিৎসককে সপ্তাহে ন্যূনতম ৪০ ঘণ্টা কাজ করতেই হবে। তবে সারা দিনে টানা ১২ ঘণ্টা এবং রাতে টানা ৮ ঘণ্টার বেশি ডিউটি কাউকে দেওয়া যাবে না। স্বাস্থ্য আধিকারিকদের পর্যবেক্ষণ, ডিউটি-বণ্টন সংক্রান্ত নির্দেশিকা পুরনো হলেও সেটি ফের মনে করিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তবে এ বার চালু হচ্ছে কড়া নজরদারি। কারণ অতীতে দেখা গিয়েছে, নির্দেশিকা জারির পরে কিছু দিন সব ঠিকঠাক ভাবে চললেও তার পরে ফিরে আসে আগের ছবিটা। এতে লাগাম টানতে প্রত্যেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সাপ্তাহিক ডিউটি রস্টার তৈরি করে স্বাস্থ্য ভবনের নির্দিষ্ট পোর্টালে ইমেল করে আপলোড করতে হবে। পাশাপাশি সেই তালিকা হাসপাতালের সব চিকিৎসক এবং নার্সকে দিতে হবে। রোগী এবং তাঁদের পরিজনেদের জানাতে ডিউটি রস্টার টাঙিয়ে রাখতে হবে জরুরি বিভাগ, বহির্বিভাগ এবং অন্তর্বিভাগের নোটিস বোর্ডেও।
যদিও চিকিৎসক সংগঠনগুলির দাবি, জেলা বা মহকুমা স্তরের হাসপাতালে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা অনেক বেশি সময় কাজ করেন। ‘অ্যাসোসিয়েশন অব হেলথ সার্ভিস ডক্টর্স’-এর সাধারণ সম্পাদক মানস গুমটা বলেন, ‘‘যে রস্টার তৈরি করতে বলা হয়েছে, তাতে জেলা-মহকুমা স্তরের হাসপাতালে কত জন চিকিৎসক লাগবে তার খোঁজ সরকারের নেওয়া উচিত। সব জায়গায় চিকিৎসকের ঘাটতি রয়েছে। তা মেটানোর পদক্ষেপ নেই। সেই কারণে বহু জায়গায় কেউ কেউ ৪০ ঘণ্টারও বেশি সময় কাজ করেন।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘চিকিৎসকদের কাজের কথা বলা হচ্ছে, অথচ তাঁদের প্রাপ্য সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হচ্ছে না। কোভিডে সরকার ঘোষিত আর্থিক সহায়তার দিকটিও কিছু হয়নি।’’