প্রিয়াঙ্কা কয়াল।
দিদিমার সঙ্গে দেখা করতে বাবা-মায়ের কাছে গিয়েছিলেন তেইশ বছরের তরুণী। কিন্তু তাঁর আচরণে অবাকই হয়েছিলেন পরিজনেরা। একরত্তি ভাইপোর সঙ্গে খুনসুটি করে নিজের ঘরের দরজা বন্ধ করে দেন তিনি। কিছু ক্ষণ পরে সেই ঘরের দরজা ভেঙে উদ্ধার হয় তাঁর ঝুলন্ত দেহ!
সোমবার রাতে বাবা-মায়ের বাড়ি এসে তরুণী বধূর অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনাটি ঘটেছে বরাহনগরে। পুলিশ জানায়, মৃতার নাম প্রিয়াঙ্কা কয়াল। পণের জন্য মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগে পুলিশ তাঁর স্বামী অর্পণ কুণ্ডু এবং শ্বশুর তপন কুণ্ডুকে গ্রেফতার করেছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, মাস পাঁচেক আগে প্রাণকৃষ্ণ সাহা লেনের বাসিন্দা পেশায় মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভ অর্পণের সঙ্গে দেখাশোনা করে বিয়ে হয় পাঠবাড়ি লেনের বাসিন্দা তাপস কয়ালের মেয়ে প্রিয়াঙ্কার। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ওই তরুণীর দাদা পঙ্কজ বলেন, “বিয়ের সময়ে ওঁরা বলেছিল ঘর পুরো সাজিয়ে দিতে হবে। দাবি মতো সব দিয়েছিলাম। কিন্তু কিছু দিন পর থেকেই বুঝলাম বোন অশান্তিতে রয়েছে।” অভিযোগ, প্রিয়াঙ্কাকে বাবা-মায়ের বাড়িতে তেমন ভাবে আসতে দেওয়া হত না। এমনকি ফোনেও কথা বলা নিয়ে অশান্তি হত।
তরুণীর পরিজনদের অভিযোগ, বিয়ের মাস দুয়েক পর থেকেই পণের জন্য চাপ দিতে শুরু করেন অর্পণরা। চাপা স্বভাবের মেয়ে প্রিয়াঙ্কা বাড়িতে তেমন কিছু বলতেন না। পরিজনেরা জানাচ্ছেন, তাঁরা কয়েক বার ওই তরুণীর শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে মিটমাট করে নেওয়ার জন্যও অনুরোধ করেন। কিন্তু ফল হয়নি। সোমবার দিদিমার সঙ্গে দেখা করতে বাবা-মায়ের বাড়িতে আসার কথা ছিল প্রিয়াঙ্কার। পঙ্কজ জানাচ্ছেন, রাত ৮টা নাগাদ আসেন প্রিয়াঙ্কা। কিন্তু কারও সঙ্গে কথা না বলে ভাইপোর সঙ্গে সামান্য কিছু সময় কাটিয়ে নিজের ঘরে চলে যান। পঙ্কজ বলেন, “রাত ৯টা নাগাদ অর্পণ ফোন করে উল্টোপাল্টা কথা বলেন। পরে বোনকে ডাকতে গিয়ে দেখি দরজা ভিতর থেকে বন্ধ। দরজা ভেঙে দেখি সব শেষ।”