Health Scheme

হেল‌্থ স্কিমে নেই কেন সব শিক্ষক, ক্ষোভ সরকার পোষিত শিক্ষকদের

একই ভাবে ৫০০ টাকা না নিলে শুধুমাত্র সর্বোচ্চ ৫ লক্ষ টাকার স্বাস্থ্যসাথী পাবেন সরকার পোষিত ও সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলের শিক্ষকেরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০২৪ ০৮:১৭
Share:

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

এক যাত্রায় পৃথক ফল। সরকারি স্কুলের শিক্ষকেরা যেখানে রাজ্যের হেল্থ স্কিমের আওতায় আছেন, সেখানে সরকার পোষিত এবং সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলের শিক্ষকেরা এখনও ওই স্কিমের আওতায় নেই। তাঁরা
স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের সুবিধা পান। সরকার পোষিত বা সরকারের সাহায্যপ্রাপ্ত শিক্ষকেরা কেন সরকারি কর্মী বা সরকারি স্কুলের শিক্ষকদের মতো হেল্থ স্কিমের আওতাভুক্ত হবেন না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। সম্প্রতি এই নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি লিখেছে একটি শিক্ষক সংগঠন।

Advertisement

শিক্ষকেরা জানাচ্ছেন, সরকার পোষিত বা সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলের শিক্ষকেরা মাসে ৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা পান। ওই ৫০০ টাকা কোনও শিক্ষক না নিলে, তিনি স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের আওয়াত যেতে পারবেন। পশ্চিমবঙ্গ প্রধান শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণাংশু মিশ্র বলেন, ‘‘অথচ যাঁরা সরকারি স্কুলের শিক্ষক, ওই ৫০০ টাকার মেডিক্যাল অ্যালাউন্স ছেড়ে দিলে ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত সরকারি হেল্থ স্কিমের সুবিধা পান। অথচ একই ভাবে ৫০০ টাকা না নিলে শুধুমাত্র সর্বোচ্চ ৫ লক্ষ টাকার স্বাস্থ্যসাথী পাবেন সরকার পোষিত ও সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলের শিক্ষকেরা। কেন এই বৈষম্য? এই বৈষম্য দূর করে সরকার পোষিত ও সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত শিক্ষকদেরও হেল্থ স্কিমের আওতাভুক্ত করতে আমরা অর্থ দফতরকে এবং শিক্ষা দফতরকে অনেক বার চিঠি দিয়েছি। কোনও সুরাহা হয়নি।’’

অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তথা শিক্ষক সংগঠন এআইএফই-এর সাধারণ সম্পাদক নবকুমার কর্মকার বলেন, ‘‘স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প মূলত রাজ্যের অসংগঠিত ক্ষেত্রে নিযুক্ত যে সব কর্মচারী আছেন, যেমন আইসিডিএস কর্মী, আশা কর্মী, প্যারাটিচার, এমএসকে, এসএসকে, রাজ্যের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী, সাধারণ মানুষের জন্য চালু করা হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে রাজ্যের সরকার পোষিত (প্রাথমিক ও মাধ্যমিক) শিক্ষকদের এই সুযোগ সম্প্রসারিত করা হয়। অথচ সরকারি স্কুলের শিক্ষক, সরকারি কর্মচারী, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের জন্য হেল‌্থ স্কিম ২০০৮ সালে চালু করা হয়। রাজ্যের প্রায় সব শিক্ষক সংগঠন তখন স্কুল শিক্ষকদের জন্য স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প নয়, হেল‌্থ স্কিম ২০০৮ চালু করা হোক এই আবেদন জানায়। আমরা সরকারি হেল্থ স্কিমের আওতায় সরকার পোষিত স্কুলের শিক্ষকদের আনার আর্জি জানিয়ে ফের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিয়েছি।’’ নবকুমারের মতে, রাজ্যে এখন বেশির ভাগই সরকার পোষিত স্কুল। ফলে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের বিপুল পরিমাণ শিক্ষক সরকারি হেলথ স্কিম থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

Advertisement

মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক নীলকান্ত ঘোষের মতে, এখন চিকিৎসার জন্য বহু শিক্ষক ভিন্‌ রাজ্যে গিয়ে চিকিৎসা করাতে চান। কিন্তু স্বাস্থ্যসাথীর অধীনে রাজ্যের বাইরে গিয়ে চিকিৎসার সুযোগ নেই। অনেক হাসপাতাল স্বাস্থ্যসাথী সুযোগ দিতেও চায় না। আমাদের অবিলম্বে সরকারি হেল্থ স্কিমের আওতাভুক্ত করা হোক।’’

যদিও শিক্ষা দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘তাঁরা শিক্ষক সংগঠনগুলির চিঠি পেয়েছেন। তবে প্রাথমিক বা মাধ্যমিক স্তরের সরকার পোষিত বা সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত শিক্ষকেরা কিন্তু সরকারি স্কুলের শিক্ষকদের মতো পুরো সরকারি কর্মী নন। তাঁদের নিয়োগ পদ্ধতি আলাদা। তাঁরা সরকারি কর্মীদের মতো পেনশন-সহ কিছু সুবিধা অবশ্য পেয়ে থাকেন। তবে তাঁদের সরকারি হেল‌্থ স্কিমের আওতাভুক্ত করার কথা ভাবা হয়নি।’’

যদিও শিক্ষকেরা প্রশ্ন তুলেছেন, সাধারণ মানুষের যাঁরা স্বাস্থ্যসাথী পাচ্ছেন, তাঁদের তো মাসে ৫০০ টাকা করে দিতে হচ্ছে না। অথচ সরকার পোষিত শিক্ষকদের স্বাস্থ্যসাথী পেতে হলে চিকিৎসা ভাতা বাবদ মাসিক ৫০০ টাকা ছাড়তে হচ্ছে। সেটাই বা কেন হবে?

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement