কলকাতা বিমানবন্দরের ৩-এ গেটের কাছে আগুন। ছবি: পিটিআই।
আগুন লাগল কলকাতা বিমানবন্দরে। শর্ট-সার্কিট থেকেই আগুন লেগেছে বলে প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে। তবে বুধবার রাতের এই ঘটনায় ক্ষয়ক্ষতির কোনও খবর পাওয়া যায়নি। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, রাত সওয়া ৯টা নাগাদ ওই আগুন লাগে। বিমানবন্দরের নিজস্ব অগ্নি নির্বাপক কর্মী এবং দমকলের প্রায় আধ ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। তবে আগুন নিভে যাওয়ার অনেক ক্ষণ পর পর্যন্ত গোটা চত্বর ধোঁয়ায় ঢাকা ছিল। আগুনের কারণে, সাময়িক ভাবে ব্যাহত হয় বিমানবন্দরের পরিষেবা। বন্ধ রাখা হয় চেক-ইন প্রক্রিয়াও। ঘটনার কথা টুইট করেন বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। রাতে টুইট করেন অসামরিক বিমান পরিবহণমন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া।
দমকল সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রাত ৯টা ১২ মিনিট নাগাদ বিমানবন্দরের ‘চেক-ইন’ এলাকার ‘ডি-পোর্টালে’ আগুন লেগে যায়। ধোঁয়ায় ভরে যায় গোটা চত্বর। উপস্থিত যাত্রী এবং কর্মীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। প্রাথমিক ভাবে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করেন বিমানবন্দরের অগ্নি নির্বাপক কর্মীরা। পরে খবর পেয়ে প্রথমে দমকলের দু’টি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। পরে আসে আরও দু’টি ইঞ্জিন। সব মিলিয়ে আগুন নেভানোর কাজ করে মোট ৯টি ইঞ্জিন। ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বিপর্যয় মোকাবিলা দলও। ঘটনাস্থলে পৌঁছন বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের কমিশনার গৌরব শর্মা।
আগুনে আতঙ্কিত যাত্রীরা
বিমানবন্দরের ভিতরে আগুন লাগার ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েন যাত্রীরা। বিমানবন্দর কর্মীদের একাংশ উদ্বীগ্ন হয়ে পড়েন এই পরিস্থিতিতে। গোটা চত্বর ধোঁয়ায় ভরে যায়। সকলকে সঙ্গে সঙ্গে নিরাপদে বাইরে নিয়ে আসা হয়। বিমানবন্দরের এক কর্মী বলেন, ‘‘আগুন লাগার পর যাত্রীদের এক দিকে নিয়ে যাওয়া হয়। ন’বছর ধরে কাজ করছি। এই প্রথম এ রকম আগুন দেখলাম।’’ আতঙ্কিত যাত্রীদের এক জন বলেন, “আগুন লাগার পরেই ধোঁয়ায় ভরে যায় বিমানবন্দর চত্বর। দম বন্ধ হয়ে আসতে থাকে। সঙ্গে সঙ্গে সকলকে বাইরে নিয়ে আসা হয়।’’ বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের দাবি, সকলেই সুস্থ ছিলেন।
ব্যাহত বিমান পরিষেবা
বিমানবন্দরের ‘চেক-ইন’ এলাকার ‘ডি-পোর্টালে’ আগুন লাগার ফলে সাময়িক ভাবে ব্যাহত হয় বিমান পরিষেবা। আগুন লাগার ফলে ‘চেক-ইন’ প্রক্রিয়াও বন্ধ করে দেওয়া হয়। বিমান পরিষেবা সাময়িক ভাবে বন্ধ ছিল। রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ ‘চেক-ইন’ প্রক্রিয়া ফের শুরু হলে স্বাভাবিক হয় পরিষেবা।
বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের টুইট
রাত সওয়া ১০টা নাগাদ বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের তরফে টুইট করে জানানো হয়, ‘‘বুধবার রাত ৯টা ১২ মিনিট নাগাদ বিমনবন্দরের ‘চেক-ইন’ এলাকার ‘ডি-পোর্টালে’ সামান্য আগুন ও ধোঁয়া দেখা যায়। সমস্ত যাত্রীদের নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। আগুন লাগার ফলে বিমানবন্দরে ভিতরে ধোঁয়ায় ভরে গিয়েছে। ফলে, ‘চেক-ইন’ প্রক্রিয়া আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে।’’ পরে জানানো হয়, ‘‘রাত ৯টা ৪০ মিনিট নাগাদ আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা গিয়েছে।’’ রাত সওয়া ১০টা থেকে ‘চেক-ইন’ প্রক্রিয়া ফের শুরু করা হবে বলেও ওই সময় জানান বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।
অসামরিক বিমান পরিবহণমন্ত্রীর টুইট
কলকাতা বিমানবন্দরে আগুন লাগার ঘটনায় রাত পৌনে ১১টা নাগাদ টুইট করেন অসামরিক বিমান পরিবহণমন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া। টুইটে তিনি লিখেছেন, “কলকাতা বিমানবন্দরে ছোটখাটো একটি আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক। সমস্ত যাত্রী এবং কর্মীদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। হতাহতের কোনও ঘটনা ঘটেনি। রাত ১০টা ২৫ মিনিট থেকে ‘চেক ইন’ প্রক্রিয়া ফের স্বাভাবিক হয়েছে। আগুন লাগার কারণ জানা যাবে শীঘ্রই।’’