ফাইল চিত্র।
আদিগঙ্গার দূষণ কমানোর জন্য ইতিমধ্যে কী কী পদক্ষেপ করা হয়েছে ও ভবিষ্যতে কী করা হবে, সে সংক্রান্ত ‘প্রোগ্রেস রিপোর্ট’ জাতীয় পরিবেশ আদালতে জমা দেওয়ার কথা ছিল কলকাতা পুরসভার। কিন্তু সেই রিপোর্ট জমা পড়েনি। তাই আগামী ২৮ অগস্টের মধ্যে কোর্টে ওই রিপোর্ট জমা না পড়লে আর্থিক জরিমানা করা হবে বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিল পরিবেশ আদালত। শুধু জরিমানাই নয়, প্রয়োজনে পুরসভার বিরুদ্ধে অন্য কড়া পদক্ষেপও গ্রহণ করা হতে পারে বলে সতর্ক করেছে আদালত।
গত সপ্তাহে আদিগঙ্গা নিয়ে পরিবেশ আদালতের শুনানির দিনই এই কথা জানিয়েছেন বিচারক। অবশ্য শুধু কলকাতা পুরসভাই নয়, সংশ্লিষ্ট মামলার সঙ্গে যুক্ত কলকাতা মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষ ও ‘ন্যাশনাল মিশন ফর ক্লিন গঙ্গা’ কর্তৃপক্ষকেও ওই সময়ের মধ্যে আদিগঙ্গা নিয়ে তাঁদের পরিকল্পনা জানানোর নির্দেশ দিয়েছে পরিবেশ আদালত। রিপোর্ট জমা না পড়লে তাঁদের ক্ষেত্রেও জরিমানা ধার্য করা হবে বলে আদালত স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে।
পুর আধিকারিকদের একাংশ জানাচ্ছেন, আদিগঙ্গার দূষণ কমাতে বর্জ্য পরিশোধন প্লান্ট তৈরি করা প্রয়োজন। তার জন্য পাইপ বসাতে হবে। কিন্তু আদিগঙ্গার পাশে যেখান দিয়ে পাইপ বসানোর পরিকল্পনা করা হয়েছিল, সেই জায়গা জবরদখল হয়ে গিয়েছে। ওই জবরদখলকারীদের পুনর্বাসন দেওয়ার জন্য যে জমি চিহ্নিত করেছিলেন পুর কর্তৃপক্ষ, পরে জানা যায় সেটি বন্দরের জমি। জমিটি তাদের দিয়ে দেওয়ার জন্য তখন বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানায় পুরসভা। কিন্তু আদালতে হলফনামা জমা দিয়ে বন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেন, সংশ্লিষ্ট জমি পুরসভাকে দেওয়া সম্ভব নয়। কারণ সেটি নিয়ে তাঁদের আলাদা পরিকল্পনা রয়েছে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে গত সপ্তাহের শুনানিতে পরিবেশ আদালত পুরসভাকে বিকল্প উপায় ভাবার নির্দেশ দিয়েছে। সংশ্লিষ্ট মামলায় আদালতবান্ধব, পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত বলেন, ‘‘৭৬টি নালা দিয়ে তরল বর্জ্য আদিগঙ্গায় মিশছে। এত বছর ধরে আদিগঙ্গার দূষণ নিয়ে মামলা চলছে, অথচ তার এখনও সুরাহা হল না। জবরদখলকারীদের সমস্যা না মেটাতে পারলে আদিগঙ্গার দূষণও কমবে না।’’